ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৯ আশ্বিন ১৪৩১, ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ১১ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

‘মুজিবস বাংলাদেশ ফুড ফেস্টিভ্যাল’ শুরু বৃহস্পতিবার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৪০ ঘণ্টা, মে ৪, ২০২৩
‘মুজিবস বাংলাদেশ ফুড ফেস্টিভ্যাল’ শুরু বৃহস্পতিবার ছবি: রাজীন চৌধুরী

ঢাকা: হাজীর বিরিয়ানি থেকে চুইঝালের মাংস, সাদেক গোল্লা থেকে মাতৃভাণ্ডারের রসমালাই দেশের এমন সব ঐতিহ্যবাহী খাবার নিয়ে প্রথমবারের মতো শুরু হচ্ছে মুজিবস বাংলাদেশ ফুড ফেস্টিভ্যাল টেস্ট অব বাংলাদেশ।

বুধবার (৩ মে) রাজধানীর হোটেল কন্টিনেন্টালে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।

বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে এবং স্পেলবাউন্ড কমিউনিকেশন লিমিটেডের পরিচালনায় বাংলার ঐতিহ্যবাহী সব খাবার ও হাজার বছরের বর্ণিল সংস্কৃতির সংমিশ্রণে মুজিবস বাংলাদেশ ফুড ফেস্টিভ্যাল টেস্ট অব বাংলাদেশের আয়োজন করা হয়েছে।

৪-৬ মে (৩ দিন) রাজধানীর বনানীর মোস্তাফা কামাল আতাতুর্ক পার্কে আয়োজিত হতে যাচ্ছে বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ বর্ণিল এ খাবারের উৎসব।

সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী। অনুষ্ঠানে সভাপতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোকাম্মেল হোসেন।

এছাড়া উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (অতিরিক্ত সচিব) আবু তাহের মুহাম্মদ জাবের, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (পর্যটন) মনোজ কুমার রায়, স্পেলবাউন্ড কমিউনিকেশন লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মো. সাদেকুল আরেফিন।

লিখিত বক্তব্যে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে জাতির পিতার প্রতি শ্রদ্ধা অর্পণের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের উদ্যোগে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় কর্তৃক মুজিবস বাংলাদেশ বিশেষ কান্ট্রি ব্র্যান্ডনেমের প্রস্তাব করা হয়। প্রস্তাবিত ব্র্যান্ডনেমটি প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ২০২১ সালে ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসে লোগো ডাকটিকিটি উন্মোচন করা হয়, যা ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সব ধরনের পর্যটন সংশ্লিষ্ট প্রচার-প্রচারণায় ব্যবহার করা হবে।

বঙ্গবন্ধুর চেতনা ধারণ করে স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের অংশ হিসেবে মুজিবস বাংলাদেশ পর্যটন ব্র্যান্ডনেম প্রচার এ উৎসবের অন্যতম উদ্দেশ্য। টেস্ট অব বাংলাদেশ ফুড ফেস্টিভ্যাল আয়োজনটি মূলত আমাদের ঐতিহ্যবাহী খাদ্য সংস্কৃতির প্রচার ও অঞ্চলভিত্তিক খাবারসমূহের টেকসই সংরক্ষণের উদ্দেশে আয়োজন করা হচ্ছে, যা বাংলাদেশের গ্যাস্ট্রোনমি ট্যুরিজমের প্রচারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। ভবিষ্যতে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের এ আয়োজন দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশের বিভিন্ন গন্তব্যে আয়োজন করা হবে, যা এ দেশের খাদ্য সংস্কৃতির প্রচার ও প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।  

বাংলাদেশে এ প্রথমবার এমন একটি উৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে যেখানে একই স্থানে হাল আমলের চেইন হোটেলের মুখোরোচক বাঙালি খাবারের পাশপাশি অঞ্চলভিত্তিক ঐতিহ্যবাহী খাবারসমূহ পাওয়া যাচ্ছে।  

