ঢাকা, রবিবার, ২২ বৈশাখ ১৪৩১, ০৫ মে ২০২৪, ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

মিঠামইনে আবদুল হামিদ সেনানিবাস উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

মহিউদ্দিন মাহমুদ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২১৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২৩
মিঠামইনে আবদুল হামিদ সেনানিবাস উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী ছবি: ফোকাস বাংলা

মিঠামইন, কিশোরগঞ্জ থেকে: হাওর অধ্যুষিত মিঠামইনে নবনির্মিত বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হামিদ সেনানিবাস উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বেলা সোয়া ১১টার দিকে রাষ্ট্রপতির নামে এ সেনানিবাসটি উদ্বোধন করেন তিনি।

মিঠামইনে বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হামিদ সেনানিবাসটি রাষ্ট্রপতির বাড়ির পাশে ঘোড়াউত্রা নদীর চরে নির্মিত। সরকার প্রধান সেটি উদ্বোধনের পর একটি আম গাছের চারা রোপণ করেন। এরপর তিনি সেনানিবাসের প্যারেড গ্রাউন্ডে যান। সেখানে তাকে গার্ড অব অনার দেন সেনা সদস্যরা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পাঁচটি ইউনিটের পতাকা উত্তোলন করা হয়। পরে তিনি এ উপলক্ষে বেলুন ওড়ান। তারপর সেনা সদস্যদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দেন সরকার প্রধান।

এসময় বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হামিদ সেনানিবাসের গুরুত্ব তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, কিশোরগঞ্জ জেলায় মিঠামইনে নব প্রতিষ্ঠিত বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হামিদ সেনানিবাস হাওর এলাকার সার্বিক নিরাপত্তায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করি। তাছাড়া, দেশের উত্তর-পূর্বাংশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও জোরদার হবে।

রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের প্রশংসা করে শেখ হাসিনা বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হামিদ, আমাদের রাষ্ট্রপতি। তিনি এ অঞ্চল থেকে বার বার নির্বাচিত হয়েছেন। সেই ৭০ এর নির্বাচন, ৭৩ এর নির্বাচন থেকে শুরু করে প্রতিটি নির্বাচনে তিনি জয় লাভ করেছেন এবং জনগণের সেবা করে গেছেন।

শেখ হাসিনা বলেন, এই দুর্গম অঞ্চলের মানুষের পাশে থাকা, তাদের সুখ-দুঃখের সঙ্গী হওয়া, তাদের ভাগ্য পরিবর্তনে আবদুল হামিদ নিরলস পরিশ্রম করেছেন। তিনি যখন রাষ্ট্রপতি হয়েছেন তখন এ অঞ্চলে একটা সেনানিবাস করার ইচ্ছে প্রকাশ করেছিলেন। এটি এই অঞ্চলের মানুষের সার্বিক উন্নয়নে অবদান রাখতে পারবে। তারই ইচ্ছায় এই সেনানিবাসটি আমরা গঠন করেছি। তার নামেই এ সেনানিবাস আমরা উৎসর্গ করেছি।

সরকার প্রধান বলেন, রাষ্ট্রপতি যখন যে দায়িত্ব পালন করেছেন অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন। বাংলাদেশের যুদ্ধ এবং যুদ্ধ বিধ্বস্ত বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে তার বিরাট অবদান রয়েছে। তিনি নিবেদিত প্রাণ এবং সৎভাবে জীবনযাপন করে এদেশের মানুষের সেবা করে গেছেন। কাজেই তার নামে এই সেনানিবাস করতে পেরে আমরা সত্যিই খুব আনন্দিত।

হাওর এলাকার মানুষের জীবন সংগ্রামের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, মিঠামইন হাওর অঞ্চলটি বর্ষাকালে ছোট ছোট দ্বীপের মতো হয়ে যায়। এখন ঠিক তার বিপরীত। এখন আমরা দেখছি ফসলে ভরে গেছে, রাস্তাঘাট আছে। কিন্তু বর্ষাকালে ভিন্ন চিত্র। এ অঞ্চলের মানুষকে জীবন যুদ্ধে প্রতিনিয়ত লড়াই করতে হয়।

সেনানিবাস উদ্বোধনের সময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ। অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী, আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, সংসদ সদস্য, সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, দুই যুগেরও বেশি সময় পর মিঠামইনে এলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার আগমন ঘিরে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে এ অঞ্চলে। এ সফরে শেখ হাসিনা প্রথমবারের মতো জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহচর ও বর্তমান রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের বাড়ি যাবেন।

সেনানিবাস উদ্বোধনের আনুষ্ঠানিকতা শেষে রাষ্ট্রপতির বাড়ি গিয়ে আতিথেয়তা গ্রহণ করবেন তিনি। পরে বিকেলে মিঠামইন হেলিপ্যাড মাঠে আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় যোগ দেবেন।

এদিকে নিজের বাড়িতে জাতির পিতার কন্যাকে স্বাগত জানাতে গতকাল সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বঙ্গভবন থেকে হেলিকপ্টারে মিঠামইন আসেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। শেখ হাসিনাকে নিজ গ্রামের বাড়িতে হাওরের মাছ, অষ্টগ্রামের পনিরসহ স্থানীয় ঐতিহ্যের খাবার দিয়ে আপ্যায়ন করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১২১৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২৩
এমইউএম/এমজে/এমএইচএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।