ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৯ কার্তিক ১৪৩১, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ১২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

আদালতের সামনে থেকে আ.লীগ নেতাকে তুলে নিয়ে মুক্তিপণ আদায়

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৫৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২৩
আদালতের সামনে থেকে আ.লীগ নেতাকে তুলে নিয়ে মুক্তিপণ আদায়

নরসিংদী: নরসিংদীতে শাহিন মিয়া নামে এক ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতাকে আদালতের সামনে থেকে তুলে নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে।  

এরপর বিকাশে মুক্তিপণের টাকা আদায়ের পর সেই আ.লীগ নেতাকে ছেড়ে দেয় তারা।

 

রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নরসিংদী আদালতের ৩ নং গেটের সামনে থেকে অপহরণ করা হয় ওই আ.লীগ নেতাকে।

ভুক্তভোগী আলোকবালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক শাহিন মিয়া।

এ ঘটনায় রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাতে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন তিনি। আলোকবালী ইউনিয়ন যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটি সদস্য হাবিব মিয়া (৪২) ও একই এলাকার আব্দুর রউফের ছেলে মিটল মিয়াকে (৪০) অভিযুক্ত করা হয়েছে।  

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্তদের সঙ্গে রাজনৈতিক ও আধিপত্য নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধ রয়েছে আ.লীগ নেতা শাহিন মিয়ার। রোববার দুপুর দেড়টার দিকে আলোকবালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আসাদ উল্লাহের আইনজীবী সমিতির চেম্বার থেকে বের হন তিনি। পরে নরসিংদী আদালতের ৩ নং গেটের সামনে পৌঁছালে তাকেসহ একই এলাকার ধনু মিয়ার ছেলে রাহীমকে ৭-৮ জন অজ্ঞাত ব্যক্তি দুটি সিএনজিতে করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে মারধর করে।  

শাহিন মিয়া জানান, তাদেরকে মারধরের সময় সন্ত্রাসীরা বার বার প্রতিপক্ষ হাবি মিয়া ও মিটল মিয়ার কথা বলছিল। তাদের দাবি ছিল, তাকে হত্যা করার জন্য ১ লাখ টাকার চুক্তি করেছে প্রতিপক্ষরা। বাঁচতে চাইলে তাদেরকে দেড় লাখ টাকা দিতে হবে। পরে প্রাণ ভয়ে নিজের বিকাশ থেকে দুটি নাম্বারে ২৫ হাজার করে ৫০ হাজার ও আরেকজনের বিকাশ থেকে ২১ হাজারসহ ৭১ হাজার টাকা দেওয়া হয়। পরে তাদের বিভিন্ন হুমকি দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।

নরসিংদী জজ আদালতের আইনজীবী আসাদ উল্লাহ বলেন, আইনিসেবা নিতে শাহীন মিয়া আমার চেম্বারে এসেছিলেন। পরে ফেরার পথে তাকে জিম্মি করে তুলে নেওয়া হয়। তাকে দুই ঘণ্টা আটকে রেখে নির্যাতন করে টাকা পেয়ে ছেড়ে দেয়। পরে তিনি বের হয়ে জিজ্ঞেস করলে লোকজন জানায়, এটা ব্যাংক কলোনি। আমরা ঘটনার সঙ্গে জড়িত প্রকৃত আসামিদের খুঁজে বের করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানাচ্ছি।

এদিকে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মিটল মিয়া।

তিনি বলেন, আমাকে রাজনৈতিকভাবে হয়রানি করতে মিথ্যা ঘটনা সাজিয়ে ফাঁসানো হচ্ছে। আমি যদি অপহরণ করতাম তাহলে অপহরণকারীরা কি আমার নাম বলতো। আমার স্ত্রী ইউনিয়নের প্যানেল মেয়র। আমাদের মধ্যে রাজনীতির কারণে পক্ষ-বিপক্ষ আছে কিন্তু কোনো বিরোধ নেই। আমি চাই তদন্ত সাপেক্ষে প্রশাসন যেন প্রকৃত ঘটনা খুঁজে বের করে।

অভিযুক্ত আলোকবালী ইউনিয়ন যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য হাবিব মিয়ার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

স্থানীয়দের দাবি, আ.লীগ নেতা অপহরণের ঘটনায় আলোকবালীর আবির এবং মুরাদনগর গ্রামের সুজন নামে দুইজনকে আটক করেছে পুলিশ।  

তবে আটকের বিষয়টি অস্বীকার করেছে পুলিশ।  

নরসিংদী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কাশেম ভূইয়া বলেন,অভিযোগ পাওয়ার পরই আমরা তদন্ত শুরু করেছি। এঘটনায় কাউকে আটক করা হয়নি। আমরা জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুইজনকে থানায় নিয়ে এসেছি। আমরা রহস্য উদ্‌ঘাটনে কাজ করছি।

বাংলাদেশ সময়: ১১৫০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর  ২৫, ২০২৩
এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।