ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

অঝোরে রক্ত ঝরছিল গুলিতে আহত ৭ মাসের শিশু তাবাসসুমের 

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৭, ২০২৩
অঝোরে রক্ত ঝরছিল গুলিতে আহত ৭ মাসের শিশু তাবাসসুমের  গুলিতে আহত শিশু তাবাসসুম

ঢাকা: ‘প্রথমে শুনতে পেলাম আওয়াজ। তারপরেই দেখতে পেলাম কোলে থাকা আমার সাত মাসের সন্তান তাবাসসুম বিন নুরের শরীর থেকে অঝোরে রক্ত ঝরছে।

গুলির আঘাতের পর থেকে টানা তিন ঘণ্টা কান্নাকাটি আর্তনাদ করে তাবাসসুম। এখনো ব্যথায় কোকাচ্ছে সে, তবে থেমে থেমে। ’ 

মুন্সীগঞ্জে দুই পক্ষের সংঘর্ষের সময় গুলিবিদ্ধ সাত মাসের শিশুর মা জোনিকা বেগম এসব কথা বলেন।

ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে শিশুটির।

বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) হাসপাতালের বেডে তাবাসসুমকে কোলে নিয়ে বসে থাকা অবস্থায় জোনিকা বেগম বলেন, সারা রাত ঘুমায়নি তাবাসসুম। ব্যথায় চিৎকার করেছে। ঠিকমতো খাওয়া দুধ পান করছে না। চিকিৎসকরা বার বার এসে দেখে যাচ্ছেন। ঘটনার সময় আমার ৭ মাসের শিশু সন্তান তার চাচাত ভাই জুয়েলের কোলে ছিল।  

কীভাবে গুলিতে আহত হলো তাবাসসসুম? 

জোনিকা বলেন, মার্কেট শেষে মিশুকে করে বাসায় ফিরছিলাম। মুন্সীগঞ্জ সদর এলাকায় এলে দেখতে পেলাম সামনে একজন গুলি ছুড়ছে। প্রচণ্ড আওয়াজ, এরপরেই দেখি সাত মাসের শিশু সন্তানের শরীর দিয়ে রক্ত ঝরছে। গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই তাবাসসুম টানা ৩ ঘণ্টা চিৎকার করে কান্নাকাটি করতে থাকে। ঘটনা পর পরই স্থানীয় হাসপাতাল ঘুরে রাতে ঢাকা মেডিকেল আনার পরে কান্নাকাটিটা কিছুটা কমেছে। এখনো কান্নাকাটি করছে তবে থেমে থেমে।  

জানা গেছে, জোনিকা তিন সন্তানের মা। ছড়াগুলিতে আহত তার সাত মাসের শিশু তাবাসসুম সবার ছোট।

হাসপাতালের ক্যাজুয়ালটি প্রধান অধ্যাপক ডা. এ জেড এম মাহফুজুর রহমান জানান, শিশুটির শরীরের দুই এক জায়গায় পিলেট আছে। এই বয়সে আপাতত অস্ত্রোপচারের  প্রয়োজন নেই। কারণ এই বয়সে সেই জায়গায় কাটাছেঁড়া করা ঠিক হবে না। যেভাবেই আছে সেভাবেই থাকুক কোনো সমস্যা নেই। আমরা শিশুটাকে অবজারভেশন রেখেছি।  

বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) মুন্সিগঞ্জ সদরে বিয়ের মার্কেট করতে যান দেবর জুয়েল ও মেয়ে তাবাসসুমসহ জোনিকা। মার্কেটিং শেষে মিশুকে করে বাড়িতে ফিরছিলেন তারা। এ সময় রাস্তায় তারা দুই গ্রুপের গোলাগুলির মধ্যে পড়েন তারা।

সংঘর্ষের ঘটনায় ৭ মাসের শিশু তাবাসসুমসহ গুলিবিদ্ধ হন জুয়েল (২৭), জয় (২০) নামের একজন।

গুলিবিদ্ধ জুয়েল ও শিশু একই পরিবার হলেও অপর আহত জয়কে তারা চেনেন না।  

শিশু তাবাসসুমের মামা মো. রাজা মোল্লা জানান, তাদের গ্রাম মুন্সিগঞ্জ সদর সৈয়দপুর গ্রামে।

গুলিবিদ্ধদের দ্রুত মুন্সিগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে রাতে তাদের ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসা হয়।

ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে পুলিশ ক্যাম্প ইনচার্জ (ইন্সপেক্টর) বাচ্চু মিয়া বলেন, মুন্সিগঞ্জ থেকে শিশুসহ তিনজন হাসপাতাল চিকিৎসা নিচ্ছে। তবে শিশুটির গায়ে শটগানের গুলি লেগেছে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।

আরও পড়ুন >>মুন্সিগঞ্জে দুই পক্ষের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ সাত মাসের শিশু ঢামেকে

বাংলাদেশ সময়: ১৮২৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৭, ২০২৩
এজেডএস/এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।