ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

মেট্রোরেলে ‘অ্যানালগ’ বিজ্ঞাপনে যাত্রীরা ক্ষুব্ধ

নিশাত বিজয়, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৩, ২০২৩
মেট্রোরেলে ‘অ্যানালগ’ বিজ্ঞাপনে যাত্রীরা ক্ষুব্ধ ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: একবিংশ শতকের প্রথম দশকেই ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ। ক্ষমতায় এসে দেশের উন্নয়নে নানা কর্মযজ্ঞ করেছে দলটি।

আওয়ামী লীগ সরকারের নানা উন্নয়ন সূচির সবচেয়ে বড় অধ্যায় মেট্রোরেল।

নিজেদের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে এগিয়ে যেতে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের সংকল্পে মেট্রোরেল দলটিকে এনে দিয়েছে বিরাট সফলতা। তবে এ প্রকল্পে নানা বিতর্ক এসেছে। সর্বশেষ বিতর্ক মেট্রোরেলের কোচগুলোয় সেঁটে দেওয়া বিজ্ঞাপনকাণ্ড নিয়ে।

ডিজিটাল বাংলাদেশের আধুনিক গণপরিবহন হিসেবে চলতি বছর যাত্রা শুরু করে মেট্রোরেল। প্রকল্পটি চালু হওয়ার পর বেশি ভাড়া, টয়লেট ইজারা, সংশ্লিষ্টদের কয়েকজনের বাজে আচরণ- প্রশ্ন তুলেছিল। তবে, স্টেশনের স্থাপনা, সেবা সম্পর্কিত প্রশ্নে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন সাধারণ যাত্রীরা। তবে, পরিচ্ছন্ন মেট্রোরেলের কোচে ‘অ্যানালগ’ বিজ্ঞাপনে তারা ক্ষুব্ধ।

এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে যাত্রীরা বলছেন, মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ আয় বাড়াতে বিজ্ঞাপন দিতে পারে। কিন্তু পোস্টারের মতো যত্রতত্র বিজ্ঞাপন না দিয়ে ডিজিটাল ডিসপ্লের মাধ্যমে প্রচারণা করতে পারত। তাহলে আধুনিক এ বাহনের সৌন্দর্য মলিন হতো না।

সোমবার (১৩ নভেম্বর) দুপুরে মেট্রোরেলের আগারগাঁও স্টেশন ঘুরে দেখা গেছে, একটি কোচে একটি কোম্পানির কিছু বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে পোস্টারের মাধ্যমে। এটি দেখে যাত্রীরা বেশ বিরক্ত।

দিন কয়েক আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও কোচটির একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। এতে নেটিজেনরাও বিরক্তি প্রকাশ করে।

সৌহার্দ্য নামে উত্তরা উত্তর থেকে আসা এক যাত্রী মেট্রোয় বিজ্ঞাপন প্রচারের এমন মাত্রায় বিরক্তি প্রকাশ করে বলেন, বিজ্ঞাপন দেবে দিক, কিন্তু এমনভাবে দিয়েছে মেট্রোরেলের সৌন্দর্য নষ্ট হয়েছে। ডিজিটাল বিজ্ঞাপন দিলে ভালো হয়, তবে যেন ঘিঞ্জি না লাগে।

আরেক যাত্রী প্রশ্ন করেন, ডিজিটাল যুগে অ্যানালগ বিজ্ঞাপন কেন? মেট্রোর মতো অত্যাধুনিক প্লাটফর্মে এমন বিজ্ঞাপন কেন? তার মতে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ ও বিজ্ঞাপন সংস্থার রুচিবোধ, ব্র্যান্ডিং, মার্কেটিংয়ের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন আছে। বিশ্বের সব মেট্রোয় বিজ্ঞাপন থাকে; তবে সৌন্দর্য উপেক্ষা করে নয়। এরূপ পোস্টারিং দেখে মনে হচ্ছে কলিকাতা হারবালের বিজ্ঞাপন দাতারাও এদের চেয়ে ভালো জ্ঞান-বুদ্ধি রাখে।

প্রধানমন্ত্রীর সাবেক ডেপুটি প্রেস সচিব আশরাফুল আলম খোকনও এ বিষয়ে ফেসবুকে নিজের প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন। তিনি লিখেছেন- বিশ্বের সব মেট্রোরেলেই বিজ্ঞাপন থাকে, কিন্তু সব কিছুরই একটা সৌন্দর্য থাকে। এই ছবিটা অনলাইন থেকে পাওয়া, এডিট করা মনে হচ্ছে না।

তিনিও মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ এবং বিজ্ঞাপনদাতার রুচিবোধ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। খোকন লিখেছেন- এটা যদি সত্য হয়ে থাকে, তাহলে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ এবং বিজ্ঞাপনদাতা দুইজনেরই রুচিবোধ, ব্র্যান্ডিং, মার্কেটিংয়ের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন আছে। মনে হচ্ছে ফার্মগেটে কোনো দেয়ালের ওপর পোস্টার লাগানো হয়েছে। এতো সুন্দর একটা উদ্যোগ, এভাবে নষ্ট করা উচিত না।

বিজ্ঞাপনের বিষয়ে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড কোম্পানি সচিব (যুগ্ম সচিব) মোহাম্মদ আবদুর রউফ বলেন, আমরা আইনসম্মতভাবে এক বছরের জন্য বিজ্ঞাপনের টেন্ডার বরাদ্দ দিয়েছি। আমাদের ডিসপ্লেতেও বিজ্ঞাপন প্রচার হবে। বিজ্ঞাপন মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষের আয়ের একটি উৎস। সারা বিশ্বেই এটা আছে। আয় না হলে যাত্রীদের ভাড়ার খরচ বেড়ে যাবে।

তিনি বলেন, বিজ্ঞাপন দেওয়ার ক্ষেত্রে আমাদের কিছু শর্তাবলি আছে। আমরা এখন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখব, কীভাবে এই শর্তগুলো যাত্রীবান্ধব হয়। কারণ যাত্রীদের জন্যই তো আমরা। তাদের কাছে খারাপ লাগে এমন কিছু আমরা অবশ্যই করব না। যেই বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে তা আমরা আরও বিস্তারিত দেখব কেন সৌন্দর্যহানি হলো।

কী করলে আরও ভালো হবে সেটাও দেখা হবে বলে জানিয়েছেন মেট্রোরেলের এই কর্মকর্তা।

বাংলাদেশ সময়: ২০১৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৩, ২০২৩
এনবি/এসআইএ/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।