ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

সীমান্তে মাদক বন্ধে মিয়ানমার সহযোগিতা করছে না: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২৯ ঘণ্টা, জুলাই ২৭, ২০২৩
সীমান্তে মাদক বন্ধে মিয়ানমার সহযোগিতা করছে না: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

ঢাকা: সীমান্ত এলাকা দিয়ে মাদক আসা বন্ধে ভারত যেভাবে সহযোগিতা করছে, মিয়ানমার সেটা করছে না বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। তিনি বলেন, মাদকের প্রচলন যুগ যুগ ধরেই চলে আসছে।

ব্রিটিশ আমলে গাঁজা বোট নামে একটা নৌকা ছিল। সেটা আমরা বন্ধ করে দিয়েছি। আমরা কোনো মাদক তৈরি করি না, তৈরি করতে উৎসাহও দিই না। কিন্তু আমরা ক্ষতির শিকার হচ্ছি।

বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয় সভাকক্ষে ‘মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস’ উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, পার্শ্ববতীসহ বিভিন্ন দেশ থেকে ইয়াবা ও আইসসহ ক্ষতিকর মাদক আসে। মিয়ানমার থেকে এমফিটামিনযুক্ত ইয়াবা ও আইস আসে। ভারত থেকে ফেনসিডিল আসত। তাদের সরকারের সঙ্গে কথা বলে, যেসব সীমান্ত এলাকা থেকে ফেনসিডিল আসে, সেসব জায়গায় তারা কাজ করছেন, যাতে এগুলো বাংলাদেশে আসতে না পারে। ভারত যেভাবে আমাদের সহযোগিতা করছে, মিয়ানমার সেটা করছে না। যে কারণে বর্ডার গার্ড ও কোস্ট গার্ডকে আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ করছি। জনবল ও দক্ষতাও বাড়ানো হচ্ছে। মূলকথা হলো, দেশে যাতে মাদক ঢুকতে না পারে। আবার মাদক ঢুকলেও তা ধরতে পুলিশ ও র‌্যাব সব সময় কাজ করছে।

তিনি বলেন, মিয়ানমারের সঙ্গে সীমান্ত লাইন একদম দুর্গম। সেখান থেকে হেঁটে যেতেও অনেক সময় লাগে। সে কারণে আমরা হেলিকপ্টারও কিনেছি। মাদক নিয়ন্ত্রণে আমরা প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। বহু আগ থেকেই মাদক আমাদের সমস্যার কারণ হয়ে আছে। এরইমধ্যে আমাদের দেশে অনেক সর্বনাশী ড্রাগ চলে এসেছে। আমরা মাদক তৈরি করি না, কিন্তু প্রতিবেশী কিংবা অন্য দেশ থেকে আসা মাদকের সবচেয়ে খারাপ শিকার হচ্ছি আমরা।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৮ সালে মাদকের বিরুদ্ধে ‘শূন্য সহনীয়তা’ নীতি ঘোষণা করেছেন। সেভাবে আইনও সংশোধন করা হয়েছে; তাতে সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। মাদকের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচাররোধে আমরা সর্বাত্মক কাজ করে যাচ্ছি। এই দিবসটি পালনের উদ্দেশ্য হলো মাদকদ্রব্য সেবনের ধ্বংসাত্মক পরিণতি সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করা। মাদকাসক্তমূলক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সরকার তিনটি কর্মকৌশল অনুযায়ী কাজ করছে। সেক্ষেত্রে আমাদের প্রথম কাজ হলো, চাহিদা হ্রাস। এ জন্য সবাই মিলে কাজ করছি। সমাজের সবাই সচেতন না হলে আমরা চাহিদা হ্রাস করতে পারব না।

আসাদুজ্জামান খান বলেন, জেলখানার কয়েদিদের অধিকাংশই মাদকের জন্য অপরাধী। তারা বিচারের জন্য অপেক্ষা করছেন। প্রায়ই সময় বিপুল মাদক জব্দ করে ধ্বংস করে দেওয়া হচ্ছে। তৃতীয়ত, আমরা ক্ষতি কমিয়ে আনার চেষ্টা করছি। যারা আসক্ত হয়ে যান কিংবা আসক্তির দিকে ঝুঁকে পড়েন, তাদের কীভাবে ফিরিয়ে আনা যায়, আমরা সেই চেষ্টা করছি।

এ সময় ঐশীর উদহারণ টেনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সে খুবই প্রতিভাবান মেয়ে ও ভালো ছাত্রী ছিল। কীভাবে মাদকের জন্য বাবা-মাকে হত্যা করেছে, আপনারা সেই দৃশ্য দেখেছেন। পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) পরিদর্শক মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না রহমান হত্যার দায়ে এই দম্পতির সন্তান ঐশী রহমান ২০১৩ সাল থেকে কারাগারে আছে। তার যাবজ্জীবন সাজার রায় হয়েছে।

সরকারি উদ্যোগে মাদক নিরাময় কেন্দ্র করছেন কিনা জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, আমি আগেও বলেছি। আমরা ৮টি বিভাগে ৮টি মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ হাসপাতাল করেছি। ঢাকার তেজগাঁওয়ে যেটা আছে সেটার সক্ষমতা বাড়াচ্ছি এবং সমৃদ্ধ করছি। এছাড়া অন্যান্য হাসপাতালগুলোও যেন এখাতে কাজ করে সেজন্য মাঝে মাঝে মাদকনিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর প্রায়শই নির্দেশনা দিয়ে থাকে। একই সঙ্গে যেসব হাসপাতাল অপকর্ম করছে, ভুলভাল চিকিৎসা দিচ্ছে তাদের লাইসেন্স বাতিল করে বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫২৮ ঘণ্টা, জুলাই ২৭, ২০২৩
জিসিজি/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।