ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

দেশে ফিরল দালালের খপ্পরে পড়ে সর্বস্বান্ত হওয়া ১২ বাংলাদেশি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৬, ২০২৪
দেশে ফিরল দালালের খপ্পরে পড়ে সর্বস্বান্ত হওয়া ১২ বাংলাদেশি ফেরত আসা ১২ বাংলাদেশি

ব্রাহ্মণবাড়িয়া: অবশেষে দেশে ফিরল দালালের খপ্পরে পড়ে সর্বস্বান্ত হওয়া ১২ বাংলাদেশি। তারা বিভিন্ন সময়ে দালালদের খপ্পরে পড়ে অবৈধভাবে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বিভিন্ন সময়ে ভারতে আটক হয়েছিলেন।

মঙ্গলবার (০৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলা থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন তারা।

দেশে ফেরত আসা বাংলাদেশিরা হলেন- সুনামগঞ্জ জেলার জয় হরি রায়ের স্ত্রী জবা রানী রায় ও তার ছেলে জগদীশ রায়, নেত্রকোনা জেলার কুদরত আলীর মেয়ে বিউটি, চাঁদপুর জেলার আবু তাহেরের ছেলে রিয়াদ হোসেন, যশোর জেলার মো. সুবহান মিয়ার মেয়ে বিনা বেগম, একই জেলার মো. আজাদ শেখের ছেলে শেখ সাদি, নওগাঁ জেলার মো. শাহীর আলীর মেয়ে শাহিনা বেগম, জামিলপুর জেলার মো. নরুল ইসলামের ছেলে মো. শামীম মিয়া ও তার ভাই সোহান মিয়া, একই জেলার আকবর আলীর ছেলে মো. ফারুক হোসেন, একই জেলার মো. ফারুক হোসেন ও তার স্ত্রী আসমা বেগম, ঝালকাটি জেলার বিল্পব চন্দ্র অধিকারীর মেয়ে তৃষ্ণা অধিকারী।

ত্রিপুরাস্থ বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের সহযোগিতায় তাদের পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এসময় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের অধীনে তাদের জরুরি সহায়তা হিসেবে খাবার, কাউন্সেলিং সেবা ও নগদ দুই হাজার টাকা করে অর্থ সহায়তা দেওয়া হয়। ব্র্যাক মাইগ্রেশন ম্যানেজার সজিব কুমার পাণ্ডে, ডেপুটি ম্যানেজার শায়লা শারমিন ও আখাউড়া উপেজলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাবেয়া আক্তার তাদের হাতে এ সহায়তা তুলে দেন।  

ভারত থেকে ফিরে আসা ব্যক্তিদের নথিপত্র সূত্রে জানা গেছে, দালালের খপ্পরে পড়ে বিভিন্ন সময়ে ১২জন বাংলাদেশি পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে পাচার হয়েছিলেন। পরবর্তীকালে ভারতের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের আটক করে জেলহাজতে পাঠায়। এরপর স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী যোগাযোগ করে তাদের দেশে ফেরার জন্য ভারত সরকারের অনাপত্তি সংগ্রহ করে আগরতলার সহকারী হাইকমিশন।  

ভারত থেকে ফিরে আসা বাংলাদেশি নাগরিকরা বলেন, দালালরা আমাদের বিভিন্ন লোভ দেখিয়ে ভারতে পাচার করে দিয়েছিল। পরে সেখানে গিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আটক হই। জেল খাটার পর সেখানে একটি স্থানীয় হোম সেন্টারে রাখা হয়েছিল আমাদের। দীর্ঘ দুই বছর ধরে আমরা পরিবার থেকে বঞ্চিত ছিলাম। দুই দেশের সরকারের সহযোগিতায় আবার পরিবারের কাছে ফিরেছি। এতে আমরা আনন্দিত।         আমাদের দাবি যে-সব দালালরা এই ধরনের প্রতারণা করেছে তাদের বিরুদ্ধে সরকার যেন দ্রুত ব্যবস্থা নেয়।

এ বিষয়ে ত্রিপুরাস্থ বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনার আরিফ মোহাম্মদ বলেন, কাজের সন্ধানে ১২ জন বাংলাদেশি অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করেছিল। পরে তারা ভারতের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আটক হয়। তাদের জেলহাজতে পাঠানোর পর কারাভোগ শেষে সেখানে একটি হোম সেন্টারে রাখার পর দুদেশের আইনি প্রক্রিয়া শেষে আজ তাদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

ভারত ফেরত বাংলাদেশিদের হস্তান্তরের সময় ত্রিপুরাস্থ বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের কর্মকর্তা আরিফ মোহাম্মদ, আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাবেয়া আক্তার, বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাক মাইগ্রেশন কর্মকর্তারা এবং পাচার হওয়াদের স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন।  

বাংলাদেশ সময়: ১৬০৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৬, ২০২৪
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।