ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৯ ফাল্গুন ১৪৩১, ০৪ মার্চ ২০২৫, ০৩ রমজান ১৪৪৬

জাতীয়

২১৭টি দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে: সিটি করপোরেশন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২৩
২১৭টি দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে: সিটি করপোরেশন ছবি: জিএম মুজিবুর

ঢাকা: উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা বলেছেন, অবৈধ দোকানগুলো ছিল ফুটপাতে। আমাদের বরাদ্দ দেওয়া দোকান ছিল ৩১৭টি।

এরমধ্যে এখন পর্যন্ত আমরা যেই তথ্য পেয়েছি ২১৭টি দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আর ফায়ার সার্ভিসও বলেছে, ভেতরে পর্যাপ্ত অগ্নি নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল না। এ বিষয়ে আমাদের সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল।

বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টার দিকে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে কৃষি মার্কেটের কাঁচাবাজার ও নতুন কাঁচাবাজারের অগ্নিকাণ্ড স্থল পরিদর্শনে এসে সাংবাদিকদের এই কথা বলেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের এই প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা।

সেলিম রেজা বলেন, মার্কেটের ব্যবসায়ী যারা আছেন, যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, আমরা তাদের তালিকা করছি। বিভিন্ন সংস্থা এগিয়ে আসবে। আমরা সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে তাদের পাশে দাঁড়াব। আমাদের কর্মীরা কাজ করছে। যতটুকু সম্ভব ডিএনসিসির পক্ষ থেকে তাদেরকে সহযোগিতা করা হবে।

সিটি করপোরেশনের অধীনে থাকা এই মার্কেটটিতে আগুন নেভানোর কোনো যন্ত্র ছিল না। অবৈধ দোকান ছিল। এমন পরিস্থিতিতে সিটি করপোরেশনের কী ভূমিকা ছিল জানতে চাইলে তিনি বলেন, অবৈধ দোকানগুলো ছিল ফুটপাতে। আমাদের বরাদ্দ দেওয়া দোকান ছিল ৩১৭টি। এরমধ্যে এখন পর্যন্ত আমরা যেই তথ্য পেয়েছি ২১৭টি দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আর ফায়ার সার্ভিসও বলেছে, ভেতরে পর্যাপ্ত অগ্নি নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল না। এ বিষয়ে সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল।

তিনি বলেন, এখানে বাজার সমিতি আছে, তাদেরকে আমরা এই কাজগুলো করার জন্য বারবার নির্দেশনা দিয়েছি, অনুরোধ করেছি। এই কাজগুলো না করার কারণেই আমরা এখন এর ভয়াবহতা দেখতে পাচ্ছি।

মালিক সমিতি ও ব্যবস্থাপনা কমিটি দায়ী কি না এমন প্রশ্নের বিষয়ে তিনি বলেন, এটা তদন্ত করে জানা যাবে কারা দায়ী ছিল। তদন্তেই বেরিয়ে আসবে।

রাজধানীতে নয়টি ঝুঁকিপূর্ণ মার্কেটের মধ্যে মোহাম্মদপুরে দুটি মার্কেট রয়েছে, যেখানে অগ্নি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেই। এই মার্কেটটিতেও অগ্নি নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল না। এই মার্কেটটি কেন তাহলে তালিকায় আসলো না এমন প্রশ্নের প্রেক্ষিতে সেলিম রেজা বলেন, কমিটি যখন কাজ করেছে তখন এই মার্কেটটি তালিকায় ঢুকেনি। উত্তর সিটি করপোরেশনের আটটি ভবন ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে। ভবন ও যেই মার্কেট ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে সেগুলো ম্যাজিস্ট্রেটকে আমরা বলে দিয়েছি ১৫ দিন বা এক মাসের মধ্যে ব্যবস্থা নিতে। কোনো বাঁধা, কোনো কিছুর মুখেই আমরা আর থামব না।

তিনি বলেন, এই ভবনগুলোয় ব্যবসায়ী এবং বসবাসকারী যারাই থাকুন তাদেরকে সেখান থেকে বের করে দিয়ে ভবনগুলোকে সিলগালা করে দিতে হবে। দ্রুত সময়ের মধ্যে এই ভবনগুলোকে ফাঁকা করতে হবে। এই লক্ষ্যে আমরা ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দিয়েছি। তারা দ্রুততম সময়ের মধ্যে কাজগুলো সম্পন্ন করবেন।  

ঢাকা জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমান বলেন, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমরা অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্তদের একটি তালিকা করব। তারপর সরকারের পক্ষ থেকে তাদেরকে আমরা মানবিক সহায়তা করার চেষ্টা করব। আমরা এখনই মাঠে আছি। এটিই হলো আমাদের প্রথম উদ্যোগ।

এরআগে, বৃহস্পতিবার ভোর ৩টা ৪৩ মিনিটে মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে আগুনের খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। প্রথমে একটি ইউনিট এলেও মার্কেট বন্ধ থাকায় ভেতরে ঢুকতে পারেনি সদস্যরা। যে কারণে আগুন দ্রুত চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে।

এদিকে, পৌনে ৬ ঘণ্টা পর সকাল ৯টা ২৫ মিনিটে কৃষি মার্কেটের আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। এ তথ্য নিশ্চিত করেন ফায়ার সার্ভিস মিডিয়া সেলের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহজাহান শিকদার। তিনি জানান, ভোরে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে ফায়ার সার্ভিসের ১৭ ইউনিট ও ১৩৭ জন কর্মী। আগুন নির্বাপণে এখনও আমাদের টিম কাজ করে যাচ্ছে।

আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করেছে সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর অগ্নি নির্বাপণী সাহায্যকারী দল। এছাড়া আগুন নিয়ন্ত্রণ, উদ্ধার অভিযান ও সার্বিক শৃঙ্খলায় ঘটনাস্থলে কাজ করে পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, এনএসআই, স্কাউটের ভলান্টিয়ার সদস্যরা। বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টারের মাধ্যমে মার্কেটে ওপর থেকে পানি ছিটানো হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৫১১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২৩
এমএমআই/এসআইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।