ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

স্কুলের গণ্ডি না পেরোলেও ‘পিএইচডিধারী’ পরিচয়ে টার্গেট করতেন তরুণীদের

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৮, ২০২৪
স্কুলের গণ্ডি না পেরোলেও ‘পিএইচডিধারী’ পরিচয়ে টার্গেট করতেন তরুণীদের

ঢাকা: পড়াশোনা না করলেও এহসান আহমেদ (৩০) নিজেকে পরিচয় দিতেন পিএইচডিধারী। কানাডায় স্থায়ী বসবাসের গ্রিনকার্ড আছে এমন কথা বলে বিদেশ যেতে ইচ্ছুক তরুণীদের টার্গেট করতেন তিনি।

এছাড়া নিজেকে দেশের একটি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের মালিকের সন্তান বলে শতাধিক নারীর সঙ্গে প্রতারণা করেছেন নেত্রকোণা পূর্বধলা উপজেলার নারান্দিয়ার বাসিন্দা এহসান।

সম্প্রতি ভিকারুননিসা নূন স্কুলের এক সাবেক শিক্ষার্থী ও বর্তমানে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি সাহিত্যের শিক্ষার্থীকে টার্গেট করেন এহসান। কানাডায় স্ত্রী হিসেবে নিয়ে যাওয়ার প্রলোভনে গড়ে তোলেন প্রেমের সম্পর্ক। পরে নানা কৌশলে তাদের থেকে হাতিয়ে নেন ব্যক্তিগত ছবি ও ভিডিও।

এরপর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও পরিচিতদের কাছে সেসব ছবি ও ভিডিও প্রকাশ করে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণার করে আসছিলেন তিনি।

পরে রাজধানীর মুগদা থানায় এক ভুক্তভোগীর দায়ের করা মামলার পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার (০৭ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর রমনা এলাকা থেকে এহসানকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (উত্তর) ওয়েব বেজড ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিম।

ডিবি জানায়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অভিজাত ও ধনাঢ্য পরিবারের তরুণীদের টার্গেট করতেন এহসান। বিশেষ করে যারা বিদেশে উচ্চশিক্ষায় যেতে ইচ্ছুক এমন তরুণীদের সঙ্গে পরিচিত হতেন তিনি। এরপর সরাসরি দেখা করতেন। সেখানে তার পরিচয় ও বেশভূষা বিশ্বাসযোগ্য করাতে ভাড়া করে নিয়ে যেতেন নামিদামি গাড়ি।

বৃহস্পতিবার (০৮ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর মিন্টু রোডে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব তথ্য জানান ডিবি প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

তিনি বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিকারুননিসা নূন স্কুলের সাবেক এক ছাত্রীর সঙ্গে পরিচয় হয় প্রতারক এহসানের। তিনি নিজেকে কানাডা প্রবাসী, পিএইচডি ডিগ্রিধারী ও বড় শিল্পপতি পরিবারের সন্তান বলে তাদের গুলশানে বাড়ি ও বিলাসবহুল গাড়ি আছে এমন তথ্য দিতেন। এসব পরিচয় ব্যবহার করে তরুণীদের সঙ্গে প্রথমে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলতেন এহসান। পরে তাদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিতেন ব্যক্তিগত ছবি ও ভিডিও। এরপর সেসব ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও স্বজনদের কাছে প্রকাশ করে দেওয়ার হুমকি দিয়ে তাদের থেকে দীর্ঘদিন ধরে টাকা হাতিয়ে নিয়ে আসছিলেন এই প্রতারক।

তিনি আরও বলেন, গ্রেপ্তার এহসান পড়াশোনা না করেও নিজেকে পিএইচডিধারী পরিচয় দিতেন। এমনকি কোনোদিন বিদেশে না গিয়েও তার কানাডার গ্রিনকার্ড আছে বলে প্রচার করতেন। বিভিন্ন তরুণীকে কানাডায় নেওয়ার প্রলোভন দেখাতেন। এভাবে শতাধিক নারীকে ফাঁদে ফেলার প্রমাণ পাওয়া গেছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বন্ধুত্ব গড়ার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকার অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কেউ বড়লোক, ব্যবসায়ী বা সরকারি চাকরিজীবী পরিচয় দিলে যাচাই করা উচিত। এছাড়া অনলাইনে বন্ধুত্বের নামে ব্যক্তিগত ছবি আদান-প্রদানে সতর্ক থাকতে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭১৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৮, ২০২৪
পিএম/এফআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।