ঢাকা: ইসরায়েল কৃর্তক ফিলিস্তিনে গণহত্যা বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন করেছে সম্মিলিত নাগরিক সমাজ। শনিবার (৯ ডিসেম্বর) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এই মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে নাগরিক সমাজের চেয়ারম্যান ড. খালিকুজ্জামান বলেন, আজকে গাজার মানুষ বাস্তুহারা। না আছে তাদের থাকার জায়গা, না আছে তাদের খাওয়ার ব্যবস্থা, না আছে ওষুধের ব্যবস্থা। এর ফলে নানা অসুখের দেখা দিচ্ছে। ইসরায়েল ফিলিস্তিনে যে গণহত্যা চালাচ্ছে সেখানে অর্থ ও অস্ত্র দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা। তাই তারা যখন গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের কথা বলে তখন সেখানে প্রশ্ন থেকে যায়। একদিকে তারা গণহত্যাকে সমর্থন দিচ্ছে, আরেক দিকে গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের কথা বলছে। এগুলো তাদের বন্ধ করতে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আখতারুজ্জামান বলেন, দীর্ঘ সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ফিলিস্তিনি একটি স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনে আন্দোলনরত আছে। ইসরায়েল যখন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, তখন থেকেই ফিলিস্তিনি জনগোষ্ঠী নানা কারণে নির্যাতন ও হত্যার শিকার হয়েছে। পশ্চিমা বিশ্বের দুই-একটি রাষ্ট্র ছাড়া সব দেশই একমত পোষণ করছে। এই যুদ্ধের একমাত্র টেকসই সমাধান হলো, একটি স্বাধীন সার্বভৌম ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠন করা। গতকালও নিরাপত্তা পরিষদের সভায় একটি রাষ্ট্র প্যালেস্টাইনের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছে। পাশাপাশি ইউরোপের একটি দেশ ভোটদানে বিরত থেকেছে। এখানে গণহত্যা সংঘটিত হচ্ছে। যেখানে নিরীহ মানুষ, নারী শিশুদের নির্বিচারে হত্যা করা হচ্ছে।
সম্মিলিত নাগরিক সমাজের সাধারণ সম্পাদক ম. হামিদ বলেন, পৃথিবীর দেড়শ বছরের যুদ্ধের ইতিহাস ঘাটলে দেখা যাবে, কোথাও না কোথাও যুদ্ধ লেগেই আছে। আর এই যুদ্ধের মদদদাতা পশ্চিমা বিশ্ব। তারা যুদ্ধের জন্য অন্য দেশকে বেছে নেয়। অন্য দেশের মানুষকে তারা হত্যা করে রাজনৈতিক স্বার্থে। ইহুদিদের জায়গা দিয়েছিল আরব বিশ্ব। অথচ আজকে প্যালেস্টাইনকে উৎখাত করার জন্য ইসরায়েল নির্বিচারে গণহত্যা করছে। আমেরিকা আজকে তাদের নৌবহর নিয়ে ইসরায়েলের পক্ষে দাঁড়িয়েছে। তাই জাতিসংঘ থেকে যে পাঁচটি দেশের ভোটাধিকার রয়েছে, তা প্রত্যাহার করতে হবে। কারণ এই ভোটাধিকার তারা নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করে মানবকল্যাণে নয়।
গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, এ বছরের সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের অধিবেশনের সাইড লাইনে ১৫ বছরের একজন শিশু তার তিন প্রজন্মের সংগ্রামের কথা তুলে ধরেছে। আমি পশ্চিমা বিশ্বের কাছে প্রশ্ন রাখতে চাই। আর কত মানুষের জীবন নিলে এই যুদ্ধ থামবে। আসলে পশ্চিমা বিশ্বের এই যুদ্ধ নিয়ে একটি উদ্দেশ্য রয়েছে। এই যুদ্ধ কে কেন্দ্র করে ইসরায়েলের কাছে পশ্চিমা বিশ্বের অস্ত্র বিক্রি ১০ গুণ বেড়েছে। প্যালেস্টাইনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে হবে। পাশাপাশি গণহত্যা বন্ধের দাবি জানাচ্ছি।
ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সাধারণ সম্পাদক শামসুর রহমান বলেন, পশ্চিমাদেশ আজ প্যালেস্টাইনে ঘটে যাওয়া গণহত্যার পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। সেখানে বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্যালেস্টাইনের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। জাতিসংঘে যুদ্ধ বিরতির আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। পশ্চিমাদেশের কাছে প্রশ্ন রাখতে চাই, কোথায় আপনাদের মানবাধিকারের পক্ষে অবস্থান, কোথায় আপনাদের গণতন্ত্র? বাংলাদেশের জনগণ সব সময় প্যালেস্টাইনের পাশে ছিল, আছে এবং থাকবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৯, ২০২৩
এসসি/এমজেএফ