ঢাকা, মঙ্গলবার, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

রাকিবুল এখনো চোখে আবছা দেখেন

মিরাজ মাহবুব ইফতি, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১৫ ঘণ্টা, জুন ১২, ২০২৩
রাকিবুল এখনো চোখে আবছা দেখেন

ঢাকা: নাটোরের বাড়াতিপাড়া থেকে ট্রেনে চড়ে ঢাকায় চাকরির পরীক্ষা দিতে আসছিলেন মো. রাকিবুল ইসলাম (২৭)। ট্রেনটি বিমানবন্দর স্টেশনে ঢোকার সময় কে বা কারা সেটি লক্ষ্য করে ঢিল ছোঁড়ে।

সেটি আঘাত করে রাকিবুলের চোখে। কমলাপুর স্টেশন হাসপাতালের পর জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়ে পরীক্ষা না দিয়েই ফিরে যান ভুক্তভোগী। তার কেটে গেছে দীর্ঘ সময়। সেই রাকিবুল এখনও চোখে আবছা দেখেন। ছোট বস্তু তার নজরেই আসে না।

সোমবার (১২ জুন) সন্ধ্যায় বাংলানিউজকে এসব কথা জানান ভুক্তভোগী নিজে। রাকিবুল বলেন, আমি ডান চোখে পরিষ্কার কিছু দেখতে পাই না। ছোট কিছু আমার নজরে আসে না। আবছা লাগে সবকিছু।

তিনি বলেন, ঢাকায় চাকরির পরীক্ষা দিতে এসেছিলাম। কে জানতো আমার সঙ্গেই এমন হবে? গত ১৭ মে ঢাকায় পৌঁছাই ১৮ মে পরীক্ষা দিতে। সেটি আর দেওয়া হয়নি। জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে গত ২৭ মে বাড়ি ফিরে যাই।

হাসপাতাল থেকে তাকে কী বলা হয়েছে জানতে চাইলে রাকিবুল বলেন, গতকাল রোববার (১১ জুন) ঢাকা এসেছি। পরে জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের চিকিৎসকদের পরামর্শ নিই। তারা জানিয়েছেন, আমার চোখে যে আঘাত লেগেছে সেটা বেশ বড়। এই ধরনের আঘাতে সাধারণত কেউ চোখে দেখতে পায় না। ধীরে ধীরে আমার চোখের অবস্থা পরিবর্তন হচ্ছে। তবে ছোট অক্ষরে লেখা বা ছোট কিছু দেখতে পাই না। আবার ১ মাস পরে ডাক্তাররা চোখ দেখাতে ঢাকা আসতে বলেছেন।

চাকরির পরীক্ষা দিতে না পারলেও বর্তমানে বাগাতিপাড়ার একটি প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষকতা করছেন মো. রাকিবুল ইসলাম। সেখানে ছোট ছোট শিশুদের বিভিন্ন বিষয়ে দীক্ষা দেন। বাচ্চাদের পড়াতে গেলে অবশ্য তার অসুবিধা হয়; বিশেষ করে বইয়ের অক্ষর দেখতে।

রেল কর্তৃপক্ষের প্রতি কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করেন রাকিবুল। তিনি বলেন, আমি যখন আহত হই তখন রেলের স্যারেরা আমাকে অনেক সাহায্য করেছেন। তারা না হলে হয়তো মেডিকেল বোর্ড বসিয়ে ভালো চিকিৎসা হতো না। আমি তাদের কাছে কৃতজ্ঞ।

গত ১৭ মে রাকিবুলের সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনা নিয়ে একটি সাধারণ ডায়রি করা হয়েছিল। সেটির পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত এখন চলছে। ঢাকা রেলওয়ে থানা (কমলাপুর) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)‌ ফেরদাউস আহ‌মেদ বিশ্বাস এ কথা বলেছেন বাংলানিউজকে।

সেদিন কী ঘটেছিল পড়ুন এই লিঙ্কে: ট্রেনে ঢিল, চাকরির পরীক্ষা দিতে এসে চোখ হারাতে বসেছেন রাকিবুল!

বাংলাদেশ সময়: ২১১৫ ঘণ্টা, জুন ১২, ২০২৩
এমএমআই/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।