ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৯ কার্তিক ১৪৩১, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ১২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

রাতে ঢাকার ছয় এলাকায় লাখ টাকার চাঁদাবাজি: র‌্যাব

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৪, ২০২৪
রাতে ঢাকার ছয় এলাকায় লাখ টাকার চাঁদাবাজি: র‌্যাব

ঢাকা: ‘ঢাকার পাঁচ থেকে ছয়টি এলাকায় পণ্যবাহী ট্রাক থেকে ২০০-৩০০ টাকা চাঁদা আদায় করা হয়। স্পটগুলো থেকে প্রতিদিন আদায় করা হয় লক্ষাধিক টাকা।

বিভিন্ন সংগঠন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নামে পণ্যবাহী ট্রাকে এসব চাঁদাবাজির কারণে অযৌক্তিকভাবে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে’।

শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) রাতে একযোগে রাজধানীর বেশ কয়েকটি এলাকায় অভিযান চালিয়ে চাঁদাবাজির সময় হাতেনাতে ৫১ জনকে গ্রেপ্তারের পর এ কথা জানিয়েছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।

রাজধানীর কারওয়ান বাজার, বাবুবাজার, গুলিস্তান, দৈনিক বাংলা মোড়, ইত্তেফাক মোড়, টিটিপাড়া, কাজলা, গাবতলী ও ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টারসহ বিভিন্ন এলাকায় একযোগে এ অভিযান পরিচালনা করে র‌্যাব।

এ সময় গ্রেপ্তার ৫১ জনের কাছ থেকে নগদ এক লাখ ১২ হাজার টাকা, একটি লেজার রশ্মির লাইট, ছয়টি সিটি করপোরেশনসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের জ্যাকেট, দুটি অন্যান্য লাইট, চারটি আইডি কার্ড, ৪১টি মোবাইল ফোন এবং বিপুল পরিমাণ চাঁদা আদায়ের রশিদ জব্দ করা হয়েছে।

রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

তিনি বলেন, সম্প্রতি অযৌক্তিকভাবে নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে। এজন্য গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ঢাকার বিভিন্ন প্রবেশমুখ ও পাইকারি বাজার এলাকায় পণ্যবাহী ট্রাক থেকে চাঁদা উত্তোলনের সময় হাতেনাতে ৫১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। গ্রেপ্তাররা রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক ও মহাসড়কে পণ্যবাহী গাড়িতে চাঁদাবাজি করে আসছিল। তথাকথিত ইজারাদারদের নির্দেশে কয়েকটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে প্রতিরাতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় রাস্তার ওপর অবস্থান নেয় তারা। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে পণ্যবাহী যানবাহন রাজধানীতে প্রবেশের সময় তারা লেজার লাইট, লাঠি ও বিভিন্ন সংকেতের মাধ্যমে গাড়ি থামিয়ে ড্রাইভারদের থেকে অবৈধভাবে চাঁদা আদায় করে থাকেন। কিছু কিছু ক্ষেত্রে তারা চাঁদা আদায়ের রশিদও দিয়ে থাকেন। ড্রাইভাররা চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে গাড়ি ভাঙচুর, ড্রাইভার-হেলপারকে মারধরসহ প্রাণনাশের হুমকি দিতেন তারা। তারা প্রতিটি ট্রাক ও পণ্যবাহী যান থেকে ২০০-৩০০ টাকা চাঁদা আদায় করে থাকে। কখনো সিটি করপোরেশন, কখনো শ্রমিক সংগঠন, কখনো কল্যাণ সমিতি, কখনো আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নামে এ চাঁদা উত্তোলন করা হয়।

কমান্ডার মঈন বলেন, মধ্যরাতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় যখন পণ্যবাহী ট্রাক প্রবেশ করে তখন চাঁদা উত্তোলন শুরু হয়। একটি গ্রুপ চাঁদা উত্তোলন করে কথিত ইজারাদারদের কাছে জমা দেয়। তারা সিন্ডিকেটের মধ্যে টাকা ভাগ-বাটোয়ারা করে নেয়। চাঁদা উত্তোলনকারীরা প্রতিরাতে মজুরি হিসেবে ৬০০-৭০০ টাকা পান। প্রতিটি স্পট থেকে প্রতিদিন অন্তত লক্ষাধিক টাকা চাঁদা আদায় করা হয়।

তিনি আরও বলেন, রমজানকে সামনে রেখে এ অভিযান অব্যাহত থাকবে। চাঁদাবাজির সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত ওপরের পর্যায়ের কয়েকজনের নাম পেয়েছি, আমরা সেসব বিষয়ে যাচাই-বাছাই করছি। তারা যেই হোক, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৪, ২০২৪
পিএম/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।