ঢাকা: জটের শহরে একুশে বই মেলা আসলে পাঠক আর প্রকাশকেরা ভোগান্তিতে পড়েন যানজটে। পাঠকেরা সময় নিয়ে আসতে পারেন না, অন্যদিকে পাঠক না আসায় ক্ষতি হয় প্রকাশকদের।
তবে মেট্রোরেলের সেবার আওতায় প্রথমবারের মতো যুক্ত হয়েছে বইমেলা। দ্রুত সময়ের মধ্যে এক স্থান থেকে আরেক স্থানে যাতায়াতের কারণে এবার মেট্রোরেলে করে ঢাকার দূরবর্তী এলাকা থেকেও মানুষ আসার সুযোগ পাবেন বলে মনে করেন মেলায় আসা যাত্রীরা।
বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বইমেলা সংলগ্নই রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মেট্রোরেল স্টেশন।
বিকেল ৫টার দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মেলা উদ্বোধন শেষে চলে যাওয়ার পরে থেকেই দর্শনার্থীর সংখ্যা বাড়তে থাকে। আগামী শনিবার থেকে বই মেলার যাত্রীদের ভিড় বাড়বে বলে জানান স্টেশনে দায়িত্বে থাকা স্টাফরা।
মিরপুর থেকে বইমেলায় আসা শরীফ হোসেন বলেন, গতবার রাস্তায় যানজট থাকার কারণে ২-৩ দিন এসেছিলাম। ইচ্ছে থাকলেও যানজটের কারণে সেই আগ্রহ হারিয়ে যায়। এবার একেবারে মেলার গেটের কাছে মেট্রোরেলে নামছি। ফলে সুযোগ বাড়ায় নিয়মিতই আসা হবে।
ছেলিম আহমেদ বলেন, আগে বিকেলে আসার সময়ই আবার যাওয়ার জন্য তাড়া থাকতো। ঘণ্টাখানেক মেলা ঘুরে সন্ধ্যা ৬টা বা ৭টায় বের হলে ফিরতে ফিরতে রাতা ৮টা-৯টা। এবার যাওয়া আসা নিয়ে ভোগান্তিতে পড়তে হবে না। নিয়মিত বইমেলায় আসবো এবার।
মেলায় মেট্রোরেলের কারণে বই বেশি বিক্রি হবে বলে মনে করছেন লেখক-প্রকাশকেরাও।
এ বিষয়ে বই বিক্রিতা সাইদুল ইসলাম বলেন, মেট্রোরেলের জন্য এবার মেলায় আসা সহজ হবে সবার জন্য। অনেকে কয়েকবার করে আসবে তাদের বিভিন্ন বন্ধুবান্ধবদের গ্রুপের সঙ্গে। আশা করছি মেট্রোরেলের কারণে বেনিফিট পাবো।
ঐতিহ্য প্রকাশনীর ব্যবস্থাপক আমজাদ হোসেন কাজল বলেন, মেট্রোরেল চালুর কারণে যাতায়াতের সুবিধা হবে। পাঠক সমাগম বাড়বে। ফলে বেচাবিক্রি ভালো হবে বলে মনে হচ্ছে।
কবি ও জার্নিম্যান বুকস-এর কর্নধার তারিক সুজাত, মেট্রোরেলের কারণে বইমেলায় পাঠক সমাগম হবে। তবে এ পাঠকের ভিড়ে কারা যে প্রকৃত পাঠক সেটি আসলে বুঝে উঠা মুশকিল। দেখা যাবে, বিশেষ দিনগুলোতে বইয়ের প্রকৃত পাঠকেরা তাদের কাঙ্ক্ষিত বইটি সংগ্রহ করতে বেগ পেতে হবে।
সাহিত্যিক মুনতাসীর মামুন বলেন, বইমেলা হচ্ছে সাংস্কৃতিক ঈদ। প্রচুর মানুষ আসবে এবারের বইমেলায়, তারাও সংস্কৃতির সঙ্গে যুক্ত হবে। দ্বিতীয়ত, মেট্রোরেলের কারণে বইমেলায় অনেক মানুষ আসবে যাতায়াত সুবিধার কারণে। একইসঙ্গে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও ভালো আবহাওয়ার কারণে অনেক মানুষ আসবে। আমি আমাদের গণহত্যা জাদুঘরের জন্যে এসেছিলাম, তারপর এখানে এসে (জার্নিম্যান প্রকাশনী) দেখি অনেক মানুষ এসেছেন।
বইমেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব কে এম মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, অবশ্যই আমরা মেলায় আসা মানুষের কথা চিন্তা করে মেট্রোরেল কতৃপক্ষকে অনুরোধ জানিয়েছিলাম তারা যেন রাত পর্যন্ত এটা চালু রাখে। তারা অনুরোধ রেখেছেন মেলা শুরুর ১০ দিন আগের থেকেই রাত ৮টা পর্যন্ত মেট্রোরেল চলছে। এর কারণে যারা মেলায় আসবেন তারা খুব অল্প সময়েই এখন স্বস্তিতেই আসতে পারবেন। আবার যাওয়ার সময়ও ভোগান্তিতে পড়তে হবে না।
মেট্রোরেল থাকায় দীর্ঘসময় দর্শনার্থী-পাঠকরা মেলায় উপস্থিত থেকে মেলাকে প্রাণবন্ত করবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১ , ২০২৪
এনবি/জেএইচ