মেহেরপুর: সীমান্তের শূন্যরেখায় শেষবারের মতো বীর মুক্তিযোদ্ধা বাবার মুখ দেখার সুযোগ করে দেবে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি ও বিএসএফ। সেই অপেক্ষায় কাঁটাতারের কাছে বাবার লাশ নিয়ে অপেক্ষায় ছিলেন স্বজনেরা।
অপেক্ষা বাড়লেও বাবাকে শেষবারের মতো দেখার অনুমতি বিএসএফের কাছে থেকে পাওয়া যায়নি। বুকভরা কষ্ট নিয়ে ফিরে গেছেন ভারতে বসবাসরত ছেলে ও মেয়ে।
বেদনাহত ঘটনাটি ঘটেছে আজ বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে মেহেরপুরের মুজিবনগর স্বাধীনতা সড়ক সীমান্তে।
মুজিবনগর উপজেলার ভবের পাড়ার বীর মুক্তিযোদ্ধা রবীন দফাদার গতকাল (বুধবার) বিকেলে বার্ধক্যজনিত কারণে মারা যান। তার এক মেয়ে ও দুই ছেলে বিয়ে করে ভারতের নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগর গ্রামে থাকছেন।
বাংলাদেশে বসবাসরত ছেলে মাইকেল দফাদার বলেন, বাবার মৃত্যুর খবর পেয়ে ওপারে কাঁটাতারের কাছে অপেক্ষা করতে থাকেন আমার ভাই বোন ও অন্যান্য স্বজনেরা। বিজিবির পক্ষ থেকে বিএসএফকে চিঠি দিলে তাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অনুমতি না পাওয়ায় শেষবারের মতো বাবার মুখ দেখতে পারল না তারা। লাশ নিয়ে এখন দাফনের ব্যবস্থা করব।
তিনি জানান, এর আগে বাবার জীবিত মুখটা দেখার জন্য বহু চেষ্টা করে দেখা হয়নি তাদের। মোবাইল ফোনে কথা বলে শান্তি খুঁজতেন তারা।
স্থানীয় বাসিন্দা জুবের হোসেন বলেন, সীমান্ত গ্রামগুলোতে বসবাসকারীরা বলছেন এমন ঘটনা এবারই প্রথম। অনেকের আপনজন, বাবা-মায়ের মৃত্যুর খবর পেলেও সীমান্তের শূন্য রেখায় শেষ দেখার ব্যবস্থা করেন দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী। এবার কাঁটাতারের কাছে গিয়ে আকুতি জানিয়ে চোখের জলে ফিরে আসার ঘটনা ঘটল।
বিজিবির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার সকালে বিজিবির পক্ষ থেকে বিএসএফকে একটি চিঠি দেওয়া হয়। শেষবারের মতো বাবার লাশ সীমান্তের শূন্যরেখায় দেখানোর জন্য। পরে দুপুরে বিএসএফের পক্ষ থেকে জানায় অনুমতি না মেলায় দেখানো সম্ভব হচ্ছে না।
স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য দিলীপ মন্ডল বলেন, এখানকার বিজিবি ক্যাম্পের কমান্ডার ভারতের হৃদয়পুর বিএসএফের সঙ্গে সাধ্যমতো চেষ্টা করেছেন যোগাযোগের। ছেলে এবং মেয়েকে তার বাবার মরা মুখটা দেখানোর জন্য, কিন্তু সেটা হয়নি। তবে এর আগে এখানকার একটা মেয়ে মারা গেলে, সেবার দেখানো হয়েছিল।
বাংলাদেশ সময়: ২১২০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২৩
এসএএইচ