ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

দুর্গাপুরে বন্য হাতির তাণ্ডবে তছনছ বাড়িঘর

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১১ ঘণ্টা, জুন ২৩, ২০২৩
দুর্গাপুরে বন্য হাতির তাণ্ডবে তছনছ বাড়িঘর সংগৃহতি ছবি

নেত্রকোনা: নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী গ্রামে দীর্ঘদিন ধরেই তাণ্ডব চালাচ্ছে ভারতীয় বন্য হাতির দল। কৃষকদের ফসল, বীজ তলা নষ্ট করা ও ঘরে মজুদ করে রাখা ধান খাওয়াসহ সাধারণ মানুষের বাড়ি-ঘরে আক্রমণ চালাচ্ছে।

এ অবস্থায় অতিষ্ঠ হয়ে চরম আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটচ্ছে সীমান্তবর্তী গ্রামের মানুষের।

শুক্রবার (২৩ জুন) সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হাতির তাণ্ডবের চিহ্ন। ঘরের ইটের দেয়াল, মাটির দেয়াল ও টিনের বেড়া আর ঘরের আসবাবপত্র ভেঙে তছনছ করেছে হাতি।

উপজেলা বন বিভাগের তথ্যমতে, গত ৩ দিনে ভারতীয় বন্যহাতির দল সীমান্তের গ্রামে হানা দিয়ে প্রায় ১৭টির মতো ঘর-বাড়ি তছনছ করে দিয়েছে। গত ২ মাসে প্রায় ২০টি ঘরবাড়ির ও কৃষকের ফসলের ব্যাপক ক্ষতি করেছে। ওই সময় হাতি তাড়াতে গিয়ে সাহেব আলী (৪৫) এক কৃষক আহত হয়েছে। এর ৫ মাস আগেও প্রায় ৩০টি ঘর-বাড়ি ও কাঁচা পাকা ধানসহ মৌসুমি ফসল নষ্ট করেছে বন্য হাতি।  

এ সময় ফসল বাঁচাতে হাতি তাড়াতে গিয়ে উল্টো হাতির আক্রমণে বুনেশ চিসিম (৬৫) এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে ও আহত হয়েছিল আরও তিন জন।  

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দুর্গাপুর উপজেলার কুল্লাগড়া ইউনিয়নের আড়াপাড়া, বিজয়পুর, ভাংতিরপার, ছনগড়া ও সদর ইউনিয়নের ফারংপাড়া, ভবানীপুর, দাহাপাড়া, বাদাম বাড়িসহ কয়েকটি গ্রামে কয়েক বছর ধরেই তাণ্ডব চালাচ্ছে ভারতীয় বন্য হাতির দল। সীমান্তে গ্রামগুলোতে বেড়েই চলেছে হাতির তাণ্ডব। সীমান্তজুড়ে এখন আতঙ্ক বিরাজ করছে। বাংলাদেশে হাতি প্রবেশ বন্ধে স্থায়ী ব্যবস্থা নেওয়া এবং ক্ষতিগ্রস্তদের সরকারি সহায়তার দাবি করছে স্থানীয়রা। তারা বলছেন, হাতির এ তাণ্ডব থামানো না গেলে এই এলাকায় থাকাই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

স্থানীয় জাহেদা বেগম বলেন, হাতির চিৎকার শুনেই আমরা ঘরবাড়ি ছেড়ে দৌড়ে পালিয়েছি। এলাকার অনেকের ঘর ভেঙে ফেলেছে। হাতির ভয়ে রাতে ঘুমাতেও পারছি না।

কৃষক নূরে আলম বলেন, হাতির দল আগুন দেখেও ভয় পায় না। হইহল্লা করেও কাজ হয় না। আমরা এখন নিরুপায়।

সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাদেকুল ইসলাম বলেন, হাতিগুলো বাংলাদেশ সীমান্তের মধ্যেই ঘোরাফেরা করছে। দিনের বেলার বেশি সময় পাহাড়ের উঁচু-নিচু টিলায় থাকলেও রাত হলেই চলে আসছে লোকালয়ে। আজ এই বাড়ি তো কাল ওই বাড়িতে হানা দিচ্ছে হাতি। এতে স্থানীয়রা চরম আতঙ্কে আছেন।

দুর্গাপুর রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. দেওয়ান আলী বলেন, ক্ষুধার্ত হাতির পাল খাবারের সন্ধানে লোকালয়ে নেমে আসে। মাইকিং করে গ্রামের মানুষকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। তবে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের বন বিভাগের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হয়। বন বিভাগের আইন অনুযায়ী ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের সহযোগিতা করা হবে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ রাজীব-উল-আহসান বাংলানিউজকে বলেন, বেশ কিছুদিন বন্ধ থাকার পর ওই এলাকায় নতুন করে শুরু হয়েছে বন্য হাতির তাণ্ডব। ইতোমধ্যে ক্ষতিগ্রস্থ্যদের ৪ হাজার টাকা করে সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৫১০ ঘণ্টা, জুন ২৩, ২০২৩
এসএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।