দিনাজপুর: হঠাৎ করেই বিকট শব্দে বসতবাড়ি ও আবাদি জমিতে কয়েকটি গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সেই গর্তের ভেতরে বৃষ্টির পানি ঢুকছে।
এমন ঘটনায় কৌতুহল দেখা দিয়েছে স্থানীয়দের মনে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটাকে সিংক হোল বলে। মাটির নিচের স্তরে ফাটল এবং ফাঁকা হয়ে গেলে এটি হয়ে থাকে।
দিনাজপুর সদর উপজেলার ৫ নম্বর শশরা ইউনিয়নের উমরপাইল নতুনপাড়া গ্রামে শুক্রবার (৩০ জুন) দিনগত রাতে এ ঘটনার সূত্রপাত হয়। রোববার (২ জুলাই) পর্যন্ত ওই এলাকার আবাদি জমি, বাগান ও বসতবাড়ির পাশে অদ্যাবধি ১০টির মত গর্তের দেখা মিলেছে।
খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, ওই এলাকার আব্দুর রাজ্জাক, হানিফ শাহ্, আনিসুর রহমান, মাহবুবুর রহমান, আবুল শাহ্, রবিউল ইসলাম, ফরিদুল ইসলামের জমিতে এসব গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।
শামসুল হক নামে এক এলাকাবাসী বলেন, এই জায়গাটা একটু নিচু ছিল। বৃষ্টির সব পানি এই নিচু জায়গায় গিয়ে জমে। রাতে হঠাৎ করে একটা শব্দ হলে আমরা বাড়ি থেকে বের হয়ে এসে দেখি সব পানি গর্তের ভেতরে প্রবেশ করছে। এর আগে এমনটি কখনো হয়নি। অনেকেই বলছেন যে ভেতরে কোনো ‘খনি’ আছে, তাই অনেকেই গর্তগুলো দেখতে আসছেন।
এ বিষয়ে দিনাজপুর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. শাহাদত হোসেন খান লিখন বলেন, বিকট শব্দে গর্ত সৃষ্টি হওয়ার খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এ বছর প্রচণ্ড খরা ও তাপমাত্রা বেশি হয়েছে। ফলে মাটির নিচের লেয়ার কমে যাওয়ায় পানি উত্তোলন করার ফলে সেখানে ফাঁকা স্থানের সৃষ্টি হয়েছে। এখন বর্ষার কারণে গর্ত হয়ে পানি ভেতরে প্রবেশ করছে। এটাকে সিংক হোল বলা হয়। এটা শুধু জমিতে নয় বরং পাকা রাস্তাতেও হয়ে থাকে। সারা পৃথিবীতে এমন ঘটনা ঘটে।
তিনি আরও বলেন, বোরো মৌসুমে পানি উত্তোলন করা এবং খরার কারণে মাটির নিচের লেয়ারে ফাটলের সৃষ্টি হয়েছে। এটা আস্তে আস্তে পূরণ হয়ে যাবে। মাটির নিচের স্তরে ফাটল এবং ফাঁকা হয়ে গেলে এমনটি হয়। তবে এর আগে দিনাজপুরে এমন ঘটনা ঘটেনি। এমনকি উত্তরাঞ্চলেও এমন ঘটনা ঘটেছে বলে আমার জানা নাই। তবে বাংলাদেশে এটা হয় খুবই কম পরিমাণে।
দিনাজপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) দেবাশীষ চৌধুরী জানান, ঘটনা জানার পর সেখানে একজন কর্মকর্তাকে (ম্যাজিস্ট্রেট) পাঠানো হয়েছিল। তিনি বিস্তারিত জেনে প্রতিবেদন দেবেন।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৩২ ঘণ্টা, জুলাই ০৩, ২০২৩
আরএ