ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

নড়াইলে চেম্বার অব কমার্স সভাপতির বাসায় ডাকাতি, কোটি টাকার সম্পদ লুট

  ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪০০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২৩
নড়াইলে চেম্বার অব কমার্স সভাপতির বাসায় ডাকাতি, কোটি টাকার সম্পদ লুট

নড়াইল: নড়াইল চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. হাসানুজ্জামানের বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে।  

সশস্ত্র ডাকাত দল হাসানুজ্জামান ও তার স্ত্রীকে হাত-পা বেঁধে আগ্নেয়াস্ত্র, গুলি, নগদ টাকা, স্বর্ণালংকারসহ কোটি টাকার মালামাল লুঠে নিয়ে গেছে বলে জানা গেছে।

 

সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) ভোর রাতে নড়াইল সদরের মাছিমদিয়ার নিজ বাড়ি 'ঠিকনা'য়' এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও ভুক্তভোগীর পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, দোতলা বাড়িতে উচ্চ বাউন্ডারি ওয়ালের পাশাপাশি পর্যাপ্ত ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা ছিল। তা সত্বেও রাতের কোনো এক সময় ওয়াল টপকে বাড়ির চত্বরে প্রবেশ করে ডাকাতদল। পরে দোতলা ভবনের নিচতলার পেছন পাশের জানালার গ্রিল কেটে ঘরের ভেতরে প্রবেশ করে তারা। এসময় সাত থেকে আটজনের সশস্ত্র ডাকাত দল হাসানুজ্জামানের দোতলার শোবার ঘরে ঢুকে তাকে ও তার স্ত্রীকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে হাত-পা বেঁধে ফেলে। এসময় ঘরে থাকা আলমারি থেকে নগদ অর্থ ও স্বর্ণালংকারসহ একটি বন্দুক, একটি রিভলবার ও ২৯ রাউন্ড গুলি লুট করে নিয়ে যায়।  

চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. হাসানুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, রাত ২টায় ফুটবল খেলা দেখে আনুমানিক রাত সাড়ে ৩টার দিকে শুয়ে পড়ি। হঠাৎ শব্দে ঘুম ভেঙে দেখি বেডরুমে আমার গলায় রামদা ধরে ও অস্ত্র দেখিয়ে বলে, আমরা ডাকাত শব্দ করলে জানে মেরে ফেলবো। পরে আমার স্ত্রী ও আমাকে মুখ, হাত-পা বেঁধে ফেলে। এসময় তারা আলমারির চাবি চাইলে বলি জানি না কোথায়? 

তিনি আরও বলেন, তারা নিজেরা সব ওলোট পালোট করে চাবি খুঁজে আলমারিতে থাকা (সার বিক্রি ও তেল পাম্পের ক্যাশ) নগদ আনুমানিক ত্রিশ থেকে বত্রিশ লাখ টাকা, ছেলে মেয়ের বিয়ের জন্য বানানো পয়ত্রিশ ভরি স্বর্ণালংকার, লাইসেন্স করা দুইটি আগ্নেয়াস্ত্রসহ গুলি নিয়ে যায়। তারা যাওয়ার সময় সিসি ক্যামেরার ডিভিআর ডিভাইসটি খুলে নিয়ে বাড়ির প্রধান ফটকের তালা খুলে বের হয়ে যায়।  

তিনি আরও বলেন, আনুমানিক ত্রিশ মিনিটের মধ্যে তারা কাজ সেরে বের হয়ে যায়। ভাষাগত কারণে আমি বুঝেছি তারা নড়াইলের আশপাশের এবং লোকাল।

হাসানুজ্জামানের ভাই ও জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক ও ব্যবসায়ী মো. ওয়াহিদুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, আমার ভাইয়ের বাড়ি থেকে ৫০ গজ দূরে আমার বাড়ি। বাড়িতে আগ্নেয়াস্ত্র ও এত নিরাপত্তা থাকার পরেও এ ধরনের ডাকাতির ঘটনা ঘটাতে পারলে সাধারণ ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তা কোথায়? জেলার আইন শৃঙ্খলার চরম অবনতি হয়েছে। দুই তিন আগে ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর কবিরের বাড়িতে ডাকাত দল এসেছিল, টের পেয়ে তিনি ফাঁকা গুলি করায় ডাকাত দল পালিয়ে যায়।  

তিনি আরও বলেন, ভাইয়ের চিৎকার শুনে ফজরের আযানের আগে আমি দেহরক্ষীসহ আমার বাড়ি থেকে বের হই। পুলিশে খবর দিলে ঘটনাস্থলে পুলিশ আসে। আগ্নেয়াস্ত্রগুলো উদ্ধারসহ ডাকাতদের গ্রেফতারের দাবি জানাই।

পুলিশের খুলনা রেঞ্জ অতিরিক্ত ডিআইজি আতিকুর রহমান মিয়া, পুলিশ সুপার (এসপি) সাদিরা খাতুন, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি সুবাস চন্দ্র বোষ, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নিজামুদ্দিন খান নিলুসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং রাজনৈতিক নেতারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

এ ঘটনায় সিআইডি, পিবিআই, ডিবিসহ পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে। এ ঘটনায় জড়িতদের ধরতে অভিযান চলছে বলে জানিয়েছেন জেলা পুলিশের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২৩
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।