ঢাকা, সোমবার, ২৯ আশ্বিন ১৪৩১, ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ১০ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

চাচার সঙ্গে বিরোধ, ২ মাস ধরে বাড়িছাড়া নারী ফুটবলার মিলির পরিবার

  ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২৩
চাচার সঙ্গে বিরোধ, ২ মাস ধরে বাড়িছাড়া নারী ফুটবলার মিলির পরিবার মিলির পরিবার

ময়মনসিংহ: আপন চাচার সঙ্গে ভিটা-জমির বিরোধে দুই মাস ধরে বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র ভাড়া বাসায় বসবাস করছেন জাতীয় নারী ফুটবল দলের গোলরক্ষক মিলি আক্তার (১৭) ও তার পরিবার। এ নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাসহ সংশ্লিষ্ট মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।

 

মিলি আক্তার ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার চন্ডীপাশা ইউনিয়নের বারুইগ্রাম এলাকার মো. শামছুল হকের মেয়ে। তাঁর বাবা একজন দিনমজুর। বাবা-মা ও চার বোন নিয়ে ছয় সদস্যের পরিবার তাদের।

অভিযোগ উঠেছে, আপন চাচা আবুল হোসেন (৫০) ও তার পরিবারের সদস্যদের অত্যাচারে বর্তমানে সপরিবারে বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র ভাড়া বাসায় বসবাস করতে বাধ্য হয়েছে এই অসহায় পরিবারটি। একাধিকবার সালিশ বৈঠকেও বিষয়টির সমাধান না হওয়ায় সম্প্রতি নান্দাইল মডেল থানা পুলিশের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন এই নারী ফুটবলার।

জানা যায়, মিলি আক্তার বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা গোল্ডকাপ টুর্নামেন্টে নান্দাইল উপজেলার রানার্সআপ দলের নিয়মিত গোলকিপার ছিলেন। এরপর তিনি অনূর্ধ্ব-১৫ ও ১৬ দলে অংশগ্রহণ করেন। বর্তমানে তিনি জাতীয় নারী দলের নিয়মিত গোলকিপারদের একজন।  

ভুক্তভোগী মিলি আক্তার বলেন, এক টুকরো ভিটা ছাড়া আমাদের আর কিছুই নেই। ২০১৮ সালে ওই ভিটার মধ্যে সরকারি সহযোগিতায় একটি ঘর নির্মাণ করে দেয় উপজেলা প্রশাসন। সেই থেকেই ওই ঘরেই কোনো মতে আমরা বসবাস করে আসছি।

কিন্তু বিগত কিছুদিন ধরে আমার চাচা আবুল হোসেন ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা কোনো কারণ ছাড়াই আমাদের সঙ্গে শত্রুতা সৃষ্টি করে অত্যাচার করে আসছে। ইচ্ছে করেই তারা আমার ঘরের সামনে পয়ঃনিষ্কাশনের ময়লা আবর্জনা ফেলে রাখে। ফলে দুর্গন্ধের কারণে টেকা যায় না। তাছাড়া তারা আমার দখলীয় জায়গায় জোরপূর্বক গাছ রোপণ করে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে আসছে। এসব বিষয়ে কথা বললে তারা আমাদের প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে বলে। এই অবস্থায় গত দুই মাস ধরে বাধ্য হয়ে স্থানীয় নিশিপুর সংলগ্ন এলাকার একটি ভাড়া বাসায় পরিবার নিয়ে বসবাস করছি।  

মঙ্গলবার (২১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বাংলানিউজের কাছে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন নান্দাইল মডেল থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আলয় চন্দ্র সরকার।

তিনি বলেন, আপন চাচার সঙ্গে বিরোধের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে। তবে বিষয়টি সমাধানের জন্য ইতোমধ্যে একটি গাছ কেটে দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে পয়ঃনিষ্কাশনের জন্য পাইপ স্থাপন করতেও বলা হয়েছে। আশা করছি দ্রুত বিষয়টি সমাধান হয়ে যাবে।

এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে গতকাল (২০ ফেব্রুয়ারি) ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এটিএম আরিফ, চন্ডীপাশা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহাব উদ্দিন ভূঁইয়া ও স্থানীয় ভূমি কর্মকর্তা।

এটিএম আরিফ জানান, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে একটি লিখিত প্রতিবেদনে বিষয়টি জেলা ও উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করা হয়েছে। তবে আপাতত যে সমস্যা ছিল তা অনেকটাই সমাধানের পথে।  

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুর রহিম বলেন, ঘটনা জেনেছি। মূলত ঘটনাটি চাচার সঙ্গে পারিবারিক বিরোধ। এতে সমস্যা আছে, তবে তা খুব প্রকট নয়। ইতোমধ্যে সে সমস্যাগুলো সমাধান করে দেওয়া হচ্ছে। তবে কেউ তাদের জোর করে বাড়ি থেকে বের করে দেয়নি। তারা চাচার সঙ্গে বিরোধে স্বইচ্ছায় বাড়ি ছেড়ে ছিল। আশা করছি তারা আবার শিগগিরই বাড়ি ফিরবে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২৩
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।