নীলফামারী: জুয়ার টাকা যোগাতে অপহরণ নাটক সাজিয়ে প্রবাসী বাবার কাছে টাকা দাবি করেন কলেজছাত্র হুমায়ুন কবির (২৩)। পরে পুলিশি তৎপরতায় ধরা পড়ে ঠাই হলো
জেলহাজতে।
সৈয়দপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহা আলম জানান, বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে উদ্ধার হওয়া হুমায়ুন কবিরকে নীলফামারী আদালতে পাঠানো হয়েছে।
সৈয়দপুর থানায় দেওয়া জবানবন্দিতে হুমায়ুন জানান, তার বাবা তহিদুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে কাতারে প্রবাস জীবন কাটাচ্ছেন। ইতোমধ্যে তার বাবা ও মায়ের ডির্ভোস হয়েছে। গত বছর দুয়েক আগে হুমায়ুনের মা বিয়ে করে সাভারে চলে যান। সৎ মায়ের সঙ্গে সৈয়দপুর উপজেলার কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নের হাজারীহাট হুগলিপাড়ায় থাকেন হুমায়ুন।
জবানবন্দিতে হুমায়ুন আরও বলেন, তিনি অনলাইন জুয়াতে আসক্ত হয়ে পড়েছেন। এ অবস্থায় বন্ধুদের কাছে অনেক টাকা ঋণ হয়ে গেছে। এ অবস্থায় গত ২৩ জানুয়ারি সৎ মাকে ফাঁকি দিয়ে তিনি অন্যত্র আত্মগোপন করেন। এ ঘটনায় হুমায়ুনের আপন মা হামিদা বেগম (৪৫) বাদী হয়ে সৈয়দপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। ডায়েরি সূত্র ধরে পুলিশ তৎপরতায় নামে।
সৈয়দপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কল্লোল কুমার দত্ত বলেন, আত্মগোপন করে হুমায়ুন নীলফামারী রেলস্টেশনে হাবিবুর রহমান (৩০) নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন।
হাবিব তাকে তার নিজ বাড়ি নীলফামারী সদর উপজেলার চাঁদের হাট গ্রামে নিয়ে যান। আর সেখানেই সাজানো হয় অপহরণ নাটক। হাবিবের সহযোগিতায় চোখ ও হাতপা বাধা ছবি প্রবাসে হুমায়ুনের বাবার কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয় ইমোর মাধ্যমে। চাওয়া হয় পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ। কিন্তু বিশাল অংকের টাকা দিতে অপরাগতা প্রকাশ করেন হুমায়ুনের বাবা তহিদুল। এক পর্যায়ে তিনি ছেলের মোবাইল নম্বরে বিকাশ অ্যাকাউন্টে ৫০ হাজার টাকা পাঠিয়ে দেন। এরই মধ্যে পুলিশ মোবাইল নম্বর ট্যাক করে হুমায়ুনের অবস্থান শনাক্ত করে। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে অপহরণ নাটকের কথা স্বীকার করেন হুমায়ুন।
নীলফামারী জেলা পুলিশ সুপার মো. গোলাম সবুর বাংলানিউজকে বলেন, ঘটনাটি একটি চরম অবক্ষয়ের গল্প। একজন সন্তান নিজেকে নিজে অপহৃত দেখিয়ে বাবার সঙ্গে প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছে। আমরা এ অপরাধকে গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছি।
বাংলাদেশ সময়: ২১০১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০১, ২০২৪
আরআইএস