ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ মে ২০২৪, ০০ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

রামু পাবলিক লাইব্রেরির সমস্ত বই উধাও

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫১ ঘণ্টা, জুলাই ৭, ২০২৩
রামু পাবলিক লাইব্রেরির সমস্ত বই উধাও

কক্সবাজার: দীর্ঘ ছয়-সাত বছর অযত্নে অবহেলায় পড়ে থাকার পর অবাক করা কাণ্ড ঘটেছে রামু উপজেলা পাবলিক লাইব্রেরিতে। লাইব্রেরির ভেতরে আট-দশটি বুক সেলফ ও চেয়ার টেবিল থাকলে নেই একটি বইও।

 

বৃহস্পতিবার (৬ জুন) দুপুরে ঢাকার আতিকুজ্জামান রাসেল নামের এক প্রকাশক ও গবেষক রামু পাবলিক লাইব্রেরির পরিদর্শনে গেলে চোখে পড়ে এমন চিত্র। এরপর বিষয়টি জানাজানি হলে রামু উপজেলা প্রশাসন ও রামু থানা পুলিশের লোকজন ঘটনাস্থল যান।

এ সময় দেখা যায়, লাইব্রেরি কক্ষের পূর্ব পাশের একটি জানালাও নেই। জানালাটির সম্পূর্ণ অংশ খুলে নিয়ে গেছে কে বা কারা। সামনের দিকে তালাবদ্ধ থাকলেও ওই স্থান দিয়ে অনায়াসে যে কেউ লাইব্রেরিতে ঢুকতে পারে। লাইব্রেরির ভেতরে চেয়ার টেবিল, আলমিরা সব ঠিক ঠাক থাকলেও নেই একটি বইও।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এইন লাইব্রেরিতে তিন হাজারের বেশি বই ছিল। বিষয়টি সচেতন মহলে বিস্ময়ের সৃষ্টি করেছে।

জানা গেছে, রামু পাবলিক লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা হয় ১৯৮৪ সালের দিকে। ২০২২ সালের দিকে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রণয় চাকমার সময়ে লাইব্রেরিটির কিছু সংস্কার কাজ হয়েছিল। পরে এটি অজানা কারণে এটি বন্ধ হয়ে যায়।

সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, লাইব্রেরির বুক শেলফ, চেয়ার, টেবিলগুলোও নষ্টের পথে। দুইটি বৈদ্যুতিক লাইট ও একটি পাখা ছিল সেটিও উধাও।

প্রত্যক্ষদর্শীদের ধারণা, বিষয়টি রহস্য জনক। যদি চুরিও হয় লম্বা সময় ধরে এটি হয়েছে। তবে সবাই একবাক্যে এই লাইব্রেরি কর্তৃপক্ষের চরম অবহেলা ও উদাসীনতার কথা জানান।

নাইক্ষ্যংছড়ি হাজী এম এ কালাম সরকারি কলেজের শিক্ষক ও স্থানীয় বাসিন্দা নীলোৎপল বড়ুয়া জানান, মূলত কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে রামুর একমাত্র পাবলিক লাইব্রেরির এই হাল হয়েছে। বছরের পর বছর অযত্ন অবহেলায় থাকতে থাকতে এটির চূড়ান্ত মৃত্যু হল।

তিনি আরও জানান, গত সাত-আট বছর ধরে লাইব্রেরিটি অকেজো হয়ে পড়েছিল। বইগুলো কেউ সরিয়েছে নাকি চুরি করেছে বোঝা মুশকিল। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক।

রামুর পাবলিক লাইব্রেরির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য অ্যাডভোকেট আবুল মনসুর বলেন, লাইব্রেরিটির সঙ্গে আসলে আমাদের দীর্ঘ ২০/২২ বছর ধরে সম্পর্ক নেই। পরিচালনা কমিটির কোনো সময় দরকার হলে  যোগাযোগ করেন। চুরির ঘটনাটি দুঃখজনক। বর্তমান যারা দায়িত্বে আছেন তাদের অবহেলার কারণে এটি হয়েছে।

পাবলিক লাইব্রেরির সহ-সভাপতি উপজেলা প্রকৌশলী মঞ্জুর হাছান ভূইঁয়া বলেন, চুরির বিষয়টি জানার পরেই আমি সেখানে যাই। কে বা কারা করেছে কখন করেছে, সঠিক বলা যাচ্ছে না। ধারণা করা হচ্ছে অনেকদিন আগেই এই চুরির ঘটনা ঘটেছে।  

রামু উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফাহমিদা মুস্তফা দেশের বাইরে আছেন, উল্লেখ করে উপজেলা প্রকৌশলী বলেন, ইতোমধ্যে ইউএনও মহোদয়কে বিষয়টি অবগত করা হয়েছে।

ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী কমিশনার নিরুপম মজুমদার জানান, লাইব্রেরিটি দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল। কে বা কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে সঠিক বলা যাচ্ছে না। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫১ ঘণ্টা, জুলাই ০৭, ২০২৩
এসবি/এসএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।