ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

রাস্তায় ধানের চারা রোপণ করে এলাকাবাসীর প্রতিবাদ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০৩ ঘণ্টা, আগস্ট ১৯, ২০২৩
রাস্তায় ধানের চারা রোপণ করে এলাকাবাসীর প্রতিবাদ

শেরপুর: শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার বাঘবের ইউনিয়নের জাঙ্গালিয়া কান্দা গেন্দু সরকারের বাড়ি হতে খলিশাকুড়া গারো বাজার পর্যন্ত প্রায় ৩ কি.মি. কাঁচা রাস্তা। দীর্ঘদিন ধরে বেহাল এই রাস্তাটির সংস্কারের কোনো উদ্যোগ গ্রহণ না করায় রাস্তায় ধানের চারা রোপণ করে এলাকাবাসী।

শনিবার ১৯ (আগস্ট) রাস্তায় ধানের চারা রোপণ করে অভিনব কায়দায় এলাকাবাসী প্রতিবাদ জানান।  

বর্ষাকালে এই রাস্তাটি কাদা জলের কারণে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে যায়। এ কারণে এলাকার বয়োবৃদ্ধ, ছাত্র-ছাত্রীসহ কৃষক, ব্যবসায়ী, রোগী এবং গর্ভবতী মায়েদের চলাচলে ব্যাপক অসুবিধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে।

জানা গেছে, উপজেলার জাঙ্গালিয়াকান্দা ও খলিশাকুড়া গ্রামের একাংশ মিলে প্রায় আড়াই হাজার লোকের চলাচলের একমাত্র রাস্তা এটি। এই গ্রাম থেকে নালিতাবাড়ী উপজেলা হাসপাতালের দূরত্ব প্রায় ৫/৬ কিলোমিটার। দূরত্ব বেশি হওয়ায় এ গ্রামের অসুস্থ রোগী বা গর্ভবতী মায়েদের দ্রুত চিকিৎসার প্রয়োজন হলে হাসপাতালে নেওয়া যায় না। কাঁচা রাস্তা হওয়ার কারণে অনেক সময় যানবাহনও পাওয়া যায় না।  

তাই বেশিরভাগ সময় ব্যাপক অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়। এই রাস্তা দিয়ে ছোট শিশুরা স্কুলে যাওয়ার সময় পরে গিয়ে কাঁদা পানিতে ভিজে অনেক সময় বাড়ি ফিরে যেতে হয়। ফলে পড়াশোনার ক্ষতির পাশাপাশি শারীরিক অসুস্থতাও দেখা দেয় তাদের।  

ওই গ্রামের বাসিন্দা ইসমাইল হোসেন (৭০) জানান, আমরা গ্রামের মানুষ কৃষির উপর নির্ভরশীল, আমরা ধানসহ অন্যান্য পণ্য বাজারে নিলে এই খারাপ রাস্তার কারণে যানবাহনে বেশি পরিবহণ খরচ দিতে হয়। তাই আমরা কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি।  

রাস্তায় চলাচালকারী রাসেল (২২) নামে এক কলেজ ছাত্র বলেন, খারাপ রাস্তার কারণে আমরা এখানে কোনো রিকশা বা ভ্যানগাড়ি পাই না। ফলে স্কুলে কলেজে ক্লাশ করতে কিংবা পরীক্ষা দিতে সময় মতো পৌঁছাতে পারি না।  

ইউনিয়নের বাসিন্দা জাকির হোসেন (৫৫) বলেন, এই রাস্তাটি এরশাদ সরকারের আমলে করে দেওয়া হয়েছিল। এরপর আর কেউ এই রাস্তার সংস্কার কাজ করেনি। আমরা দুঃখের সঙ্গে বলতে চাই প্রধানমন্ত্রীর  ঘোষণা অনুযায়ী আসন্ন স্মার্ট যুগের এলাকার মানুষ হয়েও আমরা এই রাস্তার জন্য দীর্ঘদিন যাবত ভুগছি।

তিনি আরও বলেন, আমাদের এলাকার জনপ্রতিনিধিদের কাছে বার বার এই রাস্তার জন্য আবেদন করেও এখন পর্যন্ত আমরা এর কোনো সমাধান পাইনি। তাই এই কষ্টের প্রতিবাদ স্বরূপ এলাকাবাসী মিলে রাস্তায় ধানের চারা রোপণ করেছি, যাতে সরকার এটি দেখে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়।  

এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট নয়াবিল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বলেন, ওই রাস্তাটি সংস্কারের জন্য ইউনিয়ন পরিষদের নিজস্ব তহবিল কিংবা এলজিএসপির কোনো প্রকল্পও নেই। এছাড়া রাস্তাটি পাকাকরণের জন্য সরকারিভাবে আবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো সুরাহা পাওয়া যায়নি।

বাংলাদেশ সময়: ১৫০২ ঘণ্টা, আগস্ট ১৯, ২০২৩
এসএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।