ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩০ আশ্বিন ১৪৩১, ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ১১ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

শুরু হলো মুজিব বাংলাদেশ ফুড ফেস্টিভ্যাল টেস্ট অফ বাংলাদেশ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৪১ ঘণ্টা, মে ৪, ২০২৩
শুরু হলো মুজিব বাংলাদেশ ফুড ফেস্টিভ্যাল টেস্ট অফ বাংলাদেশ

ঢাকা: বাংলাদেশের বৈচিত্র্যময় সব খাবার আর ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতি নিয়ে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় কর্তৃক মুজিব বাংলাদেশ ফুড ফেস্টিভ্যাল টেস্ট অফ বাংলাদেশ শুরু হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৪ মে) বিকেলে বনানীর মোস্তফা কামাল আতাতুর্ক পার্কে টেস্ট অফ বাংলাদেশের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।

 

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।

এ সময় তিনি বলেন, বাংলাদেশের পর্যটন অত্যন্ত সম্ভাবনাময়। বর্তমানে পর্যটন খাত বাংলাদেশের অর্থনীতিতে শতকরা তিন ভাগ অবদান রাখছে। আমরা মনে করি, এই খাতকে আরো অনেক বেশি উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার অপার সুযোগ এবং সম্ভাবনা আমাদের রয়েছে।

ড. শিরিন শারমিন চৌধুরী ব‌লেন, আমরা আশা করি আজকে যেমন ফুড ফেস্টিভ্যালের আয়োজন করা হয়েছে তেমনি আরও অনেক ভিন্নধর্মী উদ্যোগের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ আরো বেশি করে সকলের কাছে আকর্ষণীয় ও পরিচিত হয়ে উঠবে। বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র। একটি আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র সম্পূর্ণ নিরাপত্তার উপর নির্ভর করে। এর মধ্যে খাবার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।

তিনি বলেন, বাঙালি বিশ্বব্যাপী পরিচিত তার ভোজনরসিক গুণ ও আত্মীয়তার কারণে। আমরা চাই আমাদের রন্ধন ও খাদ্য শিল্প একটি বাণিজ্যিক শিল্পে পরিণত হোক। প্রতিবছর বাংলাদেশের অন্যান্য বিশ্ব থেকে যেসব পর্যটক আসেন তারা বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী খাবার পরখ করতে ভালোবাসেন। সেই পুরনো দিনের খাবারের যে ঐতিহ্য খুব ভালোভাবে তা উপভোগ করেন।

প্রধান অ‌তিথি বলেন, পর্যটন শিল্প বিশ্বের এক অন্যতম অর্থনৈতিক খাত। বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশের জন্য তরুণদের ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টির ক্ষেত্রে পর্যটন একটি কার্যকর উপায় হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। বিশ্বকাপে করোনার অতিমারীর কারণে বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের পর্যটন খাত কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে বর্তমানে পর্যটন খাত বাংলাদেশের অর্থনীতিতে শতকরা তিন ভাগ অবদান রাখছে। আমরা মনে করি যে এই অবস্থার ধরে রাখতে পারলে এই শিল্পকে আরো অনেক বেশি উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার অপার সুযোগ এবং সম্ভাবনা রয়েছে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী।  

তিনি তার বক্তব্যে বলেন, পর্যটকদের নিশ্ছিদ্র নিরপত্তা নিশ্চিতের জন্য প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে ট্যুরিস্ট পুলিশ। নিজস্ব অর্থায়নে বিশ্বের অন্যতম দীর্ঘ স্বপ্নের পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল এবং অত্যাধুনিক ও নান্দনিক হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ৩য় টার্মিনাল নির্মাণসহ সমগ্র দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়ন, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি, তথ্য প্রযুক্তির প্রসারের মাধ্যমে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণ ও আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অভূতপূর্ব উন্নয়নের মাধ্যমে দেশে পর্যটন শিল্পের বিকাশে সৃষ্টি হয়েছে উপযুক্ত পরিবেশ। দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির কারণে দেশের মানুষের জীবনমান উন্নত হওয়ায় ক্রমান্বয়ে দেশীয় পর্যটকের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০২০ সালে যেখানে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ পর্যটকের সংখ্যা ছিল ১ কোটি তা ২০২৩ সালে দাঁড়িয়েছে আড়াই কোটিরও বেশি।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সম্মানিত সচিব মো. মোকাম্মেল হোসেন। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তাহের মুহাম্মদ জাবের (অতিরিক্ত সচিব)।

উল্লেখ্য, ফুড ফেস্টিভ্যালটিতে সারা বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে সুস্বাদু আর বিখ্যাত খাবারের মেলা বসেছে। প্রায় ৪৩টি বিখ্যাত খাদ্য বিপণি স্টল নিয়ে এই মেলায় অংশগ্রহণ করেছে বিখ্যাত হাজি বিরিয়ানি, ঢাকাই বাকরখানি, কুমিল্লার রসমালাই বগুড়ার দই, সাতক্ষীরার প্যারা সন্দেশ, খুলনার চুইঝাল, বাগের হাটের চিংড়ি, বরিশালের সন্ধ্যা নদীর ইলিশ, কুষ্টিয়ার কুলফিসহ মুখরোচক সব খাবার।

৪ মে থেকে ৬ মে প্রতিদিন সকাল ১১টা থেকে শুরু করে রাত ১১টা পর্যন্ত চলবে এই মেলা। এছাড়া মেলার অন্যতম আকর্ষণ হিসেবে রয়েছে বিখ্যাত বাউল কুদ্দুস বয়াতির গান, নানা-নাতি, গম্ভীরা, কাওয়ালি, লালন সংগীতসহ নানা সাংস্কৃতিক আয়োজন।

বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের বিখ্যাত সব খাবারসমূহ এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে স্থান পাবে একই প্ল্যাটফর্মে। বর্তমান প্রজন্ম ও বিশ্বের কাছে বাঙালি খাদ্য ও সংস্কৃতির ব্যাপক প্রসার ঘটবে এই আয়োজনের মাধ্যমে। তাছাড়া বাঙালি খাদ্য ঐতিহ্য সংরক্ষণেও এই আয়োজন অন্যতম ভিত্তিভূমি হিসেবে কাজ করবে বলেই এই আয়োজন নিয়ে মন্তব্য সংশ্লিষ্টদের।

বাংলাদেশ সময়: ১১৩৭ ঘণ্টা, মে ০৪, ২০২৩
এইচএমএস/এএটি
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।