ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে মিথ্যাচারকারীদের শাস্তির জন্য আইন পাস করা উচিত: মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৩৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ৯, ২০২৩
মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে মিথ্যাচারকারীদের শাস্তির জন্য আইন পাস করা উচিত: মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী

ঢাকা: ইতিহাস বিকৃতকারীদের ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিপক্ষে মিথ্যাচারকারীদের রাষ্ট্রীয়ভাবে শাস্তি দেবার জন্য সংসদে একটা আইন পাস করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।

রোববার (৯ এপ্রিল) জাতীয় সংসদের সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে বিশেষ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ১৪৭ বিধিতে উপস্থাপিত প্রস্তাবের ওপর তৃতীয় দিনে আলোচনায় অংশ নিয়ে মোজাম্মেল হক এ মন্তব্য করেন।

 

এ সময় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।

আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, স্বাধীনতার ইতিহাস ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরুদ্ধে যারা কথা বলে তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয়ভাবে শাস্তি হওয়া উচিত। তাই স্বাধীনতা বিরোধীদের শাস্তির জন্য এবং দেশকে একটা সেফ গার্ড দেবার জন্য, ইতিহাস বিকৃতকারীদের ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিপক্ষে মিথ্যাচারকারীদের রাষ্ট্রীয়ভাবে শাস্তি দেবার জন্য সংসদে একটা আইন পাস করার উচিত। আমি শুনেছি, ল কমিশন নাকি এ ধরনের একটি আইনের প্রস্তাবণা করেছে। এ আইনটি যাতে জাতিকে সেফ গার্ডে রাখার জন্য এ সংসদে পাস করা যায়, সে আহ্বান জানাবো।  

এসময় কারো নাম উল্লেখ না করে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী বলেন, তারা বাংলাদেশকে একটি অকার্যকর ও ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার চক্রান্ত করছে। শুধু তারাই চক্রান্ত করছে না, যারা এ সংসদকে বিশ্বাস করে না, দেশি-বিদেশি চক্রান্তকারীদের মুখপাত্র হিসেবে অনেকেই এ ষড়যন্ত্র করছে। আমি মনে করি, সংসদ যেহেতু সমস্ত কার্যক্রমের কেন্দ্রবিন্দু, তাই এখানেও মিথ্যাচার, ইতিহাসের বিকৃতি, তারা যখনই সময় পায়, তখনি সেই প্রচেষ্টা চালায়। এতে রাষ্ট্রের সার্বভৌমিত্ব আরও বেশি হুমকির মুখে পড়বে। প্রধানমন্ত্রী যেহেতু জেল হত্যা, বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার করেছেন, তিনিই দেশ বিরোধী, স্বাধীনতা বিরোধীদের শাস্তির জন্য এ আইনটি করতে পারেন।

তিনি বলেন, ভাগ্যের নির্মম পরিহাস, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে ঘাতকরা শুধু একটা মানুষকে হত্যা করেনি, তারা একটি স্বাধীন সংসদ নয়, একটা জাতিকে হত্যা করেছিল। বাংলার মানুষের আশা-আকাঙ্খা পদদলিত করেছিল। এসব ঘটনা চোখ মেলে দেখা দরকার, তা না হলে বার বার আমাদের হোঁচট খেতে হবে।  

মোজাম্মেল হক বলেন, ১৫ আগষ্টের হত্যাকাণ্ড, চার নেতার হত্যাকাণ্ড, সংবিধানে কাটাছেঁড়া- এ সব কিছুই ছিল এদেশ থেকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে মুছে ফেলার নামান্তর। সেই কারণে ২৩ বছরের শোষণ-বঞ্চনার পরে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে যে গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ ও ধর্মনিরপেক্ষতা- এই মূল চার নীতির ওপর ভিত্তি করে দেশ পরিচালিত হচ্ছিল। তারা এ ধারণাকে মুছে ফেলার চেষ্টা করেছিল।  

মন্ত্রী বলেন, এই কয়েকদিন আগে বিএনপির এক নেতা বলেছেন, এর চেয়ে পাকিস্তান ভালো ছিল। তারা বলে, আমাদের এই মহান মুক্তিযুদ্ধের নাকি কোনো প্রস্তুতি ছিল না। তাহলে সিক্রেট ডকুমেন্ট, প্রধানমন্ত্রী যা সংকলিত করেছেন সে সব যাবে কোথায়? তাহলে পাকিস্তান আমলে বঙ্গবন্ধুকে এন্টিপাকিস্তানি বলা হয়েছে, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা, বিচ্ছিন্নতাবাদী বলা হয়েছে, বার বার জেলে নেওয়া হয়েছে- এসব ডকুমেন্ট তো আছে। তারা এখনো পাক প্রেমি, এদের থেকে সেই পাকিস্তান প্রেম যায় নাই। তারা মুক্তিযুদ্ধের মূল লক্ষ্য গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ ও ধর্মনিরপেক্ষতাকে বিতর্কিত করে তারা আবারও পাকিস্তান ঘরানার ধর্মীয় রাজনীতি চালু করে এদেশকে অকার্যকর করতে চায়। মুক্তিযুদ্ধের সময় ল্যুজ কনফেডারেশন করে পাকিস্তান টিকিয়ে রাখতে চেয়েছিল। খুনি মোস্তাক, খুনি জিয়া বলেছিল ওয়ার কাউন্সিল করে মুক্তিযুদ্ধ করার জন্য এবং রাজনীতিক সরকারের অধীনে মুক্তিযুদ্ধ না করার জন্য।

বাংলাদেশ সময়: ১২০৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ৯, ২০২৩
এসকে/এনএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।