ঢাকা: বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে কোনো কূটনীতিকের হস্তক্ষেপ করার সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম।
বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে শেখ ফজলুল করিম সেলিম এ মন্তব্য করেন।
এ সময় ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।
শেখ সেলিম বলেন, আমাদের রাজনীতি, অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কিছু কিছু কূটনীতিক কারো কারো বাড়ি বাড়ি গিয়ে হাজির হচ্ছে, এ কী আশ্চর্য! আমাদের রাজনীতি নিয়ে কোনো কূটনীতিকের হস্তক্ষেপ করার সুযোগ নেই। এটা নির্ধারণ করবে আমাদের জনগণ। আমাদের কোনো প্রভু নেই, আমাদের প্রভু হলো জনগণ। আমাদের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি নিয়ে হস্তক্ষেপ করা এক ধরনের দায়িত্বহীন কাজ। আমরা কি তাদের রাজনীতি নিয়ে কথা বলি? আমরা শুনেছি আমেরিকার নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ, কিন্তু আমেরিকার ইলেকশন নিয়ে কি আমরা কথা বলেছি? মালয়েশিয়ার ভোট নিয়ে আমরা কি কোনো কথা বলেছি? যদিও এসব দেশে ভোট কারচুপি হয়েছে বলে খবর প্রকাশ হয়।
তিনি আরও বলেন, তাদের প্রেসক্রিপশন কেয়ারটেকার গর্ভনমেন্ট, সর্বদলীয় সরকার ও অন্তবর্তীকালীন সরকার করতে হবে, এসব সরকারের মাধ্যমে নির্বাচন করতে হবে। এসবের কোনো বিধান আমাদের সংবিধানে নেই। আদালত স্পষ্ট করে বলে দিয়েছে, কোনো অসাংবিধানিক সরকার রাষ্ট্র পরিচালনা করতে পারবে না। আমাদের দেশের ৩০ লাখ শহীদ যদি রক্ত দিয়ে দেশ স্বাধীন করতে পারে, সেখানে তারা অন্য দেশের মাতব্বরি কখনো মেনে নেবে না। নির্বাচনে কোনো অনিয়ম হলে জনগণই দেখবে, অন্য কারো দেখার দরকার নেই।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এই সদস্য বলেন, ১৯৭১ সালে তো অনেকে আমাদের স্বাধীনতার বিপক্ষে অন্য পক্ষে গিয়েছিলেন। অস্ত্র ও টাকা দিয়েছিলেন, স্বাধীনতাকে চাপিয়ে দেবার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু স্বাধীনতা রুখতে পারেন নি। এবারেও পারবেন না। আমাদের নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ী হবে, কে আসলো, কে আসলো না, তা আমাদের দেখার বিষয় নয়। ’৭০ সালে ন্যাপ, ভাসানী সাহেব নির্বাচনে অসেননি। আজকে তার পার্টি কোথায়? বিএনপি এবারে যদি তোমরা নির্বাচনে না আসো তাহলে তোমাদের অস্তিত্ব থাকবে না। ভাসানীর ন্যাপ আর মুসলিম লীগের মতো হবে। স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তির সাথে স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি কখনো টিকে থাকেনি, তোমরাও টিকতে পারবা না। বিএনপি এখন আমাদের সাথে পাকিস্তানের তুলনা করে। বাংলাদেশের ১ টাকা সমান পাকিস্তানের দুই টাকা। তাদের অর্থনীতি, রাজনৈতিক অবস্থা এতটা ভঙ্গুর, যেকোন দিন দেশটি ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যাবে। বিএনপি যদি পাকিস্তানকে এতটা ভালবাসে, এতটা প্রেম! তাহলে তারা এ দেশে আছে কেন, এদের পাকিস্তানে পাঠিয়ে দেওয়া উচিৎ। তারা পাকিস্তানে চলে যাক।
শেখ সেলিম আরও বলেন, এই বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়া ছিল খুনি। ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যার পিছনে ছিল মোস্তাক-জিয়ার হাত। চার নেতাকেও জেল হত্যার পিছনে জিয়ার হাত ছিল। সে ক্ষমতা গ্রহণ করে নির্বিচারে মানুষ হত্যা করেছিল। এই জিয়া বঙ্গবন্ধু হত্যাকারীদের জেল থেকে মুক্ত করে, নিজেকে রক্ষার জন্য ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করে। খুনিদের বিচার বন্ধ করে দেয়, পুরষ্কৃত করে। কোন দেশে আছে যে খুনিদের বিচার হবে না? সংবিধান স্থগিত করে জিয়া সামরিক আইন, অধ্যাদেশ দিয়ে দেশ চালায়। বিএনপির মুখে গণতন্ত্র বা মানাবাধিকারের কথা মানায় না। ওরা বাংলাদেশকে মেরামত করতে চায়, পলাতক আসামি তারেক লন্ডনে বসে বাংলাদেশ মেরামত করবে। ওদের আগে মেরামত করা দরকার।
বাংলাদেশ সময়: ২০৩৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৬, ২০২৩
এসকে/এমজেএফ