মাদারীপুর: পদ্মা সেতুর এক্সপ্রেসওয়ে। ঢাকার যাত্রাবাড়ী থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত এক্সপ্রেসওয়েতে পরিবহন চলাচলে নেই কোনো প্রতিবন্ধকতা।
তবে যাত্রীদের চাপ মোকাবিলায় পরিবহনগুলো ট্রিপের সংখ্যা বাড়াবে বলে জানা গেছে। একই সঙ্গে এক্সপ্রেসওয়েতে তৎপর থাকছে হাইওয়ে পুলিশও। নিয়ন্ত্রণহীন গতি ও ফিটনেসবিহীন যানবাহনের বিরুদ্ধে কঠোর থাকবে বলে জানিয়েছে শিবচর হাইওয়ে থানা পুলিশ।
জানা গেছে, পদ্মা সেতু হওয়ার পর রাজধানী ঢাকায় যাতায়াতে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের নৌপথের চরম ভোগান্তির অবসান হয়েছে। তবে ভাঙ্গা টু ঢাকা পর্যন্ত যাত্রীবাহী বাসগুলোর বেশিরভাগই পুরাতন থাকায় যাত্রীদের স্বাচ্ছন্দ্যে যাতায়াত ব্যাহত হচ্ছে। বেশির ভাগ বাসই লোকাল হিসেবে পথে থামছে। ফলে সময় বেশি লাগছে ঢাকা পৌঁছাতে। তবে ঈদ সামনে রেখে নৌপথের ভোগান্তি না থাকায় স্বস্তিতেই ঢাকা ছাড়তে পারবে বলে আশা করেন যাত্রীরা। রাত হলেও নির্বিঘ্নে ফিরতে পারবেন বাড়িতে।
এদিকে যাত্রীদের স্বাচ্ছন্দ্যে ঘরে ফেরা নিশ্চিত করতে দূরপাল্লার পরিবহন তাদের ট্রিপের সংখ্যা বাড়ানোর চিন্তা-ভাবনা করছে। এ বিষয়ে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে মাদারীপুর জেলা বাস ও মিনিবাস মালিক সমিতি। মাদারীপুর থেকে ঢাকার বাস সার্ভিসে বাড়ানো হবে ট্রিপের সংখ্যা। একই সঙ্গে কয়েকটি রুটেই ঢাকা থেকে বাস চলাচল করবে।
মাদারীপুর জেলা বাস মালিক সমিতির সূত্র জানায়, ঈদ সামনে রেখে মাদারীপুরে ফিরবে হাজার হাজার যাত্রী। যাত্রী চাপ নিয়ন্ত্রণে পরিবহনের ট্রিপের সংখ্যা বাড়ানো হবে। এই রুটে প্রতিনিয়ত চারটি কোম্পানির পরিবহন চলাচল করে। এর মধ্যে সার্বিক পরিবহন, সোনালী পরিবহন, চন্দ্র পরিবহন ও মাদারীপুর পরিবহন। প্রতিদিন এ চারটি পরিবহন ১৫০ টি ট্রিপ দিয়ে থাকে। তবে ঈদের যাত্রী সুবিধার জন্য দ্বিগুণ করা হবে এসব ট্রিপ, সর্বোচ্চ ৩০০ টির বেশি ট্রিপ দেওয়ার কথা রয়েছে। ঢাকা-ভাঙ্গা-মাদারীপুর রুটের পাশাপাশি ঢাকা-শিবচর-ছিলারচর হয়ে মাদারীপুর ঢুকবে এসব বাস।
মো. আজিজুল হক নামে শিবচরের এক যাত্রী বলেন, আগে পদ্মা পার হওয়া নিয়ে টেনশন হতো। এখন এই টেনশন থেকে আমরা মুক্ত। তবে পরিবহনগুলোর আরও উন্নত সেবা দরকার। রুটে ভালো বাস সার্ভিস থাকলে ভোগান্তি ছাড়াই বাড়ি ফেরা যাবে। তাছাড়া গরমে এসি বাসের চাহিদা থাকবে। এসি বাস সার্ভিস বাড়ানো উচিত।
শিবচর হাইওয়ে থানা সূত্রে জানা গেছে, ঈদকে সামনে রেখে এক্সপ্রেসওয়েতে বাড়তি নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবে হাইওয়ে পুলিশ। গতিসীমা ও ফিটনেসবিহীন বাস নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত পুলিশের কার্যক্রম চলছে। শুক্রবার (১৪ এপ্রিল) সারা দিনে গতিসীমা লঙ্ঘনের দায়ে ১১টি পরিবহন এবং ফিটনেস না থাকায় ১টি পরিবহনকে মামলা দিয়েছে পুলিশ।
মাদারীপুর জেলা বাস ও মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বলেন, ঈদে যাত্রীদের চাপ ও সুবিধার কথা চিন্তা করে ঢাকা-মাদারীপুর রুটে বাসের ট্রিপের সংখ্যা বাড়ানো হবে। এছাড়াও ঢাকা থেকে কয়েকটি রুট হয়ে মাদারীপুরে বাস প্রবেশ করবে, এতে যাত্রীরা তাদের সুবিধা অনুযায়ী জায়গায় নেমে বাসায় ফিরতে পারবে।
শিবচর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, ঈদের এক সপ্তাহ আগে থেকে ঈদ পরবর্তী এক সপ্তাহ পর্যন্ত মহাসড়কে হাইওয়ে পুলিশের বাড়তি তৎপরতা থাকবে। সড়কের কোথাও কোনো রকম বিশৃঙ্খলা যাতে না হয়, এবং যাত্রীরা নির্বিঘ্নে বাড়ি ফিরতে পারে, সেদিকে আমরা বিশেষ তৎপর থাকবো। এছাড়া গতি নিয়ন্ত্রণ ও ফিটনেসবিহীন গাড়ির বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি।
বাংলাদেশ সময়: ১৫২৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৫, ২০২৩
আরএ