ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ছাত্রলীগ সভাপতির নামে কিশোরীর বাবা-চাচাকে পিটিয়ে আহতের অভিযোগ   

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৫৪ ঘণ্টা, মার্চ ১১, ২০২৩
ছাত্রলীগ সভাপতির নামে কিশোরীর বাবা-চাচাকে পিটিয়ে আহতের অভিযোগ    অভিযুক্ত ফরিদপুরের সালথা উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি রায়মোহন কুমার।

ফরিদপুর: উত্যক্ত করার প্রতিবাদ করায় এক কিশোরীর বাবা ও চাচাকে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে ফরিদপুরের সালথা উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি রায়মোহন কুমার রায়ের (২৮) বিরুদ্ধে।  

আহতরা হলেন - উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের গৌড়দিয়া গ্রামে জীবন পাল (৪৯) ও কিশোরীর চাচা পরাণ পাল(৫৩)।

আহতদের ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে।

অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা রায়মোহন আটঘর ইউনিয়নের সাড়ুকদিয়া গ্রামের বাসিন্দা।  

শুক্রবার (১০ মার্চ) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের গৌড়দিয়া গ্রামে প্রতিবেশী তনয় বোসের বাড়ির উঠোনে এ ছাত্রলীগ সভাপতির বেধড়ক পিটুনির শিকার হন জীবন ও পরাণ।

ঘটনারা সত্যতা নিশ্চিত করেছেন সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ সাদিক।  

তিনি বলেন, শুক্রবার এক সালিশে হাতাহাতির ও মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এতে কিশোরীর বাবা, চাচা ও চাচাতো ভাই আহত হন। আহতরা এখন চিকিৎসা নিচ্ছেন। অভিযোগে শুনেছি রায়মোহনের মোটরসাইকেলটিও ভাঙচুর করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কেন এই মারামারির ঘটনা ঘটল প্রশ্নে তিনি বলেন, চার-পাঁচ বছর ধরে রায়মোহন ওই কিশোরীর পেছনে প্রেমের প্রস্তাব নিয়ে ঘুরে যাচ্ছিল। কিন্তু কিশোরী তাকে পাত্তা দেয়নি। এ নিয়ে সালিশ হয়েছিল। সেখানে হাতাহাতির ও মারামারির ঘটনা ঘটে।

একই তথ্য দিয়েছেন ওই এলাকার চার নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আক্কাস মাতুব্বর।  

তিনি বলেন, ওই কিশোরী স্কুলে পড়া অবস্থাতেই রায়মোহন তাকে পথে উত্যক্ত করে আসছিল। এ নিয়ে বিদ্যালয়ে একবার সলিশও হয়েছে। ওই কিশোরী কলেজে ভর্তি হওয়ার পর রায়মোহন উত্যক্তের পাশাপাশি তাকে নানাভাবে হুমকি দিয়ে আসছিল।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, বিভিন্নভাবে হয়রানি করলে ওই কিশোরী বাড়িতে তার অভিভাবককে রায়মোহনের নামে অভিযোগ করেন।
শুক্রবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে গৌড়দিয়া গ্রামে তন্ময় বোসের বাড়িতে রায়মোহনের সঙ্গে বৈঠকে বসেন কিশোরীর বাবা জীবন পাল। বিষয়টি নিয়ে দুজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে জীবন পালকে লাঠি দিয়ে আঘাত করেন রায়মোহন। খবর পেয়ে জীবন পালের ভাই পরাণ পাল তার ছেলে পীযূষ পালকে (১৯) নিয়ে তনয় বোসের বাড়িতে গেলে রায়মোহনসহ ছাত্রলীগের ১০-১২ জন তাদের ওপর হামলা করে। জীবন, পরাণ ও পীযূষকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে আহত করে রায়মোহন ও তারা সঙ্গীরা। এতে পরাণ পালের মাথা ফেটে যায়।

আহতদের ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হলে জীবন ও প্রণয়কে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পীযূষকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।

এ দিকে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে বলে দাবি করেন সালথা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রায়মোহন কুমার রায়। উল্টো তিনি নিজেই মারধরের শিকার বলে জানালেন রায়মোহন।

তিনি বলেন, ওই কিশোরীর সঙ্গে আমার চার বছর ধরে প্রেম ছিল। কিন্তু গত দুই মাস আগে তা ভেঙে যায়। তনয় বোসের বাড়িতে বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে গেলে জীবন পাল আমাকে মারধর করে। পরে জীবন পালের ভাই ও ভাতিজাও আমাকে মারধর করে। আমি জীবন পাল ও তার চাচাকে মারিনি। আমাকে মারধোর করা হলেও কোথাও চিকিৎসা নেওয়ার প্রয়োজন হয়নি।  

বাংলাদেশ সময়: ০৮৫০ ঘণ্টা, মার্চ ১১, ২০২৩ 
এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।