ঢাকা: রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানা এলাকায় একসঙ্গে কয়েকটি ছিনতাইয়ের ঘটনায় ৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গ্রেপ্তাররা হলেন- লেগুনা চালক আকাশ (১৯), ফুটপাতের দোকানি নয়ন (২০), ভ্যান ড্রাইভার সজল ইসলাম (১৯), বাসের হেলপার আবু কালাম (২১), অটোরিক্সাটালক আরিফ (১৯), গার্মেন্টসকর্মী সজীব (১৯), রং-মিস্ত্রী কবির (২৩), রাজমিস্ত্রি নাসির (১৯), ও লেগুনা চালক সুজন (২০)।
রোববার (১ অক্টোবর) মোহাম্মদপুরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ছিনতাই করা একটি মোবাইল ফোন ও ছিনতাইয়ে ব্যবহৃত তিনটি চাপাতি ও দুটি ছোরা জব্দ করা হয়।
মোহাম্মদপুর থানায় দায়েরকৃত একটি মামলার সূত্র ধরে পুলিশ জানায়, মামলার বাদি সুফিয়ান ইবনে সেলিম, নুসরাত আফ্রিন, রুহুল আমিন ও ফাহিম ইমরান। তারা থানায় এসে অভিযোগ করেন, গত শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৭টার দিকে বাদি সেলিম মোহাম্মদপুর থানাধীন ফিউচার হাউজিং মসজিদের সামনে রাস্তায় পৌঁছলে অজ্ঞাতনামা ১০/১২ জন যুবক হাতে লাঠি, ধারালো বড় ছোরা ও চাপাতি নিয়ে তাকে ঘিরে ধরে। তারা মারধর ও ভয়ভীতি দেখিয়ে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ও মানিব্যাগ ছিনিয়ে নেয়। অজ্ঞাতনামা আসামিরা তুরাগ নদীর তীরবর্তী ওয়াকওয়ের দিকে হেঁটে চলে যায়। সেলিমও তাদের পিছু নেয়। আসামিরা ওয়াকওয়েতে স্মার্ট ব্যাম্বো রেস্টুরেন্টের সামনে ফাহিম ইমরানকে মারধর করে তার কাছ থেকে একটি আইফোন ছিনিয়ে নেয়। কিছু দূর এগিয়ে ওয়াকওয়েতে হান্ড্রেড মাইল রেস্টুরেন্টের সামনে নুসরাত আফ্রিন ও তার বন্ধু রুহুল আমিনকে মারধর করে একটি মোবাইল ফোন ও ১২০০ টাকা ছিনিয়ে নেয়। আসামিরা একই পথ ধরে বসিলা ৪০ ফিট যাওয়ার পথে আরও কয়েকজনকে ভয়ভীতি দেখিয়ে ছিনতাই করে।
ডিএমপির মোহাম্মদপুর জোনের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মৃত্যুঞ্জয় দে সজল জানান, ওয়াকওয়েতে একাধিক ছিনতাইয়ে সংবাদ পাওয়া মাত্রই মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ আসামিদের গ্রেপ্তারে তৎপরতা শুরু করে। বসিলা ৪০ ফিট রাস্তা, ফিউচার হাউজিং, রাজধানী হাউজিং, বসিলা গার্ডেন সিটি, গ্রিন সিটি ও ঢাকা উদ্যান এলাকার বিভিন্ন পয়েন্টে স্থাপিত সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে ঘটনায় জড়িত আসামিদের শনাক্ত করা হয়।
ফুটেজ বিশ্লেষণে সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টার দিকে ৩০-৩৫ জন যুবককে হাতে বিভিন্ন প্রকার দেশিয় অস্ত্র নিয়ে তুরাগ নদীর তীরবর্তী ওয়াকওয়ের দিকে যেতে দেখা যায়। এরই ধারাবাহিকতায় মোহাম্মদপুরের বিভিন্ন এলাকা থেকে জড়িত ৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে এডিসি সজল জানান, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে প্রতিপক্ষ একজনকে মারার জন্য তারা ঢাকা উদ্যানের দিকে যাচ্ছিল। যাওয়ার পথে তাদের কয়েকজন ওয়াকওয়েতে থাকা পথচারীদের মারধর ও ভয়-ভীতি দেখিয়ে মোবাইল, নগদ টাকা ও অন্যান্য জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেয় এবং ফেরার পথে কয়েকটি দোকানে ভাংচুর চালায়।
গ্রেপ্তারদের কাছ থেকে জড়িত অন্যদের নামও পাওয়া গেছে। তাদের দেওয়া তথ্য ও সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তার ও ছিনতাই হওয়া মালামাল উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত আছে বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ২৩১১ ঘণ্টা, অক্টোবর ১, ২০২৩
পিএম/এমজে