ঢাকা: ভালোভাবে প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা না করতে পারলে উন্নয়নের বদলে দেশ অনেকটা পিছিয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ডা. মো এনামুর রহমান। তিনি বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় দুটি দুর্বলতা প্রকাশ পেয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া লিমিটেডের (ইডব্লিউএমজিএল) কনফারেন্স হলে আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস-২০২৩ উপলক্ষে ‘অসমতার বিরুদ্ধে লড়াই করি দুর্যোগ সহনশীলতা ভবিষ্যৎ গড়ি’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে বাংলাদেশ প্রতিদিন ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বা মোকাবিলা ভালোভাবে না করতে পারলে দেশ যতটুকু এগিয়েছে তার থেকে বেশি পিছিয়ে যাবে বলে অনুষ্ঠানে মন্তব্য করেন প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য অত্যন্ত জোর দিচ্ছে। আজকে আমরা আমাদের অর্থনীতিকে যত শক্তিশালী করতে পারব, দুর্যোগে ক্ষয়ক্ষতি যত কমিয়ে আনতে পারব, আমাদের মূল্যবান মানব সম্পদের প্রাণহানি যত কমিয়ে আনতে পারব, জাতি হিসেবে আমরা তত বেশি শক্তিশালী হতে পারব। এর ফলে আমাদের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষার শক্তি তত বেশি সমৃদ্ধ হবে। তা না হলে আমাদের অর্থনীতি পিছিয়ে গেলে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে স্বাধীনতার সরস্বতী রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়বে। কাজেই স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে দেশকে টিকিয়ে রাখার জন্য দুর্যোগ মোকাবিলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম।
দুর্যোগ মোকাবিলায় বিশ্বের মধ্যে বাংলাদেশ একটি রোল মডেল জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা নিয়ে ওয়ার্ল্ড ব্যাংক, আমেরিকা, ব্রিটিশ, ভারতসহ বিভিন্ন দেশ প্রশংসা করেছে। দুর্যোগ মোকাবিলার এই কাজগুলো আমরা সফলভাবে করতে পেরেছি প্রধানমন্ত্রী নেতৃত্বের ফলে।
প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান বলেন, বজ্রপাত সহনীয় রাষ্ট্র গড়ে তোলার জন্য আমরা কিছু প্রজেক্ট হাতে নিয়েছি। অনেক সভা সেমিনার করে আমরা একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছেছি, ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের মতো বজ্রপাতে আগাম সতর্কতা বার্তা দেওয়া হবে। যা বজ্রপাতের ৩০ থেকে ৪০ মিনিট আগে পূর্বাভাস দেবে। এবং পূর্বাভাসের পর যাতে নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়া যায় সে জন্য স্বল্প দূরত্বে বজ্রপাত সহনশীল শেল্টার তৈরি করব। বজ্রপাত প্রবণ জেলাগুলোয় এই পরিকল্পনা নেওয়া হবে। আর এটা যদি আমরা বাস্তবায়ন করতে পারি তাহলে ঘুর্ণিঝড় ও বন্যার মতো বজ্রপাতেও আমরা ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনতে পারবো।
বজ্রপাতের ক্ষতি কমাতে ১ হাজার ৯২০ কোটি টাকার একটি প্রোজেক্ট হাতে নিয়েছি। যা একনেকে সাবমিট করা হয়েছে। বর্তমানে এটা সবুজ পাতায় আছে। এটা পাশ হলে আমরা এই প্রোজেক্ট নিয়ে কাজ করতে পারব।
ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি কমাতে যা করতে হবে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, শুধুমাত্র ভলান্টিয়ার তৈরি করে এবং ভূমিকম্পের পরবর্তী উদ্ধার কাজের যন্ত্রপাতি কেনিই ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনা সম্ভব নয়। ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি এবং মৃত্যুর হার কমাতে হলে জাপানের মতো বাংলাদেশকেও ভূমিকম্প সহনীয় রাষ্ট্রে পরিণত করতে হবে। ১৯৮৬ সালে জাপানের কুবে শহরে যে ভূমিকম্প হয়েছিল সেখানে প্রায় ৩০ হাজারের বেশি লোক মারা গিয়েছিল। এরপর থেকেই জাপান ভূমিকম্প সহনীয় রাষ্ট্র তৈরি করতে কাজ করে যাচ্ছে। জাপান কি করেছে? তারা তাদের বিল্ডিং কোড পরিবর্তন করে ১০ মাত্রার ভূমিকম্প সহনশীল বিল্ডিং কাঠামো তারা তৈরি করেছে। ফলে এখন জাপানে ৭ থেকে ১০ মাত্রার ভূমিকম্প হলে বিল্ডিংগুলো হেলে দুলে কিন্তু কলাপ্স বা ভেঙে পড়ে না। ফলে কোনো হতাহত থাকে না।
দীর্ঘদিন পরে হলেও দেশে বিল্ডিং কোড প্রবর্তন করা হয়েছে উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ২০২২ সালে এই বিল্ডিং কোড করা হয়েছে। এখানে সাড়ে সাত মাত্রার ভূমিকম্প সহনশীল এমন মানের বিল্ডিং কোড তৈরি করা হয়েছে। তবে অনেকে বলতে পারেন ১০ মাত্রার না করে কেন সাড়ে সাত মাত্রার বিল্ডিং কোড করা হয়েছে? কারণ আমাদের দেশের ভূমিকম্পের ইতিহাস দেখলে বোঝা যায়, ভারত উপমহাদেশে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ সাড়ে সাত মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছে। এর বেশি কখনো হয়নি। যে জন্য সাড়ে সাত মাত্রার ভূমিকম্প সহনশীল বিল্ডিং কোড করা হয়েছে।
বিল্ডিং কোড হলে এখন যে ভবনগুলো ঝুঁকিপূর্ণ সেগুলোকে ধ্বংস করে নতুন ভবন নির্মাণ করা হবে। পাশাপাশি যে সব হাইরাইজড ভবন আছে সেগুলোকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে, এগুলো ভূমিকম্প সহনশীল কিনা। আর যেগুলো ভূমিকম্প সহনশীল না সেগুলোকে ‘রেট্রোফিটিং’ করার মাধ্যমে ভূমিকম্প সহনশীল করা হবে। আর এই রেট্রোফিটিংয়ের জন্য রাজউক ইতোমধ্যে ৫০০ কোটি টাকার একটি প্রোজেক্ট হাতে নিয়েছে। যার কার্যক্রম প্রায় শেষের দিকে। এর মাধ্যমে প্রায় ১ হাজার ২০০ জনের মতো ইঞ্জিনিয়ারকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। দের ভবন পরীক্ষা নিরীক্ষা ও রেট্রোফিটিং করাতে তাদের যে খরচ হবে তা ভবন মালিককে বহন করতে হবে।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, রানা প্লাজা ধসের পর দেশের শতভাগ গার্মেন্টস সেক্টরকে ভূমিকম্প সহনশীল করতে রেট্রোফিটিং করা হয়েছে। বর্তমানে দেশের গার্মেন্টস সেক্টর শতভাগ ভূমিকম্প সহনশীল। এটা আমাদের দেশের জন্য একটা ভালো দিক।
প্রতিমন্ত্রী ডা. মো এনামুর রহমান আরও বলেন, দারিদ্র বা অসমতা দূর করার জন্য আমাদের প্রায় ১৪৩টার বেশি প্রোজেক্ট আছে। এ লক্ষ্যে এ বছর বাজেটে প্রায় ১ লাখ ৩৭ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। দরিদ্রের যে অসমতা আছে এটাকে দূর করার মাধ্যমে সমতা আনার জন্য এই বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী সব কিছুতে অসমতা দূর করার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।
