নীলফামারী: অগ্নিকাণ্ডে সব পুড়ে গেছে রংপুর মডেল কলেজে স্নাতকপড়ুয়া ছাত্রী নওশীন আকতারের। ঘরের আসবাবপত্র, পরনের পোশাক ও বইপত্র পুড়ে যাওয়ায় নির্বাক হয়ে পড়েছেন তিনি।
বাবা বৃদ্ধ কায়সার আলী সেভাবে উপার্জনক্ষম নন। তাই পরিবারের পাঁচ সদস্যের ভরণপোষণ নওশীনের কাঁধে। সব হারিয়ে সেই মেয়েটির চোখেমুখে এখন হতাশার ছাপ। কী করবেন ভেবে উঠতে পারছেন না।
একই অবস্থা রবিউল ইসলামের মেয়ে তিশার। এ অগ্নিকাণ্ডে ঘরের আসবাবপত্র, বইখাতাসহ তিশার সব সার্টিফিকেটও পুড়ে গেছে।
নীলফামারীর সৈয়দপুর শহরের রেলওয়ে কোয়ার্টারে গত শুক্রবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে এক অগ্নিকাণ্ডে নওশীন ও তিশাসহ আরও তিন পরিবারের বসতঘর পুড়ে যায়।
স্থানীয় দমকল বাহিনীসহ নীলফামারী, উত্তরা ইপিজেড, তারাগঞ্জ উপজেলার ৬টি ইউনিট দীর্ঘ চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
তবে তার আগেই নওশীনের বাড়িঘর পুড়ে যায়। খণ্ডকালীন চাকরি করে পরিবারের খরচ বহন করেন নওশীন। তিনি সৈয়দপুরে ও শহরের একটি চাইনিজ রেস্তোরাঁয় ম্যানেজার পদে চাকরি করেন। আসন্ন রমজানে তার বড় বোন চাঁদনী আকতারের বিয়ে
হওয়ার কথা রয়েছে। টাকা-পয়সাও জোগার করছিলেন। এমন সময়ে তার স্বপ্ন পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
নওশীন বলেন, সামনে আমার ফাইনাল পরীক্ষা। পুড়ে যাওয়া বাসা মেরামত করার মতো টাকা নেই হাতে। নতুন করে বই কেনা ও বাসে করে সৈয়দপুর থেকে রংপুর যাওয়া বোধহয় আর সম্ভব হবে না। তাই পড়াশোনার ইতি টানা ছাড়া কোনো উপায় নেই।
সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফয়সাল রায়হানবলেন, অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে যাওয়া পরিবারের সঙ্গে নওশীনকে সহায়তার কথা চিন্তা করা হচ্ছে। সেই সাথে তার বোনের বিয়ের বিষয়টি উপজেলা প্রশাসন দেখবে।
সৈয়দপুর পৌরসভার মেয়র রাফিকা আকতার জাহান ও পৌরসভার কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম রয়েল অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পৌর মেয়র প্রতিটি পরিবারকে ১০ হাজার টাকা করে প্রদান করেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নওশীনের মতো ওই অগ্নিকাণ্ডে তিশারও সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। মা ও দুই ভাই-বোনসহ কোয়ার্টারে থাকতেন তিশা। ব্যাংকার হয়ে পরিবারের হাল ধরার স্বপ্ন দেখেছিলেন তিশা। টাকার অভাব থাকলেও এইচএসসি শেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্ততি নিচ্ছিলেন। কিন্তু এ অগ্নিকাণ্ডে তাদের ঘরের আসবাবপত্র, বইখাতাসহ তিশার সব সার্টিফিকেটও পুড়ে গেছে।
বাংলাদেশ সময়: ১০৪০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২৩
পিএম/এসএএইচ