ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

‘গুম বন্ধ করো, গুমের শিকার ব্যক্তিদের ফিরিয়ে দাও’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২২ ঘণ্টা, মে ২৬, ২০২৩
‘গুম বন্ধ করো, গুমের শিকার ব্যক্তিদের ফিরিয়ে দাও’ ছবি- সংগৃহীত

ফেনী: গুমের শিকার ব্যক্তিদের ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ সপ্তাহ উপলক্ষে ফেনীতে মানববন্ধন করেছে মানবাধিকার কর্মী ও গুমের স্বীকার হওয়া ব্যক্তিদের স্বজনরা।

শুক্রবার (২৬ মে) সকালে শহরের শহীদ শহিদুল্লা কায়সার সড়কে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন গুমের শিকার হওয়া যুবদল নেতা মাহবুবুর রহমান রিপনের মা রৌশন আরা বেগম।

গুম হওয়া ব্যক্তিদের স্বজনদের সংগঠন ‘মায়ের ডাক’ ও ‘হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডার্স নেটওয়ার্ক ফেনী’র যৌথ আয়োজনে ফেনী প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি, সাপ্তাহিক ফেনীর খবরের সম্পাদক ও চ্যানেল আইয়ের ফেনী প্রতিনিধি রবিউল হক রবির সভাপতিত্বে এবং মায়ের ডাক ও হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডারস নেটওয়ার্কের কো-অর্ডিনেটর, অধিকার ফেনীর ফোকাল পার্সন ও দৈনিক মানবজমিনের জেলা প্রতিনিধি নাজমুল হক শামীমের সঞ্চালনায় এ মানববন্ধনে অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন ফেনী প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি, দৈনিক সংগ্রামের জেলা প্রতিনিধি একেএম আবদুর রহিম, ফেনী প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি, ডিবিসি নিউজ ও ডেইলি অবজারভারের ফেনী প্রতিনিধি মুহাম্মদ আবু তাহের ভূঁইয়া, সু-শাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) ফেনী জেলা সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক ফেনীর সময়ের সম্পাদক মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন।

এতে আরও বক্তব্য রাখেন ফেনী রিপোর্টাস ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক আলী হায়দার মানিক, ফেনী বিকন কলেজের প্রভাষক ও দীপ্ত টিভির জেলা প্রতিনিধি আবদুল্লাহ আল মামুন, অধিকারের ডিফেন্ডার তন্বী সোম, আলাপন আবৃত্তি চর্চা কেন্দ্র ফেনীর যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম ফরায়েজী।

মানববন্ধন ও সমাবেশে বাংলাদেশ ফটোজার্নালিষ্ট অ্যাসোসিয়েশন ফেনী শাখার সাবেক সভাপতি মোস্তফা কামাল বুলবুল, ইয়ুথ জার্নালিস্টস ফোরাম বাংলাদেশের ফেনী জেলা সভাপতি ও দৈনিক অজেয় বাংলার নির্বাহী সম্পাদক শাহজালাল ভূইয়া, সাংবাদিক ইউনিয়ন ফেনীর দপ্তর সম্পাদক এমডি মোশাররফ হোসেন, ফেনী লিও ক্লাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট ইউসুফ আহমেদ নিশাদ, ফেনী গেরিলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের প্রচার সম্পাদক মোহাম্মদ আলী নসু, গুমের শিকার হওয়া যুবদল নেতা মাবুবুর রহমান রিপনের বড় ভাই মাহফুজুর রহমান, রিপনের চাচা ওহিদুর রহমান, সাংস্কৃতিক সংগঠক ও মানবাধিকার কর্মী কাজী ইকবাল আহমেদ পরানসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন।

গুম সপ্তাহের মূল প্রবন্ধে জানানো হয়, মে মাসের শেষ সপ্তাহকে আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ সপ্তাহ পালন করা হয়। ১৯৮১ সালে ফেডারেশন অব অ্যাসোসিয়েশন ফর রিলেটিভস অব দ্য ডিটেইন্ড ডিসঅ্যাপিয়ার্ড নামের দক্ষিণ আমেরিকার একটি সংগঠন প্রথম এটি পালন করা শুরু করে। এরপর থেকে গুম হয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের স্মরণে বিভিন্ন সংগঠন বিভিন্ন দেশে সপ্তাহটি পালন করে আসছে।

অধিকার জানায়, ২০০৬ সালের ২০ ডিসেম্বর গুম হওয়া থেকে জনগণের সুরক্ষার জন্য আন্তর্জাতিক সনদ জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে গৃহীত হয়। গুম হওয়া থেকে সমস্ত ব্যক্তির সুরক্ষার জন্য আন্তর্জাতিক কনভেনশন-এমন একটি চুক্তি, যা অনুস্বাক্ষর করার ক্ষেত্রে প্রতিটি রাষ্ট্রের আইনগত বাধ্যবাধকতা রয়েছে।  

অধিকার আরও জানায়, ২০০৯ সাল থেকে দেশে গুমের ঘটনা আশংকাজনক হারে বেড়েছে। রাষ্ট্রীয় বাহিনীর দ্বারা গুম ও বিচারবহির্ভূতভাবে মানুষ খুন হলো রাষ্ট্রীয় নিপীড়নের চরম বহিঃপ্রকাশ। দেশে কর্তৃত্ববাদী শাসন বহাল থাকায় মানবাধিকার চরমভাবে হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে। জনগণের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা এবং সব ধরনের অন্যায়-অবিচারের প্রতিকার করতে ভিকটিম পরিবারকে সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশের জনগণকে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই।

মানববন্ধনে বক্তারা গুমের শিকার ব্যক্তিদের তাদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়ে বলেন, ফেনীর যুবদল নেতা মাহবুবুর রহমান রিপনকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে তুলে নেওয়ার ৯ বছরেও পরিবার তার হদিস পায়নি।

রিপনের মতো আর কোনো ব্যক্তি যেন গুমের শিকার না হন, সেজন্য রাষ্ট্রকে জোরালো ভূমিকা রাখার দাবি জানান তারা।  

বাংলাদেশ সময়: ১৮০৫ ঘণ্টা, মে ২৬, ২০২৩
এসএইচডি/এনএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।