গোলটেবিল আলোচনায় মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের পরিচালক (গবেষণা ও শিক্ষা) যুগ্ম-সচিব নাহিদ সুলতানা মল্লিক।
এতে বলা হয়, বাংলাদেশ সরকার আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস- ২০২৩ উদযাপন উপলক্ষে ভূমিকম্প ও অগ্নিকাণ্ড বিষয়ক মহড়া সম্পাদন করেছে। বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক প্রাঙ্গণেও দুর্যোগ মোকাবেলা ও সহযোগিতার জন্য প্রশংসিত হয়েছে। তুরস্কে সাম্প্রতিক ঘটে যাওয়া ভূমিকম্প এবং লিবিয়ায় বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর থেকে ত্রাণ সরবরাহ করা হয়েছে। বাংলাদেশ সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর হতে দুর্যোগ প্রশমনে অত্যাধুনিক আইটি ও প্রযুক্তি নির্ভর প্রজেক্ট বাস্তবায়ন করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি ক্যাপ্টেন (অব.) এবি তাজুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশের মানুষ দুর্যোগ মোকাবিলা করতে করতে অভ্যস্ত হয়ে গেছে। তবে সরকার হিসেবে আমাদের দুর্যোগ মোকাবিলায় অনেক আধুনিক ব্যবস্থাপনা গ্রহণ করছি। আমরা দুর্যোগের মোকাবিলায় পূর্ববর্তী ভুলগুলো থেকে শিক্ষা নিয়ে সামনে দিনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। তবে এই বিষয়ে নিশ্চিন্ত থাকার কোনো অবকাশ নেই, সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।
ক্যাপ্টেন (অব) এবি তাজুল ইসলাম আরও বলেন, আমি মনে করি জাতি হিসেবে আমাদের মাঝে বিভেদ দূর করতে হবে। তাহলে দুর্যোগের সময় একে অপরের সাহায্য করার মাধ্যমে অনেক সহজেই এর মোকাবিলা করতে পারব। তাই আমদের সবাইকে এক হতে হবে। একজন রাজনৈতিক ব্যক্তি চিন্তা করে কীভাবে আগামী নির্বাচনে নিজের সিট ধরে রাখা যায়। আর একজন লিডার চিন্তা করেন কীভাবে দেশের মানুষকে বা আগামী প্রজন্মকে সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে যাওয়া যায়। তাই দেশকে এগিয়ে নিতে আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মতো নেতৃত্বের প্রয়োজন আছে।
বাংলাদেশে দুর্যোগের ধরনে আগের চেয়ে অনেক পরিবর্তন এসেছে বলে মনে করছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও অধিদপ্তরের মুজিব কিল্লা নির্মাণ সংস্কার উন্নয়ন প্রকল্পের সহকারী প্রকৌশলী মুহাম্মদ মবিনুর রহমান। তিনি বলেন, বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে দুর্যোগের ধরনও পরিবর্তন হয়েছে। বর্তমানে দেশে যে ধরনের বন্যা হয়ে থাকে, তা আগে ছিল না। এখন বন্যায় কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সব কিছু প্লাবিত হয়ে যায়। তাই দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় আমরাও আধুনিক ব্যবস্থা নিচ্ছি। সিকিমের ঢলের কারণে দেশের পাঁচটি জেলায় বন্যা দেখা দিচ্ছে। তাই ধরনের বন্যা মোকাবিলায় আমাদেরও আধুনিক ব্যবস্থা নিতে হবে।
