ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

জিডি করতে গিয়ে বিড়ম্বনায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ৭, ২০২৩
জিডি করতে গিয়ে বিড়ম্বনায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা

ঢাকা: রাজধানীর বঙ্গবাজারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় অনলাইন অ্যাপের মাধ্যমে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করছেন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা। তবে এই জিডি করতে গিয়ে বিড়ম্বনায় পড়ছেন অনেকেই।

শুক্রবার (৭ এপ্রিল) বঙ্গবাজারে আগুনের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের পুড়ে যাওয়া গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্টস, হারানো বা খোয়া যাওয়া দোকানের পণ্য, ব্যাংক লোন, সমিতির লোন অথবা ব্যাংকের চেক বই পুড়ে যাওয়ার বিষয়ে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে অস্থায়ী পুলিশ কন্ট্রোলরুমে সামনে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে আছেন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা।

তবে দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও অনেকে জিডি করতে পারছেন না।  

ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে আছি। কিন্তু একটা জিডি করতেই অনেক সময় লেগে যাচ্ছে। আর কতক্ষণ লাগবে জানি না। কিন্তু যত দ্রুত সম্ভব আমাদের জিডিটা দায়ের করতেই হবে। তাই আমরা লাইনে দাঁড়িয়ে আছি।

এদিকে পুলিশ জানান, সার্ভারে ধীরগতি ও ইন্টারনেট সংযোগে বিঘ্ন থাকায় মূলত অনলাইন অ্যাপের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্তদের জিডি লিপিবদ্ধ করতে সময় বেশি লাগছে। এতে আমাদেরও কিছু করার নেই। নেট সংযোগ ঠিকমতো না পাওয়া গেলে জিডি পেন্ডিং থেকে যায়, অ্যাপ নিতে চায় না। মূলত এ কারণেই একটি জিডি দায়ের করতে অধিক সময় লেগে যাচ্ছে।

শুক্রবার (৭ এপ্রিল) বিকেলে রাজধানীর গুলিস্তানে বঙ্গবাজারে আগুনের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এবং সরজমিনে ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।

বঙ্গবাজার গুলিস্তান ইউনিটের দোকানে মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন। তার চারটি দোকান পুড়ে যাওয়ার ঘটনায় একটি সাধারণ ডায়েরি লিপিবদ্ধ করার জন্য পুলিশের অস্থায়ী কন্ট্রোলরুমে এসেছেন। তিনি সেখানে লাইনে দাঁড়িয়ে জিডি করার অপেক্ষায় আছেন।

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, বঙ্গবাজারে চারটি দোকান একসঙ্গে ভাড়া নিয়ে ব্যবসা করছিলাম। আমার এই চারটি দোকানের অ্যাডভান্স দেওয়া ছিল ১০ লাখ টাকা‌। এছাড়া বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিয়ে ঈদ উপলক্ষে দোকানে পণ্য তুলেছিলাম ৩৫ লাখ টাকার। কিন্তু আগুনের ঘটনায় আমার ব্যবসার সমস্ত মূলধন শেষ। এখন একটি কাপড় কিনে গায়ে দেওয়ার মতো অর্থও আমার কাছে নেই।

তিনি আরও বলেন, আগুনের ঘটনায় আমার আর্থিক প্রতিষ্ঠানের লোনের কাগজপত্র, দোকানের গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র, মালামাল, চেক বই, গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্টস পুড়ে গেছে। এসব বিষয়ে থানায় অবগত করার জন্য এখানে জিডি করার জন্য এসেছি। কিন্তু দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে এখনো জিডি করতে পারি নাই।

জিডি দায়ের করার এই বিড়ম্বনা বা ধীরগতি কেন? জানতে চাইলে ঘটনাস্থলে অস্থায়ী পুলিশ কন্ট্রোল রুমের দায়িত্বে থাকা শাহবাগ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সুমন বসাক বাংলানিউজকে বলেন, ইন্টারনেটের সমস্যা ও অ্যাপের ধীরগতির কারণে বিড়ম্বনা সৃষ্টি হচ্ছে। অনেক ইনফরমেশন দেওয়ার পরও ইনফরমেশনটি অ্যাপ নিচ্ছে না। দেখা যাচ্ছে অনেকক্ষণ পরে অ্যাপ ইনফরমেশনটা নিচ্ছে। সে কারণে সময় ক্ষেপণ হচ্ছে। এছাড়া পর্যাপ্ত নেটওয়ার্ক মিলছে না।

শুক্রবার (৭ এপ্রিল) সকাল থেকে এ পর্যন্ত কতগুলো জিডি দায়ের করা হয়েছে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, আজ সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত আনুমানিক ৩০ থেকে ৩৫টি জিডি দায়ের হয়েছে। তবে নির্দিষ্ট সংখ্যাটা এখনই নিশ্চিত করে বলতে পারছি না।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ৭, ২০২৩
এসজেএ/এনএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।