ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ১৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

রোয়াংছড়ি ইউএনওর বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ৭, ২০২৩
রোয়াংছড়ি ইউএনওর বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ

বান্দরবান: বান্দরবানের রোয়াংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. খোরশেদ আলম চৌধুরীর বিরুদ্ধে কর্মচারীর বেতন ও প্রতিশ্রুতিকৃত টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ দিয়েছেন এক চেইন ম্যান।

মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) ভুক্তভোগী একই অফিসের কর্মচারী মোহাম্মদ ফয়সাল বিষয়টি জানান।

মোহাম্মদ ফয়সাল বলেন, ২০২০ সালে আউট সোর্সিং এর মাধ্যমে রোয়াংছড়ি ভূমি অফিসে চেইনম্যান পদে যোগদান করি। আগের কর্মকর্তাদের সময় পদ অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করতে পারলেও বর্তমান কর্মকর্তা মো. খোরশেদ আলম চৌধুরী তাকে দিয়ে নিজের বাসার জন্য বাজার করা, ঘর ঝাড়ু দেওয়া, এমনকি নিজের কাপড়-চোপড় পরিষ্কার করানোর কাজও করাতেন। একদিন কর্মকর্তার স্ত্রীর কাপড় পরিষ্কার করতে অস্বীকৃতি জানালে তখন অকথ্য ভাষায় গালি-গালাজ করে চাকরিচ্যুত করার হুমকি দেন। এর পর থেকে অফিসে গেলে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করতে বাধা দিতেন।

অভিযোগের নথি সূত্রে জানা যায়, এর আগে উপজেলার ছাইঙ্গ্যা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের খুশিদা নাহারের নামে বরাদ্দকৃত আশ্রয়ণ প্রকল্পের একটি ঘর কোনো ঠিকাদার নির্মাণ করতে রাজি না হওয়ায় ঘরটি ফয়সালকে নির্মাণ করে দিতে বলেন ইউএনও। এ কাজে ফয়সাল অপারগতা জানালেও, লোকসান হলে ইউএনও ক্ষতিপূরণ দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন। পরে আশ্বাস পেয়ে ২,৮৩,৫০০ (দুই লাখ তিরাশি হাজার পাঁচশ) টাকা সরকারি বরাদ্দের ঘর নির্মাণের কাজ শুরু করলে ইউএনও ফয়সালের মাধ্যমে প্রথম ধাপে ১,৫০,০০০ (এক লাখ পঞ্চাশ হাজার) টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করান। সেখান থেকে ইউএনও৪০,০০০ (চল্লিশ হাজার) টাকা নিজে রেখে দিয়ে ১,১০,০০০ (এক লাখ দশ হাজার) টাকা দেন। দ্বিতীয় ধাপে ৫০,০০০ (পঞ্চাশ হাজার) ও পরবর্তীতে আরও ৪০,০০০ (চল্লিশ হাজার) সহ মোট ২,০০,০০০ (দুই লাখ) টাকা দেন।

একপর্যায়ে কাজের জন্য প্রদত্ত টাকা শেষ হয়ে গেলে বাকি কাজ শেষ করতে ইউএনওর কাছে টাকা চাইতে গেলে, তিনি (ইউএনও) বলেন, তুই কাজ নিয়েছিস তুই যেমনে পারিস কাজটি শেষ করে বুঝায় দে, না হলে চাকরিচ্যুত ও মামলা করবেন বলে হুমকি দেন। উপায় না পেয়ে ঋণ গ্রহণ করে কাজটা চালিয়ে যান ফয়সাল।  

বর্তমানে আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে উপায়ান্ত না দেখে পাওনা টাকা ফিরে পেতে গতকাল ৬ নভেম্বর ইউএনওর বিরুদ্ধে বান্দরবানের জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রোয়াংছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসের কয়েকজন কর্মচারী জানান, মো. খোরশেদ আলম চৌধুরী রোয়াংছড়ি (ইউএনও) ও ভূমি অফিসের দ্বায়িত্ব গ্রহণের পর নানা ধরনের অনিয়মের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছেন সব কর্মচারীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার ও নানা রকমের হয়রানি করছেন তিনি কর্মচারীরা উপজেলা নির্বাহীকর্মকর্তার এমন আচরণের তীব্র প্রতিবাদ জানান এবং তার বিচার দাবি করেন।

এ বিষয়ে বান্দরবানের জেলা প্রশাসক (ডিসি) শাহ্ মোজাহিদ উদ্দিন জানান, রোয়াংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া গেছে, সেইসঙ্গে যিনি অভিযোগ দিয়েছেন একই অফিসের কর্মচারী মোহাম্মদ ফয়সাল তার বিরুদ্ধেও ইতোপূর্বে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। দুটো বিষয়টি তদন্ত করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২০১৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৭, ২০২৩
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।