অঞ্চলভিত্তিক ঐতিহ্যবাহী খাবার যেমন খুলনার বিখ্যাত চুই ঝালের মাংস, চট্টগ্রামের মেজবান, ঢাকার বিখ্যাত হাজীর বিরিয়ানি, বিউটির লাচ্ছি, বাকরখানি, নান্নার বিরিয়ানি, বিসমিল্লাহর চাপ, মোস্তাকিমের চাপ, বোবার বিরিয়ানি, বরিশালের গুটিয়ার সন্দেশ, বগুড়ার দই, কুমিল্লার মাতৃভাণ্ডারের রসমালাই, নাটোরের কাঁচাগোল্লা, বাগেরহাটের চিংড়ি ও সুন্দরবনের মধু, যশোরের জামতলার সাদেক গোল্লা, মৌলভীবাজারের মনিপুরী খাবার, কক্সবাজারের সী ফুড, খাগড়াছড়ির বিখ্যাত ব্যাম্বো চিকেন, বান্দরবানের মারমা ফুড, উত্তর বঙ্গের প্যালকা, পিরোজপুরের সন্ধ্যা নদীর ইলিশ, সিলেটের পানসী রেস্টুরেন্টের আখনী বিরিয়ানি, ময়মনসিংহের মুক্তাগাছার মণ্ডা, শেরপুরের তুলসিমালা চালের পায়েশ, হরেক রকমের জুস, ফুসকা, আগুন পানসহ অন্যান্য খাবারের পসরা সাজানো থাকবে এ আয়োজনে। বাংলাদেশের বিখ্যাত চেইন হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকা, প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও, শেরাটন ঢাকা, হোটেল ওয়েস্টিন ও বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন তাদের বিখ্যাত বাংলাদেশি খাবার এ আয়োজনে উপস্থাপন করবে। ৪৩টি স্টলের মাধ্যমে ৩৯টি প্রতিষ্ঠান এসব খাবার উপস্থাপন ও বিক্রি করবে।

৪-৬ মে সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত চলমান এ আয়োজনে বাংলাদেশে নিযুক্ত বিদেশি দূতাবাস, মিশন ও আন্তর্জাতিক সংস্থার কূটনৈতিকদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। মূলত বনানী মাঠে এ আয়োজন করা হয়েছে বিদেশি কূটনৈতিকদের অংশগ্রহণ নির্বিঘ্ন করার নিমিত্তে।

৪ মে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরিন শারমিন চৌধুরী। এছাড়া ৬ মে সন্ধ্যা ৭টা ১৫ মিনিটে আয়োজিত সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।

তিনদিনব্যাপী এ আয়োজনে ঐতিহ্যবাহী খাবারের পাশাপাশি আমাদের অঞ্চলভিত্তিক ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

এছাড়া প্রথম দিন চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিখ্যাত গম্ভীরা ও কুষ্টিয়ার লালন শিল্পীদের নিয়ে বাউল গান আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে। দ্বিতীয় দিন বিখ্যাত লোক সংগীত শিল্পী কুদ্দুস বয়াতির উপস্থাপনা রয়েছে। তৃতীয় দিনে চট্টগ্রামের বিখ্যাত কাওয়ালি গানের আয়োজন রয়েছে। এছাড়া প্রতিদিন পুঁথি পাঠের আসর বসানো হবে। খাদ্য সংস্কৃতির পাশাপাশি আমাদের এসব ঐতিহ্যবাহী গান, পুঁথি পাঠকে প্রচারের জন্য টেস্ট অব বাংলাদেশ আয়োজন করা হয়েছে।

এ আয়োজনে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড পৃষ্ঠাপোষকতা করছেন আইএফআইসি ব্যাংক, হেলথ পার্টনার ইউনাইটেড হসপিটাল, আইসক্রিম পার্টনার পোলার আইসক্রিম, এনার্জি পার্টনার বেক্সিমকো এলপিজি, টেকনোলজি পার্টনার বন্ডস্টাইন, কালচারাল পার্টনার কালচারাল ক্লাসিসিস্টস এবং পরিকল্পনা ও পরিচালনায় স্পেলবাউন্ড লিও বার্নেট। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন, ওয়াসা, বাংলাদেশ পুলিশ গুলশান বিভাগ, ডেসকো, ফায়ার সার্ভিস এবং ট্যুরিস্ট পুলিশ এ উৎসব আয়োজন ও পরিচালনায় সহায়তা করেছে।

বাংলাদেশ সময়: ১০৩৯ ঘণ্টা, মে ০৪, ২০২৩
এমকে/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।