ভূমিকম্প ব্যবস্থাপনায় আমাদের অগ্রগতি কম। এই ভূমিকম্প মোকাবিলায় আমাদের প্রশিক্ষিত জনবলের অভাব আছে। তাই এ বিষয়ে আমাদের স্থায়ী প্রশিক্ষিত জনবল তৈরি করতে হবে। তাহলেই ভূমিকম্প ব্যবস্থাপনা টেকসই হবে।
কুমিল্লা জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তার কার্যালয়ের কর্মকর্তা এম আবেদ আলী বলেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় জেলা ও উপজেলা পর্যায়কে যদি শক্তিশালী না করা হয় তাহলে এর ব্যবস্থাপনা কঠিন হয়ে পড়বে। তাই এই জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে যে কাঠামো বা কমিটিগুলো আছে তা আরও বেশি শক্তিশালী করতে হবে।
দুর্যোগকে প্রশমন করা যায় কিন্তু নির্মূল করা যায় না উল্লেখ করে ডিজাস্টার রিস্ক ম্যানেজমেন্ট প্রজেক্টের প্রকল্প পরিচালক (যুগ্ম সচিব) সুব্রত পাল চৌধুরী বলেন, আমাদের প্রশমনের বিষয়ে বেশি চিন্তা করতে হয়। সিকিম থেকে যে ঢল আসতে তা কিন্তু কেউই আগাম জানত না। এই ঢলের কারণ হচ্ছে বৈশ্বিক উষ্ণতা বাড়ার কারণে হিমালয়ের বরফ গলা। যে কারণে এই ধরনের দুর্যোগ হঠাৎ করেই দেখা দিচ্ছে।
বর্তমান সময়ের দুর্যোগগুলো পরোক্ষভাবে মানব সৃষ্ট কারণে হয়ে থাকে উল্লেখ করে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি (শিক্ষা) প্রফেসর মাহবুবা নাসরিন বলেন, আগে একসময় বলা হতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ। কিন্তু এখন আর কেউ প্রাকৃতিক দুর্যোগ বলে না। বর্তমানে দুর্যোগগুলো পরোক্ষভাবে মানব সৃষ্ট। আমাদের ছোটবেলা থেকেই দুর্যোগ নিয়ে চিন্তা ভাবনা করতে হয়। কারণ, আমদের দেশে দুর্যোগ মোকাবিলা করতে করতে বড় হতে হয়। তবে দেশের অনেক মানুষই জানে না বন্যা বা দুর্যোগ প্রবণ এলাকায় গেলে কি করতে হয়। তাই আমাদের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় প্রশিক্ষিত জনগোষ্ঠী তৈরিতে মনোযোগ দিতে হবে। প্রয়োজনে শিক্ষা ব্যবস্থায় এই বিষয়ে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে৷
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে অসহায় মানুষের প্রতি বেশি নজর দেওয়ার প্রয়োজন আছে উল্লেখ করে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মো মিজানুর রহমান বলেন, দুর্যোগে বেশি সমস্যায় পরে বেশি অসহায় মানুষ, তারাই বেশি ভিকটিম হয়। কিন্তু যারা আর্থিকভাবে সচ্ছল তাদের দুর্যোগের কারণে তেমন একটা ভোগান্তিতে পড়তে হয় না। তাই দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে আমরা অসহায় মানুষের প্রতি বেশি নজর দিয়ে থাকি। পাশাপাশি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় আমরা সারা দেশে প্রাত ৭৭ হাজারের বেশি ভলান্টিয়ারকে প্রশিক্ষণ দিয়ে তৈরি করেছি।
