ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

মুসলিম পরিচয়ে বিয়ে, ধর্ষণ মামলায় জেলে

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৪৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১, ২০২৩
মুসলিম পরিচয়ে বিয়ে, ধর্ষণ মামলায় জেলে

বরগুনা: কাউখালীর আমড়াঝুড়ি শাখা শ্রীগুরু সংঘের সাধারণ সম্পাদক ও একই সংঘের কাউখালী কেন্দ্রীয় আশ্রমের আজীবন দাতা সদস্য প্রশান্ত কুমার বিশ্বাসকে ধর্ষণ মামলায় জেল হাজতে পাঠিয়েছে আদালত।  

প্রশান্ত কুমার বিশ্বাসের বিরুদ্ধে ২৬ অগাস্ট উত্তরা পশ্চিম থানায় ধর্ষণের মামলাটি করেন ঢাকার মিরপুরের এক নারী।

ওই নারীর অভিযোগ, পরিচয় গোপন করে মুসলিম পরিচয়ে বিয়ে করে প্রতারণা করেছেন প্রশান্ত কুমার। ওইদিন বেলা দুইটার দিকে প্রশান্ত বিশ্বাসকে আটক করে পুলিশ।  ধর্ষণ মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে পরদিন ২৭ অগাস্ট তাকে আদালতের মাধ্যমে তাকে জেল হাজতে পাঠানো হয়।

প্রশান্ত বিশ্বাস কাউখালী উপজেলার আমড়াজুড়ি এলাকার বাসিন্দা সুভাষ বিশ্বাসের ছেলে। তিনি রাজধানীর উত্তরায় গার্মেন্টস ব্যবসা করেন। ওই নারী উত্তরায় একটি বায়িং হাউজের ব্যবসা করেন। ব্যবসা সূত্রে প্রশান্ত বিশ্বাসের সাথে পরিচয় হয়। প্রশান্ত নিজেকে মুসলিম হিসেবে পরিচয় দেন আর নাম বলেন শান্ত বিশ্বাস হিসেবে। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক হয়।

২০২২ সালের ২৪ জুন মুসলিম বিয়ে রেজিস্ট্রারের মাধ্যমে শান্ত বিশ্বাস, পিতা শামীম বিশ্বাস পরিচয়ে সে ওই নারীকে বিয়ে করে এবং উত্তরার একটি বাসায় স্বামী-স্ত্রী হিসেবে বসবাস শুরু করেন। জুলাই মাসের শেষের দিকে ওই নারী জানতে পারেন যে প্রশান্ত নিজের পরিচয় গোপন করেছে। তার নাম শান্ত বিশ্বাস নয়, প্রশান্ত কুমার বিশ্বাস এবং তার বাবার নাম শামীম বিশ্বাস নয়, সুভাষ বিশ্বাস এবং সে মুসলিম নয়, হিন্দু।  

বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে প্রশান্ত কুমার স্বীকার করে সে হিন্দু। এরপর বিয়ে রেজিস্ট্রার অফিসে খোঁজ নিয়ে ওই নারী জানতে পারেন বিয়ে রেজিস্ট্রারের সই জাল করে ভুয়া কাবিননামা করেছে প্রশান্ত বিশ্বাস।

গত ২৪ অগাস্ট উত্তরা বাসায় এ নিয়ে প্রশান্ত বিশ্বাসের সাথে ওই নারীর তর্ক হয়। এক পর্যায়ে সকাল সাড়ে দশটার দিকে ওই নারীকে ধর্ষণ করে প্রশান্ত। এ ঘটনার পর গত ২৬ অগাস্ট তিনি প্রশান্ত কুমারের বিরুদ্ধে উত্তরা পশ্চিম থানায় ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেন।

ওই নারী বলেন, পরিচয় গোপন করে ভুয়া কাবিননামা তৈরি করে বিয়ের নামে প্রতারণা করেছে প্রশান্ত বিশ্বাস। সন্দেহ হওয়ার পর খোঁজ নিয়ে জানতে পারি তিনি ঝালকাঠি জেলার রাজাপুর থানার শুক্তাগড় এলাকার রনজিত কুমার মিস্ত্রীর মেয়ে পপি রানী মিস্ত্রিকে বিয়ে করেছে এবং প্রিন্স বিশ্বাস নামে ৫ বছরের একটি ছেলেও আছে তাদের। তখনই আমি বুঝতে পারি সে হিন্দু।

এ বছরের মার্চ মাসের ২২ তারিখ পপি রানী মিস্ত্রিকে নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে ১৭১(১)/২৩ বিয়ে বিচ্ছেদের নোটিশ পাঠায় প্রশান্ত। বিয়ে বিচ্ছেদ সম্পন্ন হওয়ার পরও সে তার সাবেক স্ত্রীর সাথে তার সম্পর্ক বজায় রাখে।

তিনি বলেন, হিন্দু হয়েও সে মুসলিম পরিচয়ে আমার সাথে বিয়ের নামে প্রতারণা করে ধর্ষণ করেছে। আমি ন্যায় বিচারের জন্য মামলা করেছি।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উত্তরা পশ্চিম থানার ইন্সপেক্টর মোঃ আবু হান্নান বলেন, বাদির অভিযোগ পেয়ে প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সত্যতা পেয়ে অভিযুক্ত প্রশান্ত কুমারকে আটক করি।

জিজ্ঞাসাবাদে সে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করার পর অভিযোগটি এজাহার হিসেব নিয়ে আসামিকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। অভিযোগ তদন্ত করে শিঘ্রই আদালতে পুলিশ প্রতিবেদন দেয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২২৪১ ঘণ্টা,সেপ্টেম্বর ০১, ২০২৩
এমএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।