ঢাকা, শনিবার, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ভোলায় আরও ৫টি গ্যাস কূপ খনন করবে বাপেক্স, আনন্দে ভাসছে জেলাবাসী

ছোটন সাহা, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫১ ঘণ্টা, মে ৫, ২০২৩
ভোলায় আরও ৫টি গ্যাস কূপ খনন করবে বাপেক্স, আনন্দে ভাসছে জেলাবাসী

ভোলা: ভোলায় গ্যাস নিয়ে বিপুল সম্ভাবনা দেখছে বাপেক্স। খুব শিগগিরই জেলায় আরও ৫টি নতুন কূপ খননের পরিকল্পনা নিয়েছে সংস্থাটি।

এর মধ্যে শাহবাজপুর গ্যাস ক্ষেত্রে ২টি, ভোলা নর্থ ক্ষেত্রে ২টি এবং ইলিশায় একটি। তবে কবে নাগাদ এসব কূপ খনন করা হতে পারে, তা নিশ্চিত করে জানায়নি বাপেক্স।

সংস্থাটির ভূ-তাত্ত্বিক বিভাগের ব্যবস্থাপক মো. আলমগীর হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ভোলায় বিপুল পরিমাণ গ্যাসের সম্ভাবনা রয়েছে। এখন পর্যন্ত আলাদা ৩টি গ্যাস ক্ষেত্রের সন্ধান মিলেছে। কূপ খনন করা হয়েছে ৯টি। খুব শিগগিরই আরও ৫টি কূপ খননের পরিকল্পনা রয়েছে। সে লক্ষ্যে জরিপ কাজ চালমান।

এদিকে একের পর এক গ্যাস আবিষ্কৃত হওয়ায় আনন্দে ভাসছে ভোলার মানুষ।  

তবে এই গ্যাস ব্যবহারের নিশ্চয়তা চান সচেতন মহল। তারা বলছেন, এই গ্যাস কাজে লাগালে শিল্প-কারখানা হবে দ্বীপ-জেলায়। আর এতেই কর্মসংস্থান হবে বেকার যুবকদের। অন্যদিকে অর্থনৈতিকভাবে উন্নত হবে ভোলা।

সূত্র জানিয়েছে, তিন হাজার ৪০৩ বর্গ কিলোমিটারের জেলা ভোলা। ১৯৯৫-৯৬ সালের দিকে জেলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার শাহবাজপুরে প্রথম গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কারের পর নতুন করে সম্ভাবনার দুয়ার খোলে জেলাটির। এরপর ভূ-তাত্ত্বিক জরিপে একের পর গ্যাসের সন্ধান পায় বাপেক্স।

এ বিষয়ে বাপেক্সের এমডি মো. আলী বলেন, খুব শিগগিরই ভোলাসহ দক্ষিণাঞ্চলের ১২ জেলায় তেল-গ্যাস অনুসন্ধান করবে বাপেক্স। আমরা আশা করছি, ভোলাসহ দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোতে বিপুল পরিমাণ গ্যাসের মজুদ রয়েছে।

সবর্শেষ ইলিশা-১ কূপে পরীক্ষামূলক গ্যাস উত্তোলনের পর সেখানেও ১৮০ থেকে ২০০ বিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস মজুদের সম্ভাবনা দেখছে রাষ্ট্রীয় সংস্থাটি। এ নিয়ে জেলায় মোট গ্যাস মজুদের পরিমাণ দাড়াবে ১.৭ টিসিএফ ঘনফুট।

এই বিপুল পরিমাণ গ্যাসের সন্ধান মেলায় অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি বিপুল সংখ্যক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে বলে মনে করছেন ভোলাবাসী। সচেতন মহলের মতে, গ্যাসের সঠিক ব্যবহার হলেই এগিয়ে যাবে দেশের পিছিয়ে থাকা এই দ্বীপজেলা।

তাই তাদের দাবি, ভোলার সার্বিক উন্নয়নের স্বার্থেই শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা জরুরি।

এ বিষয়ে তরুণ উদ্যোক্তা আকতার হোসেন বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমাদের দাবি, ভোলার গ্যাসের ওপর নির্ভর করে যেন এখানে শিল্প-কারখানা করা হয়। তাহলে উদ্যোক্তা-বিনিয়োগকারীরা এগিয়ে আসবে। তখন নতুন করে সম্ভাবনা তৈরি হবে। ভোলার অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।

ভোলা জেলা স্বার্থরক্ষা কমিটির সদস্য সচিব অমিতাব অপু বলেন, ভোলায় একের পর এক গ্যাস ক্ষেত্র আবিস্কৃত হলেও জনগণ এর সুফল পাচ্ছে না। আমাদের দাবি, ভোলার গ্যাসকে কাজে লাগিয়ে শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হোক এবং গৃহস্থালি কাজে ব্যবহার করা হোক। ভোলা-বরিশাল ব্রীজ করা হোক।

গ্যাস বাঁচাও আন্দোলন কমিটির সদস্য অবিনাশ নন্দি বলেন, আমারা চাই ভোলার গ্যাস ভোলাতেই ব্যবহার করা হোক। জেলার চাহিদা মিটিয়ে অন্যস্থানে গেলে আমাদের আপত্তি নেই। তবে তার আগে অবশ্যই জেলায় আবাসিক ও বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহারের সুযোগ দিতে হবে।

ভোলা পৌর মেয়র মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বলেন, গৃহস্থালি কাজে গ্যাস সংযোগ দেওয়ার দাবিতে আগামী ১৩ মে ভোলা পৌর বাসিন্দাদের নিয়ে মানববন্ধন করা হবে। আমরা চাই। ভোলাবাসীকে গ্যাস ব্যবহারের সুযোগ করে দেওয়া হোক।

উল্লেখ্য, ভোলায় বর্তমানে ৫টি গ্যাস ক্ষেত্র থেকে প্রতিদিন ৮০ থেকে ৮৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা হচ্ছে। যা ব্যবহৃত হচ্ছে ৩টি বিদ্যুৎ কেন্দ্রে। বাকি ৪টি কূপ অব্যবহৃত রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২৮ ঘণ্টা, মে ৫, ২০২৩
এনএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।