তিনি বলেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় আমাদের যে ধরনের অবকাঠামো তৈরি হয়েছে তা বিশ্বের কাছে প্রশংসনীয়। এমনকি জাতিসংঘ থেকে প্রতিনিধিরা যখন বাংলাদেশে এসেছিলেন তারা আমাদের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় উন্নত অবকাঠামো দেখে অনেক প্রশংসা করেছেন।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. কামরুল হাসান বলেন, বাংলাদেশে আমরা প্রতিবছর দুর্যোগ প্রশমন ও প্রস্তুতি দিবস পালন করে থাকি। ১৯৭০ সালে ঘুর্ণিঝড়ে যেখানে দেশে প্রায় ১০ লাখ লোক মারা গিয়েছিল। সেখানে সম্প্রতি ঘূর্ণিঝড় মোখায় আমাদের মৃত্যু শূন্যতে নিয়ে এসেছি। এর কারণ হচ্ছে দুর্যোগ এর পূর্ব প্রস্তুতির ফল। আমরা আগে এমন ধরণের দুর্যোগ হলে জনগণকে সরিয়ে নিয়ে আসতাম। কিন্তু এখন দুর্যোগ সহনশীল আবাসন তৈরির কারণে এখন আর তেমন ভাবে জনগণকে সরাতে হচ্ছে না। তবে যেসকল দুর্যোগে আমরা আগাম খবর বা পূর্ভাবাস জানতে পাই না, যেমন ভূমিকম্প, অগ্নিকাণ্ড সেগুলো মোকাবিলায় আমরা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেই।
তিনি বলেন, লিবিয়ায় বন্যায় সর্বপ্রথম বাংলাদেশ সাড়া দিয়েছে। আমরা সেখানে তাঁবু থেকে শুরু করে প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অনেক কিছু পাঠিয়েছি৷ যেটা আন্তর্জাতিক মহলে বাংলাদেশের অনেক প্রশংসা হয়েছে।
গোলটেবিল আলোচনায় উদ্বোধনী বক্তব্য দেন বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রধান বার্তা সম্পাদক কামাল মাহমুদ। উপস্থিত ছিলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রকল্প পরিচালক ড. মো মনিরুজ্জামান, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) মো ফিরোজ উদ্দিন, পরিচালক (প্রশাসন) যুগ্ম-সচিব বিপুল চন্দ্র বিশ্বাস, মুজিব কিল্লা নির্মাণ সংস্কার ও উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো. জানে আলম, প্রকল্প উপ-প্রকল্প পরিচালক মো আব্দুল কুদ্দুস বুলবুল, বন্যা প্রবণ ও নদী ভাঙ্গন এলাকায় বন্যার আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণ (৩য় পর্যায়) প্রকল্প পরিচালক (যুগ্ম সচিব) মোহাম্মদ তাসারফ হোসেন ফরাজী, ভূমিকম্প অন্যান্য দুর্যোগের অনুসন্ধান উদ্ধার পরিচালনা ও জরুরি যোগাযোগের জন্য যন্ত্রপাতি সংগ্রহ (৩য় পর্যায়) প্রকল্প পরিচালক (যুগ্ম সচিব) কাজী শফিকুল আলম, উপ-প্রকল্প পরিচালক উপসচিব আবু সাইদ মো কামাল, ১৫ মি. দৈর্ঘ্যের সেতু কালভার্ট নির্মাণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক (যুগ্ম সচিব) মো. শফিকুল ইসলাম, প্রকল্পের উপ-পরিচালক মো ইসমাইল হোসেন, আরবান রেজিলেয়েন্স প্রকল্প (ডিডিএম পার্ট) প্রকল্প পরিচালক যুগ্ম সচিব ড. এটিএম মাহবুব-উল-করিম, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের পরিচালক (ত্রাণ) মো. নূরুল হক চৌধুরী, উপ-পরিচালক (মূল্যায়ন-১) উপসচিব মো. শাহাবুদ্দিন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা উত্তরণ মন্ত্রণালয়ের পরিকল্পনা (২) উপসচিব আবু ইউসুফ মোহাম্মদ রাসেল, উপ- পরিচালক (প্রশাসন ২) এস এম সোহরাব হোসেন, উপ পরিচালক (পরিকল্পনা) মো. ইউনুস আলী, পরিচালক (এম আই এম) (চ: দ:) নিতাই চন্দ্র দে সরকার, গ্রামীণ মাটির রাস্তা সমূহ টেকসই করনের লক্ষ্যে হেরিং বোন অ্যান্ড (এইচবিবি) করণ (২য় পর্যায়) উপ-প্রকল্প পরিচালক মো আওলাদ হোসেন, প্রোগ্রামার (চ: দ:) মো. মানসুরুল হক, নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ২১০০ ঘণ্টা, অক্টোবর ৫, ২০২৩
ইএসএস/এমজে