ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

কারখানায় চীনা প্রকৌশলী নিহত, ৫ কোটি টাকা দাবিতে পরিবারের অবস্থান

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২৫ ঘণ্টা, মে ১৪, ২০২৩
কারখানায় চীনা প্রকৌশলী নিহত, ৫ কোটি টাকা দাবিতে পরিবারের অবস্থান

নরসিংদী: নরসিংদীতে চীনা মালিকানাধীন ফুজিয়ান টেক্সটাইল নামে একটি কারখানার মেশিনে কাটা পড়ে লি রংহুয়া (৫৭) নামে এক চীনা প্রকৌশলী নিহত হয়েছেন।  

গত ৩ মে নরসিংদী সদর উপজেলার শীলমান্দী এলাকার ফুজিয়ান টেক্সটাইল এ দুর্ঘটনা ঘটে।

 

গত বৃহস্পতিবার (১১ মে) থেকে ক্ষতিপূরণের দাবিতে কারখানার সামনে টানা অবস্থান নিয়েছেন চীন থেকে আসা নিহত প্রকৌশলীর স্ত্রী সন্তানসহ তিনজন।

পুলিশ ও নিহত প্রকৌশলীর পরিবার ও কারখানা কর্তৃপক্ষ জানায়, ওই কারখানায় কমর্রত ছিলেন চীনের জিয়াংসু প্রদেশের ফেংচেং টাউনের নাগরিক প্রকৌশলী লি রংহুয়া। গত ৩ মে কমর্রত অবস্থায় কারখানার চলন্ত মেশিনে কাজ করার সময় কাটা পড়ে হয়ে নিহত হন তিনি। সিসিটিভি ফুটেজে এ দৃশ্য ধারণ হয়। দুর্ঘটনার পর ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ফ্রিজিং করে সংরক্ষণ করা হয়েছে চীনা প্রকৌশলীর মরদেহ।

টানা চারদিনের মতো ক্ষতিপূরণের দাবিতে ফুজিয়ান টেক্সটাইলের সামনের ফটকে নির্বাক বসে আছেন নিহত প্রকৌশলীর স্ত্রী-সন্তান। প্রকৌশলীর মৃত্যুর খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার থেকে কারখানার প্রধান ফটকে অবস্থান নিয়েছেন চীন থেকে আসা তার স্ত্রী ঝেং মেইলিং, ছেলে লি রংইয়ান ও অপর এক স্বজন। এ মৃত্যুর জন্য তারা কারখানা কর্তৃপক্ষের কাছে ৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করছেন।  

নিহতের পুত্র লি রংইয়ান বলেন, আমার বাবার মৃত্যুতে আমরা খুবই মর্মাহত। বাবার মৃত্যু আমাদের পরিবারকে খুব ভোগাবে। তাই আমরা ক্ষতিপূরণ চাচ্ছি কিন্তু কারখানা কর্তৃপক্ষ তা দিচ্ছে না। আমরা চাই দ্রুত আমাদের সমস্যার সমাধান হোক। আমরা নিজ দেশে ফিরে যেতে চাই।

ফুজিয়ান টেক্সটাইলের প্রশাসনিক কর্মকর্তা নওশাদ আলম বলেন, চীনা আইন অনুযায়ী এমন দুর্ঘটনায় ৮০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণের বিধান থাকলেও তারা ১ কোটি ৪০ লাখ টাকা দিতে সম্মতি হলেও প্রকৌশলীর পরিবারের সদস্যরা তা মানছেন না। তারা মরদেহ গ্রহণ করতে রাজি না হলেও শুধুমাত্র ৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণের দাবিতে অনড় রয়েছেন। কিন্তু আমাদের কারখানার যেই অবস্থা আমাদের পক্ষে এত টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া সম্ভব না।

নরসিংদী মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত ) হারুন অর রশিদ বলেন, কারখানার ভেতরে কমর্রত অবস্থায় দুর্ঘটনায় কাটা পড়ে ওই প্রকৌশলী নিহত হন। এখন তার স্বজনরা চীন থেকে এসে কারখানার ফটকে অবস্থান নিয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে অস্বাভাবিক ক্ষতিপুরণ দাবি করছেন, বিষয়টি কারখানা কর্তৃপক্ষকেই সমাধান করতে হবে। এ ঘটনায় নরসিংদী মডেল থানায় গত ৫ মে একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।

নরসিংদী শিল্প পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরুল হুদা বলেন, বিষয়টি সমাধান করার আমরা অনেক চেষ্টা করেছি। মালিক পক্ষকে সঙ্গে নিয়ে তাদের সঙ্গে দোভাষীর মাধ্যমে কথা বলা চেষ্টা করেছি। কিন্তু তারা কোনো কথা বলতেই চায় না। তাদের অবস্থান থেকে তারা সড়ে না। মালিক পক্ষ চীন অ্যাম্বাসির সঙ্গে কথা বলে পদক্ষেপ নেওয়ার চেষ্টা করছে। আর তাদের যাতে কোনো নিরাপত্তার সমস্যা না হয়, সেজন্য কারখানার সামনে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮২৫ ঘণ্টা, মে ১৪, ২০২৩
জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।