ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

কপোতাক্ষের নাব্যতা রক্ষায় পাখিমারা বিলে পুনরায় টিআরএম চালুর দাবি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১৬ ঘণ্টা, জুন ২৫, ২০২৩
কপোতাক্ষের নাব্যতা রক্ষায় পাখিমারা বিলে পুনরায় টিআরএম চালুর দাবি

খুলনা: কপোতাক্ষ অববাহিকার নাব্যতা রক্ষার্থে সাতক্ষীরার তালা উপজেলার পাখিমারা বিলে পুনরায় টাইডাল রিভার ম্যানেজমেন্ট (টিআরএম) চালু করার দাবি জানিয়েছেন শিবসা-কপোতাক্ষ অববাহিকার জনপ্রতিনিধি ও পানি কমিটির নেতারা।

রোববার (২৫ জুন) দুপুরে তালার উত্তরণ কার্যালয়ে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা উত্তরণ ও পানি কমিটি আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয় যশোর, খুলনা ও সাতক্ষীরা জেলার মধ্যদিয়ে প্রবাহিত কপোতাক্ষ অববাহিকা অঞ্চল ১৯৯০ এর দশক থেকে জলাবদ্ধ কবলিত। প্রত্যক্ষভাবে এসব এলাকার ১৫ লাখ এবং পরোক্ষভাবে ৪০-৪৫ লাখ অধিবাসী প্রতিবছর জলাবদ্ধতা দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ অবস্থায় সম্প্রতি জাতীয় সংসদের বাজেট অধিবেশনে সংশ্লিষ্ট এলাকার কয়েকজন এমপি টিআরএম চালুর জন্য সংসদে দাবি জানিয়েছেন।

তারা বলেন, কপোতাক্ষ বাংলাদেশের বহুল পরিচিত একটি নদ, এ নদের নিষ্কাশন এলাকা সুদূর চুয়াডাঙ্গার দর্শনা থেকে শুরু করে খুলনা ও সাতক্ষীরা জেলার সুন্দরবন পর্যন্ত বিস্তৃত। নদটির দৈর্ঘ্য ৩৭০ কিলোমিটার, নিষ্কাশন এলাকার পরিমাণ ১ লাখ ৬০ হাজার হেক্টর এবং বসবাসরত অধিবাসীর সংখ্যা প্রায় ২০ লাখ। নব্বইয়ের দশক থেকে কপোতাক্ষ অববাহিকা জলাবদ্ধতার শিকার। এ অঞ্চলের জনগণের জোরালো দাবির প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মাধ্যমে ‘কপোতাক্ষ নদের জলাবদ্ধতা দূরীকরণ প্রকল্প’ নামে প্রায় ২৬২ কোটি টাকা বরাদ্দের ৪ বছর মেয়াদি একটি প্রকল্প নেওয়া হয়। প্রকল্পটি শুরু হয় ২০১১-১২ অর্থবছরে। প্রকল্পটির মূল লক্ষ্য ছিল তালা উপজেলার পাখিমারা বিলে টিআরএম বাস্তবায়ন। ২০১৫ সালের জুলাই মাস থেকে  শুরু করে ২০২১ সালের এপ্রিল মাস পর্যন্ত ৬ বছর পাখিমারা বিলে টিআরএম বাস্তবায়ন করা হয়। যার ফলে কপোতাক্ষ অববাহিকা জলাবদ্ধমুক্ত হয়েছে, নদী ফিরে পেয়েছে নাব্যতা, বিল উঁচু হয়েছে, এলাকার পরিবেশ ও প্রতিবেশের ব্যাপক উন্নয়ন ঘটেছে। কিন্তু ২০২১ সালের এপ্রিল মাসে বিধ্বস্ত হয়ে যাওয়া পেরিফেরিয়াল বাঁধ সংস্কারের নামে বিলে টিআরএম কার্যক্রম সাময়িক বন্ধ করে দেওয়া হয়।   সেই থেকে গত ২ বছর যাবৎ বিলে টিআরএম কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। ফলে নদীতে পলি জমে এলাকায় আবারও জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ার উপক্রম হয়েছে এবং টিআরএম বিলের সংযোগ খালটি ভরাট হয়ে যাওয়ার ফলে এলাকার নিষ্কাশন ব্যবস্থায় সংকট তৈরি হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উল্লেখ করা হয় কপোতাক্ষ নদের জলাবদ্ধতা দূরীকরণ প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ের ৫৩১ কোটি ৭ লাখ টাকা বরাদ্দের অনুকূলে প্রকল্পের কার্যক্রম শুরু হয় ২০২০ সালের জুন মাস থেকে। ৪ বছর মেয়াদি এ প্রকল্পটি শেষ হবে ২০২৪ সালের জুন মাসে। প্রকল্পে পাখিমারা বিলে টিআরএম কার্যক্রম অব্যাহত রাখার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু ইতোমধ্যে প্রকল্পের মেয়াদ ৩ বছর পার হলেও এখনো টিআরএম কার্যক্রম চালু করা হয়নি। পাশাপাশি ক্ষতিপূরণের অর্থও বিতরণ করা হয়নি। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের অভিমত ক্ষতিপূরণের বকেয়া পরিশোধ ও বাঁধ সংস্কার অতিব জরুরি হলেও এ দুটো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় প্রকল্পের বরাদ্দের মধ্যে নেই। এ কারণে টিআরএম চালু করার ক্ষেত্রে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। এ জটিলতা দ্রুত নিরসন না হলে প্রথম পর্যায়ের প্রকল্পের অর্জন ও সফলতা কোনভাবেই ধরে রাখা সম্ভব নয়। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও কর্তৃপক্ষের আশুহস্তক্ষেপ কামনা করেছেন শিবসা-কপোতাক্ষ অববাহিকার ভুক্তভোগীরা।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন উত্তরণ পরিচালক শহিদুল ইসলাম, তালা উপজেলা পানি কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ময়নুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান, হাশেম আলী ফকির ও দীলিপ কুমার।

বাংলাদেশ সময়: ১৭১৬ ঘণ্টা, জুন ২৫, ২০২৩
এমআরএম/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।