ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

সাড়ে ৩১ বছর পর মুক্তি পেলেন ‘জল্লাদ’ শাহজাহান

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৫৩ ঘণ্টা, জুন ১৮, ২০২৩
সাড়ে ৩১ বছর পর মুক্তি পেলেন ‘জল্লাদ’ শাহজাহান

ঢাকা: বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ছয় আসামিসহ মোট ২৬ জনের ফাঁসির দড়ি টানা আলোচিত সেই ‘জল্লাদ’ শাহজাহান মুক্তি পেয়েছেন।

দীর্ঘ ৩১ বছর ছয় মাস দুই দিন কারাভোগের পর রোববার (১৮ জুন) দুপুর পৌনে ১২টার দিকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান তিনি।

‘জল্লাদ’ শাহজাহানের পুরো নাম শাহজাহান ভূঁইয়া। তিনি নরসিংদী জেলার পলাশ থানার ইছাখালী গ্রামের মৃত হাছেন আলীর ছেলে।

৭৩ বছর বয়সী শাহজাহান ব্যক্তিগত জীবনে অবিবাহিত ছিলেন। কারাগারে তার কয়েদি নম্বর ছিল ২৫৮৯/এ। মুক্তির আগ পর্যন্ত তিনি ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের প্রধান জল্লাদ ছিলেন।

কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, শাহজাহান ১৯৯১ সালের ১৭ ডিসেম্বর প্রথম গ্রেপ্তার হয়ে মানিকগঞ্জ জেলা কারাগারে আসেন। দুটি মামলায় তার ৪২ বছরের সাজা হয়েছিল। পাশাপাশি সেসব মামলায় জরিমানা হয়েছিল পাঁচ হাজার করে ১০ হাজার টাকা।

কিন্তু কারাগারের মধ্যে ভালো কাজ এবং মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের ফাঁসির রায় কার্যকর করতে জল্লাদের দায়িত্ব পালনের জন্য তার সাজার মেয়াদ ১০ বছর মওকুফ (রেয়াত) করা হয়। পাশাপাশি শাহজাহানের পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভালো না হওয়ায় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কারা কর্তৃপক্ষ তার জরিমানার ১০ হাজার টাকা পরিশোধ করে দেয়।

ফলে দীর্ঘ ৩১ বছর ছয় মাস দুই দিন কারাগারের চার দেয়ালের মধ্যে বন্দি জীবন কাটানোর পর আজ তিনি মুক্ত হলেন।

কারাগারের তথ্য অনুযায়ী, ‘জল্লাদ’ শাহজাহান ২০০১ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ২৬ জনের ফাঁসির দড়ি টেনেছেন। যার মধ্যে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ছিলেন ছয়জন, যুদ্ধাপরাধী ছিলেন চারজন, জেএমবি ছিলেন দুইজন ও অন্যান্য আলোচিত মামলার আসামি ছিলেন ১৪ জন।

এর আগে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মাহবুবুল ইসলাম বলেন, জল্লাদ শাহজাহান পূর্ণ সাজা ভোগ শেষে রেয়াত নিয়োগে অর্থাৎ, কারাগারের যে রেমিশন আছে সেই প্রক্রিয়া শেষে আজকে বের হবেন।

শাহজাহানের দুই মামলার তথ্য

স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল ১৮/১৯৯২, মানিকগঞ্জ ০৩(১২)৯১, ধারা- অস্ত্র আইন ১৯(এ)। এই মামলায় শাহজাহানের ১২ বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা হয়েছিল। জরিমানার অর্থ অনাদায়ে আরও ছয় মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ডের রায় হয়েছিল সেই মামলায়। যা কার্যকর শুরু হয় ১৯৯১ সালের ১৭ ডিসেম্বর থেকে।

অপর মামলাটি হলো- দায়রা ৪০/৯২, মানিকগঞ্জ ২(১২)৯১, ধারা-৩৯৬দ:বি। এই মামলায় তার সশ্রম অর্থাৎ ৩০ বছরের সাজা হয়। পাশাপাশি পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও ছয় মাস কারাদণ্ডের রায় হয়।

দুই মামলায় তার সাজা মওকুফ (রেয়াত) হয় ১০ বছর পাঁচ মাস ২৮ দিন।

বাংলাদেশ সময়: ১১৫৩ ঘণ্টা, জুন ১৮, ২০২৩
এসসি/এমএইচএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।