ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

ভাষাসৈনিক সামসুজ্জোহার ৩৬তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৩৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২৩
ভাষাসৈনিক সামসুজ্জোহার ৩৬তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর, ভাষাসৈনিক, মহান স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম সংগঠক ও স্বাধীনতা পদকে (মরণোত্তর) ভূষিত জননেতা একেএম শামসুজ্জোহার ৩৬তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ (২০ ফেব্রুয়ারি)।  

একেএম শামসুজ্জোহা ছিলেন একাধারে আওয়ামী লীগের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, গণপরিষদের সদস্য ও স্বাধীনতা পরবর্তী জাতীয় সংসদ সদস্য।

তিনি দেশের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী ওসমান পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মরহুম জননেতা খান সাহেব ওসমান আলীও ছিলেন একজন ভাষাসৈনিক, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও সাবেক এমএনএ।  

ঐতিহ্যবাহী এই পরিবারের আদি নিবাস নারায়ণগঞ্জের ‘বায়তুল আমান ভবন’ আজও কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে যেখানে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠার বীজবপন করা হয়েছিল। মহান ভাষা আন্দোলনের সময় এই বায়তুল আমান ভবনে পুলিশ প্রবেশ করে ওসমান পরিবারের সদস্যদের ওপর অকথ্য নির্যাতন চালিয়েছিল।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অসমাপ্ত আত্মজীবনীতেও উঠে এসেছে ভাষা আন্দোলনে এই বায়তুল আমান ভবন ও ওসমান পরিবারের ত্যাগের কথা। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতের শরণার্থী শিবিরে সামসুজ্জোহা ‘ত্রাণবন্ধু’ নামে পরিচিত ছিলেন।  

প্রয়াত এই জননেতা সর্বপ্রথম ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর হাইকোর্টে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন এবং বাংলাদেশ বেতারের মাধ্যমে বিজয়ের বার্তা প্রচার করে দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে শান্ত থাকার আহ্বান জানান। সেদিন অপরাহ্নে পাক সেনাদের হাতে আটক বঙ্গবন্ধু পরিবারকে মুক্ত করতে গিয়ে পাক সেনার হাতে গুলিবিদ্ধ হন।  

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নারায়ণগঞ্জের একটি সুধী সমাবেশে ঘটনাটি নিজে বর্ণনা করেছিলেন এবং মহান জাতীয় সংসদেও তিনি এই ঐতিহ্যবাহী ওসমান পরিবারের ত্যাগ-তিতিক্ষার কথা স্মরণ করে বক্তব্য দিয়ে নারায়ণগঞ্জবাসীকে গর্বিত করেছিলেন।

সামসুজ্জোহার বড় ছেলে সাবেক এমপি প্রয়াত নাসিম ওসমান বঙ্গবন্ধুর হত্যার প্রতিশোধ নিতে ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্ট নবপরিণীতা বধূকে রেখেই প্রতিরোধ যুদ্ধে যোগ দিয়েছিলেন। এরপর সামসুজ্জোহাকে গ্রেফতার করা হয় এবং ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর জাতীয় ৪ নেতার হত্যাযজ্ঞের সময় তিনি ও শহীদ ক্যাপ্টেন মনসুর আলী একই সেলে বন্দি ছিলেন।  

সামসুজ্জোহা ছিলেন ওই কলঙ্কিত ইতিহাসের অন্যতম সাক্ষী। প্রয়াত সামসুজ্জোহার মেঝ ছেলে বিএমইএর সভাপতি একেএম সেলিম ওসমান ও ছোট ছেলে একেএম শামীম ওসমান একাধিকবার জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় প্রয়াত সামসুজ্জোহাকে ২০১২ সালে স্বাধীনতা পদক (মরণোত্তর) এ ভূষিত করা হয়। প্রয়াত শামসুজ্জোহার সহধর্মিণী ও রত্নগর্ভা প্রয়াত নাগিনা জোহাও ছিলেন ভাষাসৈনিক। তিনি ২০১৬ সালের ৭ মার্চ মৃত্যুবরণ করেন।  

একেএম সামসুজ্জোহার ৩৬তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে মরহুমের পরিবার ও নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠন দিনভর কর্মসূচি পালন করছে। ১৯ ফেব্রুয়ারি বেলা ১১টায় বন্দরের মুছাপুর ইউনিয়নে সামসুজ্জোহা এম.বি ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।  

আজ ২০ ফেব্রুয়ারি  দিনব্যাপী পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত, শোক র‌্যালি, কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও জিয়ারতের পাশাপাশি মরহুমের পরিবারের পক্ষ থেকে চাষাড়ার হীরা মহলে বাদ আছর প্রয়াত একেএম সামসুজ্জোহা ও প্রয়াত বেগম নাগিনা জোহার রুহের মাগফেরাত কামনায় মিলাদ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে।  

মরহুমের মেঝ ছেলে সেলিম ওসমান ও ছোট ছেলে একেএম শামীম ওসমান সবাইকে রুহের মাগফেরাত কামনায় চাষাড়ার পৈত্রিক বাড়ি হীরা মহল ও পার্শ্ববর্তী মসজিদে বাদ আছর আয়োজিত মিলাদ ও দোয়ায় অংশ নেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১০২৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২৩
আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।