মাদারীপুর: বীর মুক্তিযোদ্ধা মতিউর রহমান শেখ (৭৪)। শিবচরের বাখরের কান্দি এলাকার বাসিন্দা।
উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে তিনি বলেন, `আইজ পদ্মা সেতু দিয়া ট্রেন চলবে। ভাঙ্গা থেকে ট্রেন পদ্মা পার হইয়া ওই পারে যাইবে। দেখতে দেখতে এই এলাকার কত পরিবর্তন হইলো। পদ্মায় সেতু হইলো। এখন ট্রেনও চলবে। আমাদের কাছে আনন্দ লাগতেছে। '
তিনি বলেন, 'ট্রেন চালু হইলে আমরা সহজেই বিভিন্ন স্থানে যেতে পারবো। আর খরচও অনেক কম হইবে। আজকে মন্ত্রী আসবে। ট্রেন পদ্মা সেতু পার হয়ে মাওয়া যাবে। এই কারণে দেখতে আসলাম। '
জানা গেছে, মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) দুপুর ১২টার দিকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে পরীক্ষামূলক ভাবে ট্রেন ছেড়ে আসবে। শিবচরের পদ্মা স্টেশন হয়ে পদ্মা সেতু পার হয়ে মাওয়া যাবে ট্রেনটি। পুনরায় আবার মাওয়া থেকে ফিরে আসবে ভাঙ্গা স্টেশনে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, তিন ভাগে ভাগ করে পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের কাজ করা হচ্ছে। দিন-রাত দুই শিফটেই চলছে কার্যক্রম। পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ প্রযুক্তি ভায়াডাকের ওপর পাথরবিহীন প্রায় সাড়ে ৬ কিলোমিটার রেল সেতু স্থাপন হচ্ছে মূল সেতুতে।
মঙ্গলবার দুপুরে পরীক্ষামূলকভাবে ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে মাওয়া প্রান্তে যাবে ট্রেন। পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্ত থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত রেলপথ রয়েছে ৩২ কিলোমিটার। এর মধ্যে ভায়াডাক উড়াল রেললাইন চার কিলোমিটার আর মাটির ওপর দিয়ে ২৮ কিলোমিটার। ভায়াডাকের চার কিলোমিটার রেললাইন প্রস্তুত করা হয়েছে পাথরবিহীন। আর ২৮ কিলোমিটার নির্মাণ করা হয়েছে পাথর দিয়ে।
জাজিরা প্রান্ত থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত তিনটি স্টেশন রয়েছে। শিবচরে ২টি স্টেশন এবং ভাঙ্গায় জংশন রয়েছে। স্টেশনগুলোর ওপর দিয়ে ৩২ কিলোমিটার লাইন নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। এছাড়া ভাঙ্গা জংশনটি আধুনিকায়ন করার কাজ চলছে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে ঢাকা-পদ্মা সেতু হয়ে নতুন চার জেলা (মুন্সিগঞ্জ, শরীয়তপুর, মাদারীপুর ও নড়াইল) অতিক্রম করে যশোরের সঙ্গে রেল যোগাযোগ স্থাপিত হবে।
শিবচরের পদ্মা স্টেশনে কর্মরত মো. রিয়াজ নামের এক ব্যক্তি বলেন, 'আমরা যতটুকু জানি আগামী সেপ্টেম্বর মাস থেকে পদ্মা স্টেশন থেকে ট্রেনের টিকিট বিক্রি হবে। পদ্মা সেতু পার হয়ে ট্রেন যে পর্যন্ত যাবে। এখান থেকে যাওয়া যাবে। বা ফরিদপুর হয়ে রাজশাহী পর্যন্ত ট্রেনে যাওয়া যাবে। '
বাংলাদেশ সময়: ১২২৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৪, ২০২৩
আরএ