ঢাকা, সোমবার, ১৭ আষাঢ় ১৪৩১, ০১ জুলাই ২০২৪, ২৩ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

চাঁদপুরে ৬ মাস স্টিমার চলাচল বন্ধ, ঈদে বাড়বে ভোগান্তি

মুহাম্মদ মাসুদ আলম, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১১ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৩, ২০২৩
চাঁদপুরে ৬ মাস স্টিমার চলাচল বন্ধ, ঈদে বাড়বে ভোগান্তি

চাঁদপুর: সেই পাকিস্তানি আমল থেকে চাঁদপুরে নিয়মিত চলা বিআইডব্লিউটিসি পরিচালিত রকেট স্টিমার সার্ভিস বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বিগত ছয় মাস এ অবস্থা থাকবে বলে জানালেন সংশ্লিষ্ট লোকজন।

 

বিগত কয়েক বছর আগেও স্বাভাবিকভাবে সপ্তাহে দুই থেকে তিনদিন পিএস টার্ন, লেপচা, মাসুদ, শেলা, মধুমতি নামের রকেট স্টিমারগুলো চলত। এরপর মধুমতি ছাড়া একে একে সব বন্ধ হয়ে যায়।  কিন্তু মাস ছয়েক আগে মধুমতিও বন্ধ হয়ে যায়।  বর্তমানে বন্ধ থাকায় শত শত যাত্রী ভোগান্তিতে পড়েছেন। চাঁদপুর থেকে বরিশাল, খুলনা, বাগেরহাট, ঢাকায় ঝড়-তুফান, বজ্র-বৃষ্টির দিনে, ঈদ উৎসবে নিরাপদে ও নিশ্চিন্তে যাতায়াত করতে পারছেন না শত শত যাত্রী। ক্ষতি হচ্ছে সরকারের রাজস্ব আয়েরও।  

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, স্টিমার না থাকায় সপ্তাহান্তে বা কখনো টানা তিনদিন সরকারি ছুটি থাকলে লোকজন বাড়ি ও অফিসে যাতায়াত করতে পারছেন না সুবিধামতো। এ ঘাট দিয়ে চাঁদপুরের বিভিন্ন উপজেলা, চট্টগ্রাম, সিলেট, কুমিল্লা ও ফেনীর শত সহস্র লোক নিয়মিত বরিশাল, খুলনা, বাগেরহাট ও ঢাকায় যাতায়াত করতেন।  

চাঁদপুরের বিআইডব্লিউটিসির উপ-পরিচালক মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন জানান, রকেট স্টিমার চাঁদপুরে চলাচল কেন বন্ধ, সেটার সঠিক তথ্য আমি জানি না। তবে এ তথ্য হেড অফিস বলতে পারবে।

তিনি আরও বলেন, এখন মানুষের রকেট স্টিমারে ভ্রমণের প্রতি আগ্রহ কম।  

অনেকে বলছেন, চাঁদপুর যাত্রী টামির্নাল ঘাট থেকে নিয়মিত প্রতিদিন প্রতি আধা ঘণ্টা কিংবা এক ঘণ্টা পর পর দিনে রাতে প্রায় ৩৭টি যাত্রীবাহী বিলাসবহুল লঞ্চ চলাচল করছে দেশের এসব নৌ রুটসহ বিভিন্ন রুটে। পদ্মা সেতুর কারণে যাত্রী কম হলেও এসব লঞ্চ চলছে। কোনোটাই তো বন্ধ হয়নি। স্টিমার সার্ভিস দেওয়াটা রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব। কোনো লাভ-লোকসানের ব্যাপার না। চট্টগ্রাম ও সিলেটের ট্রেনের সময়ের সঙ্গে সমন্বয় করে আসন্ন ঈদে রকেট স্টিমার সার্ভিস আবার চালু করলে শত সহস্র যাত্রীর ঈদ যাত্রায় কষ্ট লাঘব হতো, সুবিধা হতো।

জানতে চাইলে বিআইডব্লিউটিসির কর্মচারী মাসুদ, রাশেদ ও বারেক জানান, পদ্মা সেতু চালুর পরে যাত্রী সংখ্যা ধীরে ধীরে কমে যাওয়ায় স্টিমার সার্ভিস বন্ধ রয়েছে।  

রকেট ঘাটের সঙ্গেই রয়েছে চাঁদপুর বড় রেলস্টেশন। চাঁদপুর টু বরিশাল রকেট স্টিমার ভাড়া মাত্র ১২০ টাকা। আর লঞ্চ ভাড়া ৩৬০ টাকা। যা ঈদে আবার দ্বিগুণ হয়ে যায়। স্টিমার ঘাট ও রেলস্টেশনের ব্যবধান মাত্র দুই মিনিটের হাঁটাপথ।

ঘাটের চা দোকানি ইব্রাহীম মিয়া ও লিটন মোল্লা, তেলব্যবসায়ী মোস্তফা মিয়া, ওমর ফারুকসহ অনেকে জানান, রকেট স্টিমার প্রায় ছয় মাস ধরে চলে না, বন্ধ। পদ্মা সেতু চালুর কারণে মানুষজন এখন আর রকেট স্টিমারে ভ্রমণ করছেন না। সেজন্যই  রকেট স্টিমার বন্ধ রয়েছে।

চাঁদপুর রেলস্টেশনের স্টেশন মাস্টার সোয়াইব সিকদার ও কয়েকজন টিটিই জানান, চাঁদপুরে রকেট সার্ভিস চালু করলে দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রীদের ভ্রমণ আরামদায়ক, নিরাপদ ও সাশ্র্রয়ী হতো। পরিবার পরিজনদের জন্যও খুবই সুবিধা হতো। চাঁদপুর থেকে বরিশালের ভাড়াও কম, মাত্র ১২০ টাকা। আর চাঁদপুর-বরিশালের লঞ্চ ভাড়া ৩৫০-৪০০ টাকা। ঈদে আরও বেশি নেয়। তাছাড়া রেলস্টেশন থেকে স্টিমার ঘাট মাত্র দুই মিনিটের হাঁটাপথ।

চাঁদপুর বিআইডাব্লিউটিসি (বাণিজ্য) ম্যানেজার ফয়সাল চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রীদের সুবিধার্থে চাঁদপুর রুটে ঈদ উপলক্ষে কয়েকদিনের জন্য স্টিমার চালু করার বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ আলোচনা করছে। শিগিরই সিদ্ধান্ত হওয়ার কথা রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০২ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৩, ২০২৩
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।