ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

ভূমি নিয়ে ভয় দূর করতে এসিল্যাণ্ডের ব্যতিক্রমী উদ্যোগ

শেখ তানজির আহমেদ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০৫ ঘণ্টা, মার্চ ৭, ২০২৩
ভূমি নিয়ে ভয় দূর করতে এসিল্যাণ্ডের ব্যতিক্রমী উদ্যোগ

সাতক্ষীরা: জ্ঞানের অভাবে ভূমি নিয়ে সবসময়ই সাধারণ মানুষের মধ্যে একটি ভীতিকর অবস্থা বিরাজ করে। ভূমি সংক্রান্ত বিষয়ে জানা শোনার অভাবে অনেকেই ক্ষতিগ্রস্ত হন, হাতছাড়া হয়ে যায় মূল্যবান সম্পত্তি আবার অনেককে শিকার হতে হয় হয়রানির।

 

ঠিক এমনই উপলব্ধি থেকে শিক্ষার্থীদের মাঝে ভূমি বিষয়ক জ্ঞান ছড়িয়ে দিতে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছেন সাতক্ষীরার কালিগঞ্জের এসিল্যাণ্ড মো. আজাহার আলী।

নিজ উদ্যোগেই তিনি উপজেলার আওতাধীন স্কুলে স্কুলে যাচ্ছেন এবং হাতে কলমে শিক্ষার্থীদের ভূমি, মৌজা, দাগ, খতিয়ানসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ক্লাস নিচ্ছেন। আহ্বান জানাচ্ছেন ভূমি বিষয়ক জ্ঞান আহরণের এবং ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবনে তা কাজে লাগানোর। তার এই উদ্যোগে অনেকটাই উচ্ছ্বসিত শিক্ষার্থীরা।

কালিগঞ্জ পাইলট মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী সায়মা সিদ্দিকা জানায়, জমি জায়গা নিয়ে প্রায় বাড়ি ও প্রতিবেশীদের মধ্যে ঝগড়া বিবাদ দেখি। যার মূল কারণ ভূমির বিষয়ে জ্ঞান না থাকা। এসিল্যান্ড স্যার আমাদের ভূমি নিয়ে অনেক ধারণা দিয়েছেন।

দশম শ্রেণির আরেক শিক্ষার্থী ফারিয়া জানায়, আমরা ভূমি সম্পর্কিত মৌলিক ধারণা, যেমন- ভূমি, পর্চা, খতিয়ান, দাগ, নামজারি এসব সম্পর্কে জানতাম না। আজ এগুলো সম্পর্কে জানতে পেরে ভাল লাগছে এবং এ বিষয়েও ভাল লাগছে যে, ভূমি সম্পর্কে আমি যতটা জানি, অনেকেই তা জানে না।  

বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শেখ হাসানুল আলম লাভলু বলেন, এমন উদ্যোগ দেশব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়া দরকার। তাহলে সকলেই স্কুল জীবন থেকে ভূমি সম্পর্কে জানতে পারবে এবং নিজেদের সম্পত্তি নিজেরাই রক্ষণাবেক্ষণ করতে পারবে। না জানার কারণে অন্যের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হতে হবে না।

কালিগঞ্জ পাইলট মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন বলেন, এমন উদ্যোগ প্রশংসার দাবিদার। এতে আমাদের শিক্ষার্থীরা ভূমি বিষয়ক জ্ঞান অর্জন ও ব্যক্তিগত জীবনে কাজে লাগাতে পারবে।

ব্যতিক্রমধর্মী এই উদ্যোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে কালিগঞ্জের এসিল্যান্ড মো. আজাহার আলী বলেন, প্রকৃতপক্ষে এই পদে যোগদানের আগে ভূমি সম্পর্কে আমারও তেমন ধারণা ছিল না। এখন প্রতিদিনই অফিসে প্রচুর মানুষ আসেন, যাদের প্রথম বক্তব্য এ বিষয়ে তার কোনো ধারণা নেই। জানা শোনার অভাবে তার কাজটা হচ্ছে না। মূলত সাধারণ মানুষের এই অসহায়ত্ব দূর করতেই উদ্যোগটি নেওয়া হয়েছে। আমার ধারণা স্কুল জীবন থেকে পাঠ্যপুস্তকের বাইরে ভূমি বিষয়ক জ্ঞান চর্চার মাধ্যমে মানুষের এই অসহায়ত্ব দূর করা সম্ভব। যা তাদের নিজেদের সম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণে আশা অনুরূপ ফল দেবে। হয়রানির হাত থেকে মুক্তি দেবে। কেউ ইচ্ছা করলেই অন্যের সম্পত্তি দখল করতে পারবে না।  

বাংলাদেশ সময়: ২১০৩ ঘণ্টা, মার্চ ০৭, ২০২৩
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।