ঢাকা: মুন্সীগঞ্জের লৌহজং থানার ইজিবাইকচালক মোস্তফা মাদবর হত্যাকাণ্ডের ক্লুলেস মামলার রহস্য উদঘাটনসহ হত্যাকাণ্ডে জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-১০)।
বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) বরিশালের গৌরনদী ও মুন্সীগঞ্জের পদ্মা উত্তর থানার মাওয়া চৌরাস্তা এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
র্যাব-১০ এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দীন জানান, মুন্সীগঞ্জের লৌহজং থানার দক্ষিণ মেদেনী মন্ডল এলাকার বাসিন্দা মোস্তফা মাদবর (১৮) ইজিবাইক চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। গত ১ অক্টোবর বিকেলে তিনি ইজিবাইক নিয়ে যাত্রী পরিবহনের জন্য বাসা থেকে বের হন।
প্রতিদিনের মতো রাতে বাসায় ফিরে না আসায় পরিবারের লোকজন তাকে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ করতে থাকেন। এক পর্যায়ে পরদিন ২ অক্টোবর সকালে ফেসবুকে পরিবারের লোকজন জানতে পারেন লৌহজংয়ের হলদিয়া এলাকার একটি ডোবার পাশে গলায় রশি পেঁচানো অবস্থায় অজ্ঞাত এক ব্যক্তির মরদেহ পড়ে আছে।
পরে মোস্তফার বাবা ও তার স্বজনরা ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহটি শনাক্ত করে। এ ঘটনায় মোস্তফার বাবা আব্দুল হক মাদবর (৫০) একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
র্যাব-১০ এর অধিনায়ক বলেন, এ ঘটনায় জড়িত আসামিদের আইনের আওতায় আনতে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি ও ছায়াতদন্ত শুরু করে র্যাব। এরই ধারাবাহিকতায় ৫ অক্টোবর তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় বরিশালের গৌরনদী বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে হত্যাকাণ্ডের হোতা মিরাজুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেওয়া তথ্যমতে মাওয়া চৌরাস্তা এলাকায় অভিযান চালিয়ে স্বপন ফরাজী ও পাপ্পু সরদারকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, গ্রেপ্তার মিরাজ এই হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী। সে তার সহযোগী স্বপন ও পাপ্পুকে নিয়ে মোস্তফাকে হত্যা করে তার ইজিবাইক ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করেন। সে অনুযায়ী ১ অক্টোবর মিরাজ, স্বপন ও পাপ্পু মাওয়া চৌরাস্তা এলাকা থেকে মোস্তফার ইজিবাইকে যাত্রী হিসেবে ওঠেন।
সুবিধাজনক স্থান হলদিয়া এলাকায় পৌঁছালে তারা মোস্তফাকে ইজিবাইক থেকে নামতে বলেন। ইজিবাইক থেকে নামার সঙ্গে সঙ্গে স্বপন মোস্তফার গলায় রশি পেঁচিয়ে ধরেন তারা। এতে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। এ সময় পাপ্পু মোস্তফার দুই পা চেপে ধরেন এবং মিরাজ মুখ মাটির সঙ্গে চেপে ধরে তার মৃত্যু নিশ্চিত করেন।
এরপর মরদেহ ঘটনাস্থলের পাশে একটি ডোবায় ফেলে রেখে মোস্তফার ইজিবাইকটি নিয়ে পালিয়ে যান তারা।
গ্রেপ্তাররা ইজিবাইক চোর চক্রের সক্রিয় সদস্য। পাপ্পুর বিরুদ্ধে ঢাকার কদমতলী থানায় একটি ছিনতাই মামলা এবং মিরাজের বিরুদ্ধে বরিশাল জেলার উজিরপুর থানার একটি মামলা বিজ্ঞ আদালতে বিচারাধীন। গ্রেপ্তারদের সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তরের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৪১৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ৬, ২০২৩
পিএম/আরএইচ