ইবি: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে এক নবীন ছাত্রীকে নির্যাতনের ঘটনা তদন্তের জন্য ছাত্রলীগ নেত্রী ও তার সহযোগীদের ডেকেছে তদন্ত কমিটি।
আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেত্রী সানজিদা চৌধুরী অন্তরা, তাবাসসুমসহ অন্যদের ডাকা হয়েছে।
শনিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) ভুক্তভোগী ফুলপরী খাতুন ও গণরুমে থাকা শিক্ষার্থীদের বক্তব্য শোনে তদন্ত কমিটি। পাশাপাশি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন তদন্ত কমিটির সদস্যরা।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের করা তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. রেবা মণ্ডল বলেন, তদন্ত অনেক দূর এগিয়েছে। তদন্তের স্বার্থে বিভিন্ন জায়গায় চিঠি ও প্রশাসন থেকে উন্মুক্ত বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। ঘটনাস্থলসহ চার জায়গায় সরেজমিন পরিদর্শন করেছি। ভুক্তভোগী ও গণরুমের মেয়েদের বক্তব্য শুনেছি। আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০টায় তদন্তের স্বার্থে অভিযুক্তদের ডাকা হয়েছে।
এদিকে এ ঘটনার তদন্তের সহায়ক হিসেবে থাকা ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ গায়েব হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। সেদিন রাতে কি ঘটেছিল, সেটার তথ্য সিসিটিভি ফুটেজে পাওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও সে ফুটেজ মিলছে না।
হল সূত্রে জানা যায়, গণরুমের ভেতরের দিকে কোনো সিসিটিভি ফুটেজ নেই। নিরাপত্তার খাতিরে ছাত্রীদের রুমগুলোর বাইরে এবং অফিসের আশেপাশে সিসিটিভি ফুটেজ দেওয়া হয়েছে।
তবে ডাইনিংয়ের পাশে একটি সিসিটিভি স্থাপন করা হয়েছে। ভুক্তভোগীর ভাষ্যনুযায়ী, সেদিন তাকে ডাইনিংয়ে এনেও নির্যাতন করা হয়। সে ক্ষেত্রে ডাইনিংয়ের পাশের সিসিটিভি ফুটেজ চেক করলে হয়তো কোনো তথ্য পাওয়া যেত। তবে এ সিসিটিভিতে সেদিনকার ফুটেজ পাওয়া যায়নি৷ হল প্রশাসন বলছে, টেকনিক্যাল কারণে নাকি ফুটেজ হাতে পায়নি।
ঘটনা তদন্তে হল কমিটির আহ্বায়ক ও হলের হাউজ টিউটর আহসানুল হক বলেন, ঘটনাস্থলের সামনে সিসিটিভি ক্যামেরা নেই। হলের রুমগুলোর বাইরে এবং অফিসের দিকে নিরাপত্তার খাতিরে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো আছে। তবে ডাইনিংয়ের পাশে একটি সিসিটিভি আছে। টেকনিক্যাল সমস্যার কারণে তা এখনও হাতে পাইনি। বিষয়টি আইসিটি সেলকে জানিয়েছি।
গত ১১ ফেব্রুয়ারি দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে রাত সাড়ে ১১টা থেকে রাত প্রায় ৩টা পর্যন্ত শারীরিক নির্যাতন করা হয় নবীন ওই ছাত্রীকে। ভুক্তভোগী ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রী।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরা ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে, তারা ওই ছাত্রীকে মারধর করে তার বিবস্ত্র ভিডিও ধারণ করে রাখেন।
১৩ ফেব্রুয়ারি সকালে ভয় পেয়ে হল ছেড়ে বাসায় চলে যান ভুক্তভোগী ছাত্রী। র্যাগিংয়ের নামে শারীরিক ও মানসিকভাবে হেনস্তার বিচার ও নিরাপত্তা চেয়ে মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) হল প্রভোস্ট, প্রক্টর ও ছাত্র-উপদেষ্টা দপ্তর বরাবর লিখিত দেন তিনি।
বিষয়টি নিয়ে হল প্রশাসন ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং শাখা ছাত্রলীগ পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করে। বিষয়টি হাইকোর্ট পর্যন্ত গড়ায়। হাইকোর্টের নির্দেশে ক্যাম্পাস ছাড়েন অভিযুক্তরা।
বাংলাদেশ সময়: ১০৪৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২৩
এসআই