ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

বস্তিতে অভিযান, ককটেল-পেট্রলবোমাসহ আটক ৩

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৫৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৬, ২০২৪
বস্তিতে অভিযান, ককটেল-পেট্রলবোমাসহ আটক ৩

ঢাকা: জুরাইন রেললাইনের পাশের বস্তিতে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ ককটেল-পেট্রলবোমাসহ তিনজনকে আটক করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। ওই পথেই বেনাপোল এক্সপ্রেস নামের ট্রেনটি বেনাপোল থেকে ঢাকায় ফিরছিল।

ট্রেনটি কমলাপুর রেলস্টেশনে পৌঁছানোর আগ মুহূর্তে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে পুড়ে মারা  গেছেন চার যাত্রী।

র‌্যাব জানায়, ট্রেনটিতে অগ্নিকাণ্ডের প্রায় তিনঘণ্টা পরই গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ওই বস্তিতে অভিযান চালানো হয়।

বাহিনীটি বলছে, কোনো সম্ভাবনাই উড়িয়ে দেওয়া যায় না। তবে ট্রেনের এ অগ্নিকাণ্ডের সঙ্গে ওই বস্তি থেকে বিস্ফোরক উদ্ধার, কিংবা আটকদের কোনো সংশ্লিষ্টতা রয়েছে কি না বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।

শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) দিনগত রাত ১২টার পর জুরাইন রেলগেইট সংলগ্ন রেললাইনের পাশের ওই বস্তিতে অভিযান চালায় র‌্যাব।

আটকরা হলেন আলমগীর, রাব্বী ও কাশেম। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৩০টি ককটেল ও ২৮টি পেট্রলবোমা উদ্ধার করা হয়।

র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে অনেকেই নাশকতার চেষ্টা করছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে আমরা অনেককেই আইনের আওতায় নিয়ে এসেছি। যেখানেই তথ্য পাচ্ছি সেখানেই অভিযান পরিচালনা করছি। শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) রাত ৯টার দিকে বেনাপোল থেকে আসা একটি ট্রেনে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। যারা যাত্রী ছিলেন তাদের বক্তব্য অনুযায়ী, এটা নাশকতা ছিল।

ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে র‌্যাব-৩ ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে। গোয়েন্দা দল প্রাথমিকভাবে গোয়েন্দা তথ্য পায়, রেললাইনের পাশের এই বস্তিতে সন্দেহজনক মানুষের চলাচল রয়েছে। এর ভিত্তিতে বস্তিতে প্রাথমিকভাবে অভিযান চালিয়ে তিনজনকে আটক করা হয়। তারা এখানে বসে বিপুল পরিমাণ ককটেল ও পেট্রলবোমা তৈরি করছিলেন।

তিনি বলেন, রেললাইনের পাশের এ জায়গাটা অনেক সেনসিটিভ। আমরা যে পরিমাণ পেট্রলবোমা উদ্ধার করেছি, সেগুলো দিয়ে এখানে বসে যে কোনো ট্রেন বা যে কোনো জায়গায় ব্যাপক নাশকতা করা সম্ভব ছিল বলে আমাদের কাছে মনে হয়েছে।

আমরা যে তিনজনকে আটক করেছি তাদের কাছ থেকে আয়নাল নামে এক ব্যক্তির নাম পেয়েছি। তিনি তাদের দিয়ে ককটেল ও পেট্রলবোমা বানাচ্ছিলেন, এর আগেও তিনি তাদের দিয়ে আরও বানিয়েছিলেন। তারা আয়নালের প্রাথমিক পরিচয় দিতে পারেনি। তবে টাকার বিনিময়ে তারা ককটেল ও পেট্রোল বোমা তৈরি করছিলেন বলে জানিয়েছেন।

আটকরা জানিয়েছেন আয়নাল ফতুল্লায় থাকেন, বিভিন্ন সময় নাশকতার কাজে তারা এসব আয়নালকে সরবরাহ করেছেন। আয়নালকে আটকের জন্য আমাদের গোয়েন্দারা কাজ করছে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যে ট্রেনটিতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে, কোথা থেকে কীভাবে আগুন দেওয়া হয়েছে তা জানতে আমাদের গোয়েন্দারা কাজ করছে। যারা যাত্রী ছিলেন তারা সন্দেহজনক কয়েকজনকে দেখেছেন বলেও জানিয়েছেন।

কোনো সম্ভাবনাই উড়িয়ে দেওয়া যায় না। ককটেল ও পেট্রলবোমাসহ যাদের আটক করা হয়েছে তাদের আমরা ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করবো। অগ্নিসংযোগের সঙ্গে এটার কোনো যোগসূত্র আছে কিনা  এ ব্যাপারে আমাদের গোয়েন্দারা জিজ্ঞাসাবাদ করবে। তবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আমাদের সময় প্রয়োজন।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের গোয়েন্দারা এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে কাজ করছে। কারা কখন কোন স্টেশন থেকে কয়জন উঠেছে, কারা কোন বগিতে ছিল, যে বগিতে আগুন লেগেছে সেখানে কারা ছিলেন এবং কাদের মুভমেন্ট সন্দেহজনক ছিল খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যারা অগ্নিদগ্ধ হয়ে হাসপাতালে আছেন তাদের সঙ্গে আমরা কথা বলছি। আমরা শুধু একটি কথাই বলতে চাই, যারা এমন অমানবিকভাবে জনগণের জানমালের ক্ষতি করেছে তাদের অবশ্যই খুঁজে বের করে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেবো।

র‌্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, সুষ্ঠু পরিবেশে যেন ভোটাররা ভোট দিতে পারেন, এজন্য র‌্যাব অঙ্গীকারবদ্ধ। র‌্যাবের অঙ্গীকার, নিশ্চিন্তে ভোটাধিকার। এ স্লোগানকে সামনে রেখে আমাদের প্রতিটি ব্যাটালিয়ন কাজ করছেন। যারা যেখানেই নাশকতা বা সহিংসতার চেষ্টা করবে যারা জনগণের জানমালের ক্ষতির চেষ্টা করবে, যারা রাষ্ট্রীয় সম্পদ বিনষ্ট করার চেষ্টা করবে তাদের আমরা কঠোরভাবে দমন করবো এবং তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৭৫৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৬, ২০২৪
পিএম/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।