ঢাকা: ঋণখেলাপি শুধু বাংলাদেশেই নয়, সারা পৃথিবীতে আছে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। যেখানে ঋণ দেওয়া হয়, সেখানে কিছু না কিছু ঋণখেলাপি থাকে বলেও তিনি জানান।
বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) জাতীয় সংসদের অধিবেশনে সুরক্ষিত লেনদেন (অস্থাবর সম্পত্তি) বিল–২০২৩ পাসের সময় বিরোধী দলের সদস্যদের সসালোচনা প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রী এসব কথা বলেন। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের পক্ষে তিনি বিলটি পাসের প্রস্তাব করেন।
আইনমন্ত্রী বলেন, ঋণখেলাপি শুধু এখন হয় নাই। এর ইতিহাস বলতে গেলে সারা রাত চলে যাবে। ঋণখেলাপি শুধু বাংলাদেশেই নয়, সারা পৃথিবীতে আছে। যেখানে ঋণ দেওয়া হয়, সেখানে কিছু না কিছু ঋণখেলাপি থাকে। যদি এমন হতো, ঋণখেলাপির কালচার বন্ধে সরকার কোনো ব্যবস্থা নেয়নি, তাহলে ওনারা বলতে পারতেন। ঋণ সুরক্ষিত ও উদ্ধারের জন্য সরকার উদ্যোগ নেয়। মহাজন ও এনজিওদের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে ঘটিবাটি, বাড়িঘর, শাড়ি এবং শেষ পর্যন্ত আর কী দিতে হয়, সেটা বললাম না। এরকম অবস্থা যেন না হয়, সেই জন্য সরকার উদ্যোগ নিয়েছে। ক্ষুদ্রঋণে ২০-৪০ শতাংশ সুদ নিয়ে নোবেল পুরস্কার পাওয়া যায়, কিন্তু মানুষের উন্নয়ন করা যায় না, মানুষের ক্ষতি হয়। এটার জন্য আইনটি করা হচ্ছে।
এ বিলের সমালোচনা করে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফখরুল ইমাম বলেন, আইনটির মাধ্যমে মানুষের পকেটে হাত দেওয়া হয়েছে। এখন ব্যাংকের যে অবস্থা, ১০টি ব্যাংকের মূলধন জোগান দিতে হচ্ছে সরকারকে। ১৫টি ব্যাংকের অবস্থা খুবই খারাপ। ব্যাংক দেউলিয়া হয়ে গেছে। এই পদ্ধতিতে গেলে জনগণ দেউলিয়া হয়ে যাবে।
জাতীয় পার্টির পীর ফজলুর রহমান বলেন, স্থাবর সম্পত্তি দিয়ে ব্যাংকগুলো যে ঋণ দিয়েছে, সেটার অবস্থাই ভয়াবহ। যারা স্থাবর সম্পত্তি দিয়ে ঋণ নিয়ে খেলাপি হয়েছেন, তাদের দেওয়ার মতো স্থাবর সম্পত্তি কিছুই নেই। এখন তারাই অস্থাবর সম্পত্তি দিয়ে ঋণ নেবেন। অস্থাবর সম্পত্তি দিয়ে লুটপাটের সুযোগ করে দেওয়ার জন্য আইনটি নিয়ে আসা হয়েছে। বড় বড় ঋণখেলাপিদের সুবিধা দিতে এই আইন করা হচ্ছে।
রওশন আরা মান্নান বলেন, অস্থাবর সম্পত্তি তো অস্থায়ী। কিছুদিন পরে এ সম্পত্তি থাকবে না। স্থায়ী সম্পদ বাড়ি-ঘরের দলিল দিয়ে, ব্যাংকে নকল দলিল দিয়ে কত শত কোটি টাকা উঠিয়ে নিয়ে পাচার করেছে। এখন অস্থায়ী সম্পত্তি রেখে ঋণ দেওয়ার সুযোগ থাকলে ব্যাংকে কোনো টাকা থাকবে না।
হাফিজ উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, অর্থমন্ত্রী ব্যবসায়ী মানুষ, উনি ওনার দিকটা বুঝবেন। আইনমন্ত্রীর আইনের দিকটা দেখা উচিত ছিল। ওনার মাধ্যমে না উত্থাপিত হলে খুশি হতাম। অর্থমন্ত্রী সংসদে আসেন না। উনি শারীরিকভাবে অসুস্থ। অনেক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী আছেন। ওনার মন্ত্রণালয়ে যদি প্রতিমন্ত্রী নিয়োগ হতো, তাহলে এ কষ্টটা অন্য মন্ত্রীদের করতে হতো না।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৪, ২০২৩
এসকে/এমজেএফ