মাদারীপুর: সৌদি আরবে অগ্নিকাণ্ডে নিহত ১০ জনের মধ্যে মাদারীপুর জেলার কালকিনির জোবায়ের ঢালী (৩৫) একজন। মৃত্যুর খবরে তার পরিবারে চলছে শোকের মাতম।
শুক্রবার (১৪ জুলাই) সৌদি আরবে সোফা কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আগুনে পুড়ে জোবায়ের ঢালী নিহত হন।
নিহত জোবায়ের ঢালীর বাড়ি মাদারীপুর জেলার কালকিনি উপজেলার আলিনগর ইউনিয়নের সস্তাল এলাকায়। তিনি ওই এলাকার ইউনুস ঢালী ও হালানী বেগমের ছেলে।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে জোবায়ের সবার বড়। এছাড়াও তার পরিবারে স্ত্রী ও দুই শিশু সন্তান রয়েছে। অভাব অনটনের সংসারে স্বচ্ছলতা ফেরানোর জন্য ২ বছর আগে ৩ লাখ টাকা ঋণ করে সৌদি আরবে পাড়ি জমান জোবায়ের ঢালী। সেখানে গিয়ে আল আহসা শহরের হুফুফ ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিটি এলাকায় একটি সোফা কারখানায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করছিলেন। গতকাল শুক্রবার বিকেলে কারখানাটিতে আগুন লেগে জোবায়েরসহ ১০ জনের মৃত্যু হয়। পরে এক নিকট আত্মীয়র মাধ্যমে জোবায়েরের মৃত্যুর খবর পায় স্বজনরা।
মৃত্যুর খবর পৌঁছার পর জোবায়েরের বাড়িতে চলছে স্বজনদের আহাজারি। তার স্ত্রী শারমিন বেগম কান্নায় ভেঙে পড়েন। তার কোলে ৪ বছর বয়সী কন্যা ও ৬ বছর বয়সী অবুঝ ছেলে বুঝতে পারছে না তার বাবা আর নেই।
শারমিন কাঁদতে কাঁদতে বলেন, আমার অবুঝ বাচ্চাগুলা এতিম হইয়া গেল। ওরা এখন কারে বাবা বলে ডাকবো। শেষ বারের মতো ওর বাবার মুখটা দেখতে চাই।
জোবায়ের ঢালীর বাবা ইউনূস ঢালী বলেন, আমাদের সব আশা শ্যাষ হইয়া গেল। বাবায় আমাগো সবাইরে ছাইড়া দূরে চলে গেল। এখন সরকারের কাছে একটাই দাবি আমার সন্তানের লাশ যেন দ্রুত আনা হয়। আর এই অবুঝ বাচ্চাদের মুখের দিকে তাকাইয়া প্রধানমন্ত্রী যেন আমাদের পাশে দাঁড়ান।
কালকিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পিংকি সাহা বলেন, মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর পরিবারটির খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে। নিহতের মরদেহ দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য প্রয়োজনে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলবো। এছাড়াও নিহতের পরিবার আবেদন করলে আমাদের পক্ষ থেকে যথাসাধ্য আর্থিক সহযোগিতা করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১২ ঘণ্টা, জুলাই ১৬, ২০২৩
আরএ