ঢাকা, বুধবার, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ মে ২০২৪, ২৮ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

থানায় এসে রিকশা চাইলেন পদ্মা সেতু থেকে ঝাঁপ দেওয়া সেই চালক

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ২, ২০২৩
থানায় এসে রিকশা চাইলেন পদ্মা সেতু থেকে ঝাঁপ দেওয়া সেই চালক

নারায়ণগঞ্জ: নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা নিয়ে পদ্মা সেতুতে উঠে নদীতে ঝাঁপ দেওয়া চালক মো. শরিফুল ইসলাম তিন মাস পরে থানায় এসে হাজির হয়েছেন। থানায় এসেই জব্দ করা শ্বশুরবাড়ির ও কিস্তির টাকায় কেনা অটোরিকশাটি ফেরত চেয়েছেন শরিফুল।



রোববার (১ অক্টোবর) দুপুরে পদ্মা সেতুর উত্তর থানায় ঘটে এ ঘটনা।

এর আগে ১৯ জুন পদ্মা সেতু থেকে ঝাঁপ দিয়ে নিখোঁজ ছিলেন শরিফুল। বাগেরহাটের মোল্লাহাট উপজেলার উদয়পুরে শরিফুল ইসলামের বাড়ি। তিনি ওই গ্রামের জিন্নাত আলীর ছেলে ও ঢাকার হাজারীবাগ এলাকায় ভাড়া থাকতেন এবং এখানেই অটোরিকশা চালাতেন।

শরিফুল বলেন, আমার শ্বশুরবাড়ির টাকায় ও কিস্তির টাকায় আমি অটোরিকশাটি কিনি। আমার সেতুর এই ঘটনা আমার পরিবার স্ত্রী কেউই বিশ্বাস করছিলেন না। সবার ধারণা, আমি অটোরিকশা বিক্রি করে দিয়েছি। এ নিয়ে আমার সংসার ভাঙার অবস্থা হওয়ায় খোঁজ নিয়ে জানতে পারি অটোরিকশাটি এখানে আছে, তাই দ্রুত এসেছি।

শরিফুলের শ্বশুর মোহাম্মদ দাউদ মোল্লাহ বলেন, পদ্মায় পড়ে কেউ বাঁচতে পারে সেটি বিশ্বাস হচ্ছিল না, কিভাবেই বা হবে সে আবার মানসিকভাবেই কিছুটা সমস্যার মধ্যে ছিল। এখন এখানে এসে বিশ্বাস করলাম যে এটি তার।

পদ্মা সেতুর উত্তর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেন জানান, শরিফুল নিজেই উপস্থিত হয়ে জানান তিনি বেঁচে আছেন এবং তিনি তার অটোরিকশাটি ফেরত চেয়েছেন।

শরিফুলের বক্তব্যের বরাত দিয়ে তিনি জানান, পারিবারিক কলহে মানসিক শান্তি খুঁজতে তিনি সেদিন হাজারীবাগ থেকে অটোরিকশা নিয়ে বের হয়ে সেটি চালিয়েই গ্রামের বাড়িতে যাচ্ছিলেন। তিনি মুন্সিগঞ্জের মাওয়া প্রান্ত দিয়ে পুলিশকে ফাঁকি দিয়ে পদ্মা সেতুতে উঠেন। পরে সেখানে তার অটোরিকশার সঙ্গে একটি গাড়ির ধাক্কা লাগলে নিরাপত্তাকর্মীরা তাকে ধাওয়া করেন। এ সময় শরিফুল ক্লান্ত হয়ে কিছুটা ঘুম তার চোখে থাকায় নিরাপত্তাকর্মীদের ধাওয়ায় ভয় পেয়ে তিনি নিজের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নদীতে পড়ে যায়।

তিনি আরও জানান, তিনি ঝাঁপ দেয়নি বলেই আমাদের জানায় এবং তিনি যখন পানিতে পড়ে যায় তখন জিহবার মধ্যে রডের আঘাত পায়।  

তিনি পুলিশকে আরও জানায়, নদীতে পড়ে তিনি কোনো কূল-কিনারা খুঁজে না পেয়ে সারা রাত সাঁতার কাটার পর ভোরে গিয়ে একটি এলাকার তীরে উঠেন। পরে বাসে চড়ে খুলনা মেডিকেলে কয়েকদিন চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হন তিনি।

পদ্মা উত্তর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর বলেন, আমরা খোঁজ নিয়েছি এটিই সেই ব্যক্তি যিনি ঝাঁপ দিয়েছিলেন। তার অটোরিকশা তাকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় মাদারীপুরের শিবচর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল।

বাংলাদেশ সময়: ১৪১৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ০২, ২০২৩
এমআরপি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।