বরিশাল: বরিশালের কীর্তনখোলা নদীতে তেলবাহী ট্যাংকারের ইঞ্জিনরুমে বিস্ফোরণের ঘটনায় মো. কাশেম (৫২) নামে নিখোঁজ স্টাফের (গ্রিজার) মরদেহ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস।
শুক্রবার (১২ মে) বিকেল ৫টার দিকে ওই তেলবাহী ট্যাংকার সংলগ্ন নদী থেকে ভাসমান অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
নিহত মো. কাশেম চট্টগ্রাম জেলার বাসিন্দা বলে জানিয়েছেন বরিশাল ফায়ার স্টেশনের স্টেশন অফিসার এনামুল হক সুমন।
তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার (১১ মে) বিকেল পৌনে ৫টার দিকে কীর্তনখোলা নদীতে নোঙর করে রাখা এমটি ইবাদি-১ তেলবাহী ট্যাংকারের ইঞ্জিনরুমের কমপ্রেসার মেশিনে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরপরই উদ্ধার কাজ চালিয়ে তিনজনকে আহত অবস্থায় এবং দুইজনের খতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
এনামুল হক সুমন আরও বলেন, এছাড়াও নৌযানটির একজন স্টাফ নিখোঁজ ছিলেন। তার সন্ধানে দুর্ঘটনার দিন (১১ মে) রাত ৮টা পর্যন্ত আমরা তল্লাশি অভিযান চালাই। এরপর শুক্রবার (১২ মে) সকাল থেকে পুনঃরায় তল্লাশি অভিযান চালানো হয়। পরে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে একটি মরদেহ নৌযানটির পেছনের দিকে পানিতে ভাসতে দেখি। তাৎক্ষণিক মরদেহটি উদ্ধার করা হলে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, সেটি নিখোঁজ স্টাফ কাশেমের।
উদ্ধার হওয়া মরদেহ সম্পর্কে স্টেশন অফিসার বলেন, মরদেহের শরীরের বিভিন্ন স্থানে ক্ষতের চিহ্ন রয়েছে এবং একটি হাত পাওয়া যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে, বিস্ফোরণে আহত হয়ে তিনি নদীতে পড়ে যান।
এদিকে শুক্রবার (১২ মে) সন্ধ্যা ৬টায় উদ্ধার অভিযানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়েছে জানিয়ে স্টেশন অফিসার এনামুল হক সুমন বলেন, মরদেহটি নৌ পুলিশকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। আর জাহাজটি কীর্তনখোলা নদীর কর্ণকাঠি প্রান্তে রয়েছে।
দুর্ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তেলবাহী ট্যাংকারের ডেক টেন্ডর সুমন সেন বলেন, ট্যাংকার চট্টগ্রাম থেকে সাড়ে তিন লাখ লিটার পেট্রোল ও ১০ লাখ লিটার ডিজেল নিয়ে দুইদিন আগে বরিশালে আসে। বরিশালের মেঘনা তেলের ডিপোতে এগুলো বৃহস্পতিবার খালাস করার কথা ছিল। সেই অনুযায়ী ট্যাংকারের স্টাফরা ইঞ্জিনরুমে যান। এর কিছুক্ষণ পর বিকট শব্দে সেখানে বিস্ফোরণ ঘটে।
এসময় তেলবাহী ট্যাংকারে ১৬ জন স্টাফ ছিলেন জানিয়ে সুমন বলেন, গুরুতর আহত অবস্থায় ট্যাংকারের চিফ ড্রাইভার কুতুবউদ্দিন, সেকেন্ড ড্রাইভার রুবেল ও কামালকে উদ্ধার করে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এছাড়া ঘটনাস্থলেই চট্টগ্রামের বাসিন্দা স্বাধীন (২২) ও বাবুল কান্তি দাস (৬৪) নামে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহত স্বাধীন ট্যাংকারের চিফ ড্রাইভার কুতুবউদ্দিনের ছেলে। তিনি এখানে বেড়াতে এসেছিলেন।
এছাড়া ট্যাংকারের গ্রিজার কাশেমের সন্ধান আজ (১২ মে) পাওয়া গেছে।
বরিশাল ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের সহকারী পরিচালক বেলাল উদ্দিন বলেন, জেলা প্রশাসনের সমন্বয়ে গঠিত তদন্ত কমিটি আগুনের উৎস সন্ধানে কাজ শুরু করেছে। আমরাও চেষ্টা করছি, কী কারণে আগুন লেগেছে তা শনাক্ত করতে।
আরও পড়ুন: ট্যাংকারের ইঞ্জিন রুমে বিস্ফোরণ, দুইজনের মরদেহ উদ্ধার
বাংলাদেশ সময়: ০৯৪২ ঘণ্টা, মে ১৩, ২০২৩
এমএস/এনএস