বরিশাল: ৫ বছরের ব্যবধানে বাৎসরিক আয় কমেছে বরিশাল-৬ (বাকেরগঞ্জ) আসনের একাদশ জাতীয় সংসদের সদস্য ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী নাসরিন জাহান রতনার।
জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য নাসরিন জাহান রতনার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ বেড়েছে।
আর সম্পদ বাড়লেও স্বামীর কাছ থেকে নেওয়া দেড় কোটি টাকার ওপরের লোন ৫ বছরেও শোধ করতে পারেননি নাসরিন জাহান রতনা।
২০২৩ সালের নির্বাচন কমিশনে দাখিল করা হলফনামায় প্রার্থী নাসরিন জাহান রতনা তার বাৎসরিক আয় দেখিয়েছেন ৩০ লাখ ৬৮ হাজার টাকা। অথচ ২০১৮ সালের নির্বাচনী হলফনামায় তিনি বাৎসরিক আয় দেখিয়েছিলেন ৫৫ লাখ ৮৮ হাজার টাকারও বেশি। চলতি বছরের হলফনামায় এই প্রার্থী সবচেয়ে বেশি বাৎসরিক আয় দেখিয়েছেন অন্যান্য (করমুক্ত আয়) খাতে ১৭ লাখ ২৫ হাজার ৫ শত টাকা।
আবার ২০১৮ সালের হলফনামায় কৃষিখাত থেকে ১১ লাখ ৮৬ হাজার টাকা আয় হলেও এবারের হলফনামায় কৃষি জমি যেমন দেখাননি তেমনি এ খাত থেকে আয়ও দেখাননি। অথচ স্থাবর সম্পদে ২০১৮ সালের হলফনামায় তিনি ৮ লাখ ৩৯ লাখ ৬৬৭ টাকা মূল্যের ১৬৭ শতাংশ জমির কথা উল্লেখ করেছিলেন।
তবে অস্থাবর সম্পদে আর্থিক হিসাব বলছে, ২০১৮ সালের থেকে ২০২৩ এ তার সম্পদ কিছুটা বেড়েছে। ২০১৮ সালের হলফনামায় ৩ কোটি ৪৩ লাখ ২৭ হাজার টাকার বেশি সম্পদ দেখিয়েছিলেন এ প্রার্থী। এবারের হলফনামায় তা ২৫ লাখ বেড়ে ৩ কোটি ৬৮ লাখ ১১ হাজার টাকা দেখানো হয়েছে।
একইভাবে স্থাবর সম্পদে আর্থিক হিসাব বলছে, ২০১৮ সাল থেকে ২০২৩ এ সম্পদ বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি। ২০১৮ সালের হলফনামায় ৩৭ লাখ ১৫ হাজার টাকার বেশি সম্পদ দেখিয়েছিলেন প্রার্থী, যেখানে ৮ লাখ ৩৯ হাজার টাকার অধিক মূল্যের ১৬৫ শতাংশ অকৃষি জমি, ঢাকার পূর্বাচলে ১৮ লাখ ৭৫ হাজার টাকা মূল্যের ৭ দশমিক ৫০ কাঠার অকৃষি জমি ১০ লাখ টাকা মূল্যের বাকেরগঞ্জের বসত ভিটার দালান ও পৈত্রিক সূত্রে (মূল্য অজানা) একটি ফ্ল্যাট পাওয়ার কথা উল্লেখ করেছিলেন।
তবে ২০২৩ সালের হলফনামায় কোনো কৃষি জমি না থাকলেও বেড়েছে অকৃষি জমির মূল্য। প্রার্থীর নিজের ৮৯ লাখ ৭৭ হাজার ৯৪২ টাকার স্থাবর সম্পদের মধ্যে ৭৯ লাখ ৭৭ হাজার টাকা মূল্যের পরিমাণ উল্লেখহীন অকৃষি জমি, ১০ লাখ টাকা মূল্যের বাকেরগঞ্জের বসত ভিটার দালান ও পৈত্রিক সূত্রে দালান/অ্যাপার্টমেন্ট পাওয়ার কথা উল্লেখ করেছেন।
একইভাবে সম্পদ বেড়েছে এই প্রার্থীর স্বামী এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদারেরও। ২০২৩ সালের হলফনামা অনুযায়ী ৮০ তোলা স্বর্ণ ছাড়াই ৩৯ কোটি ২৫ লাখ ৯৬ হাজার টাকার বেশি অস্থাবর সম্পদ আছে তার। আর ২০১৮ সালের হলফনামায় কোনো স্বর্ণের কথা উল্লেখ না থাকলেও ৩৭ কোটি ৫১ লাখ ৫০ হাজার টাকার বেশি সম্পদ দেখানো হয়েছিলো অস্থাবর হিসেবে। যদিও ২০১৮ সালের হলফনামায় ৪টি গাড়ি ছিল রুহুল আমিনের সেখানে ২০২৩ সালে দুইটি গাড়ির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। আবার এবারের বেসরকারি একটি ব্যাংকের ভিসা কার্ডে স্বামীর ৫০০-৭০০০ আমেরিকান ডলার থাকার কথাও বলেছেন হলফনামায়।
এছাড়া ২০২৩ সালের হলফনামা অনুযায়ী রুহুল আমিনের ৩৬ কোটি ৭৬ লাখ টাকার বেশি মূল্যের কৃষি ও অকৃষি জমি এবং দালান দেখানো হয়েছে স্থাবর সম্পদ হিসেবে। আর ২০১৮ সালের হলফনামায় মূল্য অজানা ৩০ কাঠা পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া জমির কথা উল্লেখ ছিল। এছাড়া ২ কোটি ৪৫ লাখ টাকা মূল্যের কৃষি ও অকৃষি জমি এবং দালান দেখানো হয়েছে স্থাবর সম্পদ হিসেবে।
এদিকে ২০২৩ সালের হলফনামায় রতনা তার স্বামীর কাছ থেকে ১ কোটি ৫৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা লোন নেওয়ার কথা উল্লেখ করেন। ২০১৮ সালেও দায়ের ঘরে ব্যক্তিগত ঋণ বাবদ সমপরিমাণ টাকার কথা উল্লেখ করেছিলেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ২০২৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৬, ২০২৩
এমএস/এফআর