শরীয়তপুর: শরীয়তপুর সদর উপজেলার একটি বিপণি বিতানে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। টের পেয়ে ডাকাতিতে বাধা দেওয়ায় পাশে থাকা মার্কেন্টাইল ব্যাংকের এটিএম বুথের নিরাপত্তা কর্মী আব্দুর রউফকে লোহা ও রড় দিয়ে পিটিয়ে হাত-পা বেঁধে অচেতন করে ফেলে রাখে ডাকাত দলের সদস্যরা।
শুক্রবার (৩০ জুন) ভোর পৌনে ৪টার দিকে উপজেলার রূপনগর এলাকার ইতালি প্লাজার বিজলী কেবলসের বিক্রয় কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। এসময় ডাকাত চক্রের সদস্যরা অন্তত ৫০ লাখ টাকার মালামাল নিয়ে গেছে বলে দাববি করছে বিজলী ক্যাবলস কর্তৃপক্ষ।
পুলিশ ও নিরাপত্তা কর্মী সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার ভোর ৪টা ৪১ মিনিটে ২টি পিকআপভ্যান নিয়ে শরীয়তপুর শহরের ইতালি প্লাজার প্রধান ফটকে অবস্থান নেয় ডাকাত দলের সদস্যরা। ভবনের ভেতরে থাকা বিজলী ক্যাবলসের তালা ভেঙে মালামাল তুলে নেওয়ার সময় টের পেয়ে পরিচয় জানতে চায় পাশে থাকা মার্কেন্টাইল ব্যাংকের নিরাপত্তা কর্মী আব্দুর রউফ। এসময় পেছন থেকে ডাকাত চক্রের এক সদস্য লোহার রড দিয়ে তার মাথায় আঘাত করে। পরে তাকে (নিরাপত্তা কর্মী) নাকে চেতনা নাশক দিয়ে অচেতন করে গাড়ির ভেতর বেধে রাখে।
পরে ২টি পিকআপে করে বিজলী ক্যাবলসের বিপুল সংখ্যক তার নিয়ে ভোর ৪টা ৪৮ মিনিটে চলে যায় ডাকাত দলের সদস্যরা। সকালে অচেতন অবস্থায় ওই মার্কেটের পাশ থেকে নিরাপত্তাকর্মীকে উদ্ধার করে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করেছে স্থানীয়রা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। ভিডিও ফুটেজ দেখে চক্রের সদস্যদের ধরতে কাজ শুরু করেছে পুলিশ।
আহত নিরাপত্তা কর্মী আব্দুর রউফ বলেন, ফজরের নামাজ শেষে ভোররাতে হঠাৎ দেখি পিকআপসহ কয়েকজন মানুষ। পরে আমি জিজ্ঞেস করলাম ভাই কি এখানে কোনো মাল নামবে। এর মধ্যেই পিছন থেকে পিকআপের ড্রাইভার আমার মাথায় বাড়ি। আমার সামনের লোক বলতেছে ওরে মেরে ফেলো। এরপরে টেনে গাড়িতে তুলে মুখ বেঁধে কি জানি নাকে ধরল। এরপর আর আমি কিছু জানি না। আর ওদের মুখ বাধা ছিল কাউকে চিনতেও পারি নাই।
মার্কেন্টাইল ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক মনিরুজ্জামান খান বলেন, এই দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা প্রথমে আমাদের যে নিরাপত্তা কর্মী আছে তিনি দেখেন। সেখানে তিনি গেলে তাকে বেধড়ক মারধর করে হাত-পা বেঁধে ফেলে রেখে যায় ডাকাতরা। এখন তিনি সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।
বিজলী ক্যাবলসের শাখা ব্যবস্থাপক শাহীন হোসেন বলেন, ঈদের ছুটিতে আমরা বাড়ি যাই। আজ সকালে খবর পেয়ে হঠাৎ ছুটে আসি। একজন নাইটগার্ড ছিল সেই নাইটগার্ড কে আহত করে বেঁধে মালপত্র যা আছে সব নিয়ে গেছে। আনুমানিক ৫০ লাখ টাকার ওপরে মালপত্র নিয়ে গেছে। আসলে আপনারা দেখছেন যে থানার পাশেই তারপর এরকম একটা ঘটনা আরও কয়েকটি ঘটনা এর আগে ঘটেছে আশেপাশে এটা খুব দুঃখজনক।
পালং মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ আকতার হোসেন বলেন, খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আমরা ঘটনাস্থলে যাই এবং আমাদের ঊর্ধ্বতন ও স্যাররাও ঘটনাস্থলে আসে। আমরা আশেপাশের ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করেছি। এবং এই ভিডিও ফুটেজের মাধ্যমে আসামি শনাক্ত করে দ্রুত আসামিদের আইনের আওতায় আনা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮০৬ ঘণ্টা, জুন ৩০, ২০২৩
